দুদক মামলা : আদালতে হাজিরা দিলেন আব্বাস দম্পতি

আগের সংবাদ

শিল্প খাতে বাড়ল গ্যাসের দাম > সবচেয়ে বেশি বাড়ছে ক্ষুদ্রশিল্পে, মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ বাড়বে : বিশেষজ্ঞদের অভিমত

পরের সংবাদ

ফুলগাজী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স : নাজুক স্যানিটেশন ও খাওয়ার পানির সংকটে রোগী ভোগান্তি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

তনু সরকার, ফুলগাজী (ফেনী) থেকে : ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যানিটেশন ব্যবস্থা একেবারেই নাজুক। হাসপাতালটি নির্মিত হওয়ার পর থেকে স্যানিটেশন ব্যবস্থার কোনো সংস্কার করা হয় নাই। স্যানিটেশন ব্যবস্থা নাজুক হওয়ার কারণে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে টয়লেট ব্যবহার করছে রোগী ও রোগীর স্বজন এবং হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এছাড়াও খাবার পানির সংকট বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত শনিবার ও রবিবার হাসপাতালে গেলে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে একটি বড় অংশ হচ্ছে প্যাথলজি কক্ষ। প্যাথলজি কক্ষে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন যন্ত্রপাতি।
সেসব যন্ত্রপাতি হাসপাতালের ময়লা, আয়রন এবং গন্ধযুক্ত পানিতে ধৌত করতে হয়। হাসপাতালের ২য় তলার পুরুষ ওয়ার্ড, শিশু ও মহিলা ওয়ার্ডে থাকা টয়লেটগুলো নোংরা স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে আছে। পানির ট্যাপগুলো ভালো না থাকায় অবিরত পানি ঝরতে থাকে। টয়লেটগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটির দরজা ভাঙা, ছিটকানি নেই। হাসপাতাল ভবনের বাইরের অংশে বসানো পানির পাইপ ভেঙে দেয়াল বেয়ে পানি ঝরতে থাকে। এভাবে দীর্ঘদিন পানি পড়ার কারণে দেয়ালের গায়ে আয়রনের হলুদ দাগ পড়েছে। পাইপগুলো ময়লা পড়ে মরিচা ধরে গেছে। অপরদিকে, হাসপাতালের ১ম তলায় টয়লেট একেবারে ব্যবহার অনুপযোগী। নেই দরজা, নেই বদনা, পানি ব্যবহারে নেই কোনো সুবিধা। রোগীদের জন্য খাবার তৈরিতেও এই প্রচণ্ড আয়রনযুক্ত পানি ব্যবহার করা হচ্ছে। হাসপাতালের গ্রাউন্ডে থাকা আবাসিক ভবনের চিত্রও একই। প্রতিটি আবাসিক ভবনের সামনে থাকা টিউবওয়েল নষ্ট হয়ে আছে। সাপ্লাইয়ের পানি আয়রনযুক্ত হলেও এই পানিই আবাসিক ভবনের লোকজনের শেষ ভরসা। রোগী এবং রোগীর লোকজন পানির বোতল কিংবা বড় কোনো পাত্র নিয়ে টিউবওয়েল থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করতে হয় বা দোকান থেকে কিনে আনতে হয়। এসব বিষয়ে রোগীদের কাছ থেকে নানা অভিযোগ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের দায়িত্বরত কয়েকজন সিনিয়র নার্স বলেন, ‘এই হাসপাতালে যোগদান করার পর থেকেই পানি ব্যবহারে নানা সমস্যা দেখছি। ট্যাপের পানি সবসময় ময়লা থাকে, আয়রন ও গন্ধযুক্ত। হাসপাতালের ভেতরে প্রতিটা কোয়ার্টারের সামনে টিউবওয়েল থাকলেও কয়েক বছর যাবৎ তা অকেজো হয়ে পড়ে আছে।
চিকিৎসা নিতে আসা রোগী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘আমি গত শুক্রবার রাতে ভর্তি হই। আমার বেডটি টয়লেটের পাশে হওয়াতে গন্ধের জন্য থাকতে কষ্ট হচ্ছে। পানিতে আয়রন থাকায় হাত-মুখ ধৌত করতে বাইরে যেতে হয়।’
ওই হাসপাতালে রান্নার কাজ করেন আবদুল হাই। তিনি জানান, তিনি প্রতিদিন এই পানি দিয়ে রোগীদের জন্য ভাত রান্না করেন। পানিতে আয়রন থাকায় রান্নার পাত্রগুলো সব হলুদ হয়ে গেছে।
ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রুবাইয়াত বিন করিম ভোরের কাগজকে বলেন, ‘আমি ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদানের আগে থেকেই স্যানিটেশন ব্যবস্থা অস্বাস্থ্যকর। পানিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে।
যা আমরা আবাসিক ভবনগুলোতে ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছি। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও হেলথ ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টকে কয়েকবার চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। তারা আশ্বাস দিলেও এখনো পর্যন্ত আমরা নতুন টিউবওয়েলের জন্য কোনো বরাদ্দ পাই নাই। ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিরসনের জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়