দুদক মামলা : আদালতে হাজিরা দিলেন আব্বাস দম্পতি

আগের সংবাদ

শিল্প খাতে বাড়ল গ্যাসের দাম > সবচেয়ে বেশি বাড়ছে ক্ষুদ্রশিল্পে, মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ বাড়বে : বিশেষজ্ঞদের অভিমত

পরের সংবাদ

মাই সেন্টমার্টিন প্রকল্প : এখন বিচে যত্রতত্র দেখা যায় না ময়লা-আবর্জনা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জাবেদ ইকবাল চৌধুরী, কক্সবাজার (দক্ষিণ) থেকে : অসঙ্গতি বা অভ্যাস পরিবর্তনে একটি কার্যকরি উদ্যোগই যে যথেষ্ট তা দেখিয়ে দিল ‘মাই সেন্টমার্টিন’ প্রকল্প। এক সময় দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন ছিল প্রাকৃতিক পরিবেশ, প্রতিবেশ, জীববৈচিত্র্যময়। পরবর্তী সময়ে অতিরিক্ত পর্যটকের পদভার, অব্যবস্থাপনা এবং সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতায় দ্বীপের পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দেয়। দ্বীপের সৈকত, বিচের পাড়, প্রধান সড়ক, বাজারসহ যত্রতত্র বর্জ্য, ময়লা-আবর্জনায় পরিপূর্ণ। একটি অস্বস্তিকর ও পরিবেশ বিপর্যস্ত একটি দ্বীপে পরিণত হয় এটি। এই পরিস্থিতি সম্পূর্ণরূপে বদলে দিয়েছে ‘মাই সেন্টমার্টিন’ নামের একটি প্রকল্প। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমানকে প্রধান করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট সেন্টমার্টিন ইউএনডিপি নির্বাহী কমিটি কয়েক মাস আগে শুরু করে দ্বীপ সুরক্ষা কার্যক্রম। এতে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও ইউএনডিপি। প্রকল্পের কোঅর্ডিনেটর কামাল উদ্দিন বলেন, গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে সেন্টমার্টিনে ১৬ জন কর্মী ও ১১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি দিনরাত দ্বীপের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করছেন। এর মধ্যে একজন কোঅর্ডিনেটর, একজন সুপারভাইজার, দুই জন নারী ও ১২ জন পুরুষ কর্মী দ্বীপের বর্জ্য অপসারণ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, দ্বীপের চারপাশে কেয়া বৃক্ষরোপণ, মেয়েদের সচেতন করা ও ১৬ থেকে ৪৫ বছরের নারীদের হাতে কলমে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়ার কাজ করছে।
এ প্রসঙ্গে ইউএনডিপি এক্সিলারেটর ল্যাব (পরীক্ষা-নিরীক্ষা) প্রধান ড. রমিজ উদ্দিন বলেন, গত সেপ্টেম্বর -অক্টোবর মাসে সেন্টমার্টিন দ্বীপ ঘুরে বিচসহ বিভিন্ন স্থান ময়লা-আবর্জনায় পরিপূর্ণ ছিল। তা কিন্তু ডিসেম্বর মাসে এসে তার উল্টো দেখা গেছে। বিচে বা বাজারে যত্রতত্র বর্জ্য বা অন্যান্য ময়লা-আবর্জনা চোখে পড়েনি। তিনি আরো জানান, একটি আন্তরিক উদ্যোগ যে কতটা পরিবর্তন করতে বা অভ্যাস বদলিয়ে দিতে পারে তা সরজমিন না গেলে বুঝতে পারবে না কেউ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যেখানে সেখানে প্লাস্টিক জাতীয় ময়লা না ফেলার জন্য শতাধিক ‘বিন’ স্থাপন করা হয়েছে সেন্টমার্টিন দ্বীপের বিভিন্ন স্থানে। স্থানীয়রা ও পর্যটকরা যাতে নির্দিষ্ট ‘বিনে’ ময়লা-আবর্জনাগুলো ফেলে সে জন্য সচেতন করতে বর্তমানে দুটি এলইডি টিভি স্থাপন করা হয়েছে। আরো দুটি এলইডি টিভি স্থাপন করা হবে। নিয়োজিত কর্মীরা প্রতিনিয়ত বর্জ্য কালেক্ট করে এবং বিচ ও রাস্তাঘাট ক্লিন করে যাচ্ছেন। বর্তমানে সংগ্রহ করা প্লাস্টিক বর্জ্যগুলো অস্থায়ী ডাম্পিংয়ে সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। যার কারণে সেন্টমার্টিন দ্বীপ এখন দারুণভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন রাখতে পেরেছি বলে দাবি করেন প্রকল্প সুপারভাইজার মো. জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, নির্বাহী কমিটির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমানের সঠিক নেতৃত্বে দ্বীপের পরিবেশ সুরক্ষায় ব্যাপক পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব হয়েছে। সময়ে সময়ে চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান নিজেই দ্বীপে পরিষ্কার-পরিচ্ছনতায় অংশ নেন। যে কারণে অন্যান্য সদস্য, ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা দ্বীপ সুরক্ষায় আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
‘মাই সেন্টমার্টিন’ প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান ও ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, জনগণের দেয়া অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আগে দ্বীপের পরিবেশ সুরক্ষাকে প্রধান কাজ হিসেবে মনে করেছি। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ইউএনডিপির আর্থিক সহায়তায় একটি উদ্যোগই দ্বীপের বিচ ও বাজার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে গেছে। এখন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটি স্থায়ী ডাম্পিং স্টেশন স্থাপন করা গেলেই পরিপূর্ণতা লাভ করবে ‘মাই সেন্টমার্টিন।”

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়