সমাজকল্যাণমন্ত্রী : ভিক্ষুক নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালাচ্ছে মোবাইল কোর্ট

আগের সংবাদ

বৈশ্বিক সংকটে চাপা প্রত্যাবাসন : রোহিঙ্গা শরণার্থী

পরের সংবাদ

সৈয়দপুর পৌরসভার পরিত্যক্ত ভবন : ছাদবাগানে ফুটছে ২১ প্রজাতির ফুল

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জিকরুল হক, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে : প্রবাদ রয়েছে যে ফুলকে ভালোবাসে, সে মানুষকেও ভালোবাসে। আর যে ফুল ভালোবাসে না, সে মানুষও খুন করতে পারে। তাই ভালোবাসা থেকেই সৈয়দপুরে টব ছাড়াই ফুলের বাগান গড়ে তোলা হয়েছে। এটি করা হয়েছে সৈয়দপুর পৌরসভার পরিত্যক্ত ভবনের ছাদে। ফুল চাষে ব্যবহার করা হয়নি কোনো পোড়ামাটি বা সিমেন্ট, বালুর তৈরি ওজনদার টব। এই ফুলবাগানে ফুলগাছের সঙ্গে পুষ্টিকর ফলের গাছও লাগানো হয়েছে। সব মিলে ২১ প্রজাতির তিন শতাধিক ফুলগাছ রয়েছে ওই ছাদবাগানে।
এসব ফুলগাছের নাম হলো ডান্টাস, ফেলিস, স্টার, ব্যারেনডুনা, ইন্টার হেনা, সিলভিয়া, হাইব্রিড গ্যাদা, চন্দ্রমল্লিকা, স্যালোসিয়া, চাইনিজ গ্যাদা, পুত্তলিকা, গোলাপ, ডালিয়া, পাতাবাহার, বোটাম, কসমল, নীলকণ্ঠ ও বিস্কুট ফুল। বিশেষ করে বিভিন্ন রংয়ের ডান্টাস, বোটাম ও বিস্কুট ফুল বাড়তি সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে বাগানটির।
ফুলগাছ ছাড়াও বেদানা, পেয়ারা, কাগজি লেবু, মাল্টা ও ড্রাগন ফলের গাছ রয়েছে এই ফুলবাগানে। সন্তানের ¯েœহ দিয়ে বাগানটির পরিচর্যা করেন প্রতিদিন মালি আসাদুল ইসলাম। প্রায় ৪৩ বছর ধরে তিনি সৈয়দপুর পৌরসভায় অস্থায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন। চাকরি স্থায়ীকরণের দুঃখ ভুলে থাকেন শুধু ¯েœহতুল্য ফুলবাগানের ফুল গাছগুলো দেখে।
কথা হয় এই ছাদবাগানের মালি আসাদুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, পরিত্যক্ত ভবনের ছাদে পোড়ামাটি বা সিমেন্ট, বালুর তৈরি টব আকারে যেমন বড় হয়, তেমনি অনেক ওজনের হয়। এতে ফুলগাছ লাগালে দিতে হবে মাটি। ফলে টবের ওজন অনেকগুণ বেড়ে যায়। চরম ঝুঁকিতে থাকবে ভবনের ছাদ। তাই তিনি পরিবেশবান্ধব পরিত্যক্ত পিপি পলিব্যাগ ব্যবহার করেছেন টবের বিকল্প হিসেবে। তার মতে এসব ব্যাগের যেমন ওজন অল্প তেমনি পানিধারণ ক্ষমতাও বেশ। এর ফলে ফুলগাছ যেমন বেড়ে ওঠে, তেমনি পুষ্টও হয়।
ফুলগাছের খাদ্য হিসেবে তিনি ব্যবহার করেন ইউরিয়া, ফসফেট, পটাশ, হাড়ের গুঁড়া, ড্যাব, খৈল, চাপাতা, গোবর সার, কাঠের গুঁড়া।
গাছকে পোকামাকড়মুক্ত রাখতে কীটনাশক ব্যবহার করেন। আর ফুলগাছকে পূর্ণভাবে পুষ্ট রাখতে দেন তিনি ভিটামিন। মালি আসাদুল আরো জানান, শুধু ফুলের চারা ক্রয় করতে তার ব্যয় হয়েছে আট হাজার টাকার কিছু বেশি। সারের জন্য প্রায় সমপরিমাণ ব্যয় হয়। গাছ সতেজ ও জীবিত রাখতে তিনি দুবেলা পানি দেন ফুলগাছের টবে। অবশ্য তাকে আর্থিকভাবে বেশ সহযোগিতা করেন ফুলগাছপ্রেমী পৌর কর্মচারী আনছার আলী।
এদিকে ফুলগাছের সঙ্গে থাকতে থাকতে মালি আসাদুল ইসলাম ফুলগাছের সঙ্গে নাম মিলিয়ে দেশের ৬৪টি জেলার নাম এক নিশ্বাসে বলতে পারেন। এটি তার বাড়তি যোগ্যতা বলে শহরের বিশিষ্টজনরা জানান।
কথা হয় পৌরসভায় নাগরিক সুবিধা নিতে আসা ফরিদুল, হাসান, চান মিয়া, আব্বাস, আখেরুজ্জামান, শাহিনা পারভীন, নাহিদা বেগম, ফরিদা ইসলামের সঙ্গে।
তারা জানান, পৌরসভার প্রধান ফটকে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে ফুলের মিষ্টি সুগন্ধ তাদের বিমোহিত করে। এজন্য ফুলবাগানের মালি ও পৌর কর্তৃপক্ষকে তারা ধন্যবাদ জানান।
জানতে চাইলে সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র রাফিকা আকতার জাহান মুঠোফোনে বলেন, ফুল সৌন্দর্যের প্রতীক। ফুল শুধু সুবাস ছড়ায় না, মানুষের হৃদয়কে সতেজ ও জাগরিত করে তোলে। তাই পরিত্যক্ত ভবনের ছাদে ফুলবাগান করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়