হাইকোর্টে বিএনপি নেতা খোকন ও মিলনের জামিন

আগের সংবাদ

ভোটের আগাম প্রচারে আ.লীগ : সভা-সমাবেশে উন্নয়ন তুলে ধরে নৌকায় ভোট চাওয়া হচ্ছে

পরের সংবাদ

দেওয়ানগঞ্জ সরকারি আব্দুল খালেক মেমোরিয়াল কলেজ : পাঠদান নেই, শুধু পরীক্ষা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি : জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ সরকারি আব্দুল খালেক মেমোরিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লাস করেন না। শুধু পরীক্ষায় অংশ নেন। ছাত্রদের দাবি, শিক্ষকরা নিয়মিত ক্লাস নেন না। তাই ক্লাস থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন তারা। ক্লাসের সময় কলেজ এলাকায় তারা প্রাইভেট পড়েন। কলেজে নিয়মের কোনো বালাই নেই। ছাত্রনেতারা বলছেন, শিক্ষকরা ইচ্ছামতো কলেজে আসেন, ইচ্ছামতো চলে যান। অভিভাবকদের নিয়ে মিটিং করার জন্য বারবার বললেও কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ নেন না। গত রবিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কলেজ চত্বরে অবস্থান করে এসব তথ্য জানা গেছে। ওই সময় দুপুর ১২টা ৪০ মিনিট থেকে কলেজ রুটিন অনুযায়ী বিজ্ঞান বিভাগে রসায়ন, মানবিক বিভাগে পৌরনীতি, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগসহ তিনটি ক্লাস হওয়ার কথা। কলেজের কক্ষ খোলা, শিক্ষকদের লেকচার টেবিল, শিক্ষার্থীদের বসার বেঞ্চ ধুলার আবরণ পড়েছে। কোনো শিক্ষার্থী নেই। রসায়ন বিভাগের প্রভাষক ড. আব্দুল মতিন ক্লাসে গেলেও সঙ্গে সঙ্গে আবার চলে যেতে দেখা যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ছাত্রছাত্রীরা ক্লাসে নেই, তাই ফিরে আসলাম।’ এখন কি ক্লাস ছিল বললেন, ‘রসায়ন। ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস করে না এটা খুবই দুঃখজনক, নিজের কাছেও খারাপ লাগে। গত ১ জানুয়ারি থেকে ক্লাস শুরু হয়েছে, অথচ একটি ক্লাসও নিতে পারি নাই।’ তার ক্লাসে ১৪৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
কলেজ লাইব্রেরিয়ান মাহাবুর রহমান জানান, ছাত্রছাত্রীরা অনেকেই চাকরি করেন। কেউ কেউ আবার কলেজ এলাকায় প্রাইভেট পড়েন। এ কারণে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে থাকেন না। বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র হাফিজুর জানান, কলেজে কোনো ক্লাস হয় না। এখনো রুটিন দেয়া হয়নি। শিক্ষকরা ছাত্রদের খোঁজও নেন না। একই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সুজন জানান, কলেজের অনেক ছাত্র বাইরে চাকরি করেন। পরীক্ষার সময় ঠিকই অংশ নেন। সাবেক ছাত্রনেতা জিএস বিকাশ কবির ইমরান বলেন, ‘আমাদের সময় সকাল পৌনে ৯টা থেকে বিকাল পৌনে ৪টা পর্যন্ত নিয়মিত ক্লাস হতো। কলেজটি সরকারি হওয়ার পর শিক্ষকদের আন্তরিকতা কমে গেছে। লেখাপড়ার মানও খারাপ হয়ে গেছে।’ এ সময় কলেজের বাইরে থেকে বিসিএস ক্যাডার অধ্যক্ষ নিয়োগের দাবি জানান তিনি। উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান রুবেল এবং কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মানিক উল্লাহ মানিক জানান, কিছু শিক্ষক সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে এসে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটেই কলেজ থেকে চলে যান। অভিভাবকদের নিয়ে সভা করার জন্য একাধিকবার বলা হলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নেয়নি। এ ব্যাপারে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইন্তাজ আলী বলেন, আগে গদ হাজিরা ছিল, এখন সেটা নেই। ফিঙ্গারের মাধ্যমে হাজিরা গ্রহণ করা হয়, শিক্ষকরা কলেজে উপস্থিত হয়ে ক্লাস নিয়ে চলে যান। এটা অনেকটা অভ্যন্তরীণ নিয়ম। কিন্তু সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত উপস্থিত থাকার নিয়ম রয়েছে। সবার সহযোগিতায় আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে নিয়মিত ক্লাস নেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, ওই কলেজে ২য় ও ৩য় বর্ষ এবং অনার্সসহ ২ হাজার ৬৮২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে, শিক্ষক রয়েছে ৩৬ জন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়