আইনমন্ত্রী : মানবাধিকারের উন্নতি হওয়ায় র‌্যাব নতুন নিষেধাজ্ঞায় পড়েনি

আগের সংবাদ

পাহাড়ে সন্ত্রাসী-জঙ্গি একাকার : স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর যোগসাজস, দুর্গম হওয়ায় অভিযান চালানো কঠিন

পরের সংবাদ

শিবগঞ্জের সেই সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে অভিযোগ : টাকা ছাড়া হয় না দলিল

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আতিক ইসলাম সিকো, শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) থেকে : শিবগঞ্জ উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলী টাকা ছাড়া কোনো দলিলেই স্বাক্ষর করেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেবাপ্রার্থীদের হয়রানিকে কেন্দ্র করে গত ১০ জানুয়ারি নিজ কার্যালয়ে হামলার শিকার হন সাব রেজিস্ট্রার। বর্তমানে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার অভিযোগ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হায়াতের নির্দেশে দুর্বৃত্তরা তার ওপর হামলা করেছে। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, সাবরেজিস্ট্রার একজন অসৎ লোক। তার হয়রানির শিকার কোনো পক্ষ এ হামলা চালাতে পারে। হামলার সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত নন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাব-রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলীর প্রতি ক্ষোভের শেষ নেই শিবগঞ্জের মানুষের। ক্ষোভ আছে দলিল লেখকদেরও। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সাব-রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলী, অফিস সহকারী মামুন অর রশিদ ও মোহরার সেলিম রেজার অপসারণ চেয়ে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছিলেন দলিল লেখকরা। প্রায় তিন মাস তারা কোনো কাজই করেননি। এতে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাকিব আল রাব্বি বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। এরপরও বন্ধ হয়নি সাব-রেজিস্ট্রারের ঘুষ বাণিজ্য। গত ৮ ডিসেম্বর উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে সেবাগ্রহীতাদের হয়রানি, অনিয়ম ও সেবা প্রদানে সরকার নির্ধারিত ফি অপেক্ষা অধিক অর্থ দাবি করার বিষয়টি উত্থাপন করে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার প্রতিশ্রæতির প্রেক্ষিতে তাকে ক্ষমার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবুও সতর্ক হয়নি ইউসুফ আলী।
অভিযোগ রয়েছে, নিজ দপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত এক কর্মচারীর পেনশনের ফাইলপত্র ১৫ মাস ধরে আটকে রেখেছিলেন ইউসুফ আলী। মৃত এই কর্মচারীর নাম আবু তালেব। তার প্রতিবন্ধী মেয়ে রুবাইয়া ফারাইয়া ইয়াসমিন (১৮) যেন পেনশনের টাকাটা পান, সে জন্য দিনের পর দিন ঘুরছিলেন খালা সলেনূর বেগম। তিনি বলেন, গত ১৫ মাসে আমি ৩০ থেকে ৪০ বার গিয়েছি। তবুও কাজ হয়নি। ইউএনও সুপারিশ করার কারণে তিনি আমাদের কাজ করেননি। এদিনই বিকালে ভুক্তভোগীরা সাব-রেজিস্ট্রারের দপ্তরে গিয়ে তাকে মারধর করে আহত করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল হায়াত বলেন, এর সঙ্গে তিনি জড়িত নন। তাকে অন্যায়ভাবে জড়ানো হচ্ছে।
সাব-রেজিস্ট্রারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা যায়নি। তবে তার স্ত্রী অরিনা বরকত খোদা বলেন, হামলায় আহত হয়ে তার স্বামী অস্বাভাবিক আচরণ করছেন। তিনি কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে নেই। ঘুসের অভিযোগের বিষয়ে অরিনা বলেন, আমার স্বামী সৎ কর্মকর্তা। এখন ঘটনা ভিন্ন খাতে নিতে এসব বলা হচ্ছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রার আফসানা খাতুন বলেন, ইউসুফ আলীর বিরুদ্ধে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। জেলা সাবরেজিস্ট্রার দাবি করেন, পেনশনের ফাইলকে কেন্দ্র করেই ইউসুফ আলীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত করতে তিন সদস্যের কমিটি করে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়