‘৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান স্মরণে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের আয়োজন

আগের সংবাদ

মূল্যস্ফীতির চাপে সাধারণ মানুষ : জীবনযাত্রার ব্যয় অস্বাভাবিক বেড়েছে, কর্মসংস্থান ও আয় বাড়ানোর তাগিদ বিশেষজ্ঞদের

পরের সংবাদ

সংসদে সরকার দলীয় এমপিরা : বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার সাধ্য কারো নেই > জিয়া হত্যার বিচার না চাওয়া সন্দেহজনক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাঙালি জাতিসত্তার যেমন মৃত্যু নেই তেমনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার সাধ্য কারো নেই। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা নিরলস পরিশ্রম করে চলছেন, তিনি যতদিন আছেন ততদিন পথ হারাবে না বাংলাদেশ- এমন মন্তব্য করেছেন সরকারদলীয় সংসদ সদস্যরা। এ সময় আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য সুবর্ণা মুস্তাফা বলেন, জিয়াউর রহমান হত্যার পর তার স্ত্রী-পুত্র বা বিএনপি পক্ষ থেকে এ ঘটনার বিচার না চাওয়া সন্দেহজনক।
গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এমন মন্তব্য করেন। এ সময় ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।   
সুবর্ণা মুস্তাফা বলেন, তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে ২১ আগস্ট প্রকাশ্যে রাজপথে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়।  নিহত হন আইভি রহমানসহ ২৪ জন। ওই ঘটনাকে নিন্দা করে এই মহান জাতীয় সংসদে একটি শোক প্রস্তাবও উপস্থাপন করতে দেয়নি বিএনপি-জামায়াত। শেখ হাসিনার সভায় যখন গ্রেনেড হামলা হচ্ছে, যখন রাজপথ হচ্ছে রক্তাক্ত, তখন তারেক রহমান হাওয়া ভবনে ক্রিকেট খেলছে। একেই বলে বাপ কা বেটা। বিএনপি একেক সময় একেক কথা বলে। এখন এরা সংবিধান, বিচার বিভাগ নিয়ে কথা বলে। এরা হয় খুব খারাপ চিত্রনাট্যের সেই চরিত্রে মতো, স্মৃতিভ্রষ্ট হয়ে যায়। পটুয়া কামরুল হাসান বলেছিলেন না ‘বিশ্ব বেহায়া’, এরা সেই বিশ্ব বেহায়ার দল।
তিনি বলেন, বিএনপির কাছে আমার একটা প্রশ্ন আছে যে তাদের নেতা জিয়াউর রহমান মৃত্যুর পর না তার স্ত্রী, না তার পুত্ররা, না তার দলের কেউ একজন মানুষ জিয়াউর রহমানের হত্যা বিচার চায়নি বা খুনিদের শাস্তি চায়নি। ব্যাপারটা আমার কাছে খুবই সন্দেহজনক। বিএনপি ক্ষমতা চায়, অর্থ চায়, অর্থ পাচার করতে চায়।
তিনি বলেন, জাতীয় সংসদে সরকারি দল থাকবে বিরোধী দল থাকবে। কিন্তু মূল কথা হলো- দুটো দলই দেশপ্রেমিক দল হবে। দুটি দলই আমাদের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করবে, আমাদের সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করবে, সংসদে তর্ক হবে পলিসি নিয়ে, ফরেন পলিসি, ইকোনোমিক্স নিয়ে তর্ক হবে, অভ্যন্তরীণ কোনো ইস্যু নিয়ে তর্ক হবে। কিন্তু দিন শেষে দেশ এবং দেশের মানুষের কল্যাণের কথা মাথায় থাকবে। বিএনপি আর জামায়াতের রাজনীতি হত্যা, সন্ত্রাস, ধর্মান্ধতার। এর সঙ্গে গণতন্ত্রের কোনো সম্পর্ক নেই। বিএনপি বিরোধী দল নয়, এরা হচ্ছে দেশদ্রোহী, আজকের এই

বাংলাদেশে দেশদ্রোহী, রাজাকার বা চাটুকারদের কোনো স্থান নেই।
বিদ্যুৎ জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এমপি ওয়াসিকা আয়েশা খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতার আসার আগে ৩০ বছর দেশের ক্ষমতায় ছিলেন দেশের উন্নয়নে তাদের অবদান কী? তারা কি শুধু আগুন সন্ত্রাস, মানুষ খুন, হাওয়া ভবন করে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করার কাজই করে গেছেন? তাহলে তারা এদেশে আছেন কেন? তারা কোন মুখে গণতন্ত্রের কথা বলেন, কোন মুখে প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেন?
ওয়াসিকা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণ করে বলেন, সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে আল্ট্রা লেফট ও আল্ট্রা রাইটদের বাংলাদেশবিরোধী যুদ্ধ মোকাবিলা করতে হয় বঙ্গবন্ধু সরকারকে। এই কঠিন সময়ে তথাকথিক বিপ্লবের নামে পাটের গুদামে আগুন দেয়া হয়, রেল সেতু উড়িয়ে দেয়া হয়, এটা নাকি বিপ্লব? যে অর্থনৈতিক মুক্তির স্বপ্ন নিয়ে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন সেই অর্থনৈতিক মুক্তি তিনি দিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাননি। দুঃখের বিষয় ১৯৭১ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে দেশকে পিছিয়ে দেয়া হয়। তা না হলে হয়তো অনেক আগেই বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর বা মালয়েশিয়ার হয়ে যেত।
তিনি বলেন, শুধু বঙ্গবন্ধু নয়, তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অন্তত ১৯ বার হত্যা চেষ্টা করা হয়। বাঙালি জাতিসত্তার যেমন মৃত্যু নেই তেমনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার সাধ্য কারো নেই।
তিনি বলেন, সমগ্র বিশ্বে কোভিড-১৯ সত্ত্বেও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সফলভাবে এগিয়ে গেছে। যোগাযোগ খাতে প্রভূত উন্নয়ন ঘটেছে। পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, কর্ণফুলী টানেল, বঙ্গবন্ধু রেল সেতু, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটসহ যত বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে তা দেশনেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই হয়েছে।
এমপি জাকিয়া নুর বলেন, বিএনপির জন্ম হয়েছিল ক্যান্টনমেন্টের আতুর ঘরে, রাতের অন্ধকারে। তারা অবৈধভাবে দেশের ক্ষমতায় এসে দেশ শাসনের নামে দেশকে শোষণ করেছে। সেই কারণে আজ জনগণ তাদের সঙ্গে নেই। তাদের নেতা কে? একজন এতিমদের টাকা আত্মসাৎ করে জেলে, আরেকজন বহু মামলার আসামি, এমনকি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আসামি তারেক লণ্ডনে বসে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছে।
সামশুল হক চৌধুরী বলেন, ২০০১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী ক্ষমতায় না আসার কারণ শেখ হাসিনা দেশকে বিক্রি করতে চাননি, তিনি গ্যাস বিক্রি করতে রাজি হননি, এ হারের পিছনে ছিল দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র।
গতকাল বুধবার রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আরো বক্তব্য রাখেন এমপি মো. সাইফুজ্জামান, এ কে এম রহমতুল্লাহ, মমতাজ বেগম, মোস্তাফিজুর রহমান, সাইমুম সরওয়ার কমল, বজলুল হক হারুন, বেগম সাহাদারা মান্নান, খোদেজা নাসরিন আক্তার প্রমুখ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়