বেগমগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি : জেলার বেগমগঞ্জের ছয়ানী ইউনিয়নে এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। নিহত গৃহবধূর নাম সুরাইয়া আক্তার (১৮)। সে উপজেলার ৫নং ছয়ানী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জাহিদপুর গ্রামের দুলাল হোসেনের মেয়ে। গত শুক্রবার বিকালে উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দোয়ালিয়া ঠাকুর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের চাচা জাকির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘নয় মাস আগে তার ভাতিজি সুরাইয়া আক্তারের সঙ্গে উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দোয়ালিয়া গ্রামের ঠাকুর বাড়ির মো. আবদুল্ল্যার ছেলে মো. ফয়সাল মাহমুদ পাভেলের বিয়ে হয়। বর্তমানে সে ২-৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। বিয়ের পর থেকেই স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন সুরাইয়ার ওপর নানাভাবে নির্যাতন চালাতেন। এ নিয়ে প্রায়ই স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া হত। এই ভয়ে সে বাবার বাড়িতে আসলে স্বামীর বাড়ি যেতে চাইত না। গত ৪ দিন আগে সে বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়িতে যায়। গত ৩ দিন ধরে তার স্বামীর পরিবারে ঝগড়া চলছে। এই ঝগড়ার জের ধরে গত ৩ দিন তাদের ঘরে কোনো খাবার রান্না হয়নি। সে গত ৩ দিন ধরে উপোস ছিল। নানামুখী নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে শুক্রবার দুপুর সে বাবার বাড়ি চলে যেতে চেষ্টা করলে তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। গরিব পরিবারের মেয়ে হওয়ায় সে স্বামীর বাড়ির নির্যাতনের বিষয়ে বাবার বাড়ির লোকজনকে তেমন অভিযোগ করত না। সে মুখ বুঝে সব কিছু সহ্য করে স্বামীর সংসার করছিল।’ তারা অভিযোগ করে আরো বলেন, বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে সুরাইয়ার শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাদের ফোনে জানান সুরাইয়া বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। কিন্ত আমরা তার মুখে কোন বিষের গন্ধ পাইনি। তার মুখে একটি চড়ের দাগ রয়েছে। তারা দুপুর ১২টার দিকে আমাদের মেয়েকে হত্যা করে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচার করেন। এক পর্যায়ে তারা সুরাইয়াকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে আবার তারা সেখান থেকে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসে। নিহতের শ্বশুর মো. আবদুল্ল্যাহ অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, সে অনেক ভালো মেয়ে ছিল। আমার ছেলে তাকে খুব ভালোবাসত। তাকে হত্যার প্রশ্নই উঠে না। বেগমগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শাহেদুল ইসলাম বলেন, আশপাশের লোকজন জানিয়েছে নিহত গৃহবধূর গায়ে একটা খিঁচুনি উঠেছে। পরে নিহতের শ্বশুরের পরিবারে লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরপর মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়া পুনরায় বাড়িতে নিয়ে আসে। মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট সম্পন্ন করা হয়েছে। নিহতের শরীরে দৃশ্যমান কোনো আঘাতের চিহৃ দেখা যায়নি। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। তবে নিহতের স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি বলেন, নিহতের পরিবারের অভিযোগের বিষয়ে শুনেছি।
এ ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।