নিউমার্কেটে সংঘর্ষ : তিন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পেছাল

আগের সংবাদ

নামমাত্র প্রস্তুতিতে পাঠদান : বই পায়নি অনেক শিক্ষার্থী > বই, সহায়িকা ছাড়াই শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ > নোট-গাইড ছাপার তোড়জোড়

পরের সংবাদ

চবি শিক্ষক সমিতির পাল্টাপাল্টি সমাবেশ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : নানামুখী দ্ব›েদ্ব জড়িয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ঠিক রাখা, শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া আদায়সহ নানা কর্মকাণ্ড ভুলে গেছেন। তারা এখন নিজেরাই নিজেদের প্রতিপক্ষ হয়ে প্রকাশ্যে সমাবেশ করছেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ভাবমূর্তি যেমন ক্ষুণ্ন হচ্ছে তেমনি শিক্ষার পরিবেশও মারাত্মকভাবে বিঘিœত হচ্ছে। কিন্তু শিক্ষকরা সে চিন্তা না করে এক পক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার, বিবৃতি দিচ্ছেন অহরহ। সর্বশেষ গতকাল সোমবার সহসভাপতি গ্রুপ এবং সাধারণ সম্পাদক গ্রুপ পৃথক সমাবেশ করে সেই বিভক্তি ও রেষারেষিকে আরো বাড়িয়ে তুললেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে মানববন্ধন করেছে শিক্ষক সমিতির সহসভাপতি (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি) অধ্যাপক আবদুল হক। অপরদিকে সভাপতির এই কর্মসূচিকে অবৈধ উল্লেখ করে পাল্টা মানববন্ধন করেছেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. সজীব কুমার ঘোষ। সোমবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ‘শিক্ষক সমিতি কার্যনির্বাহী পরিষদ’র ব্যানারে এ মানববন্ধন করেন শিক্ষক সমিতির সহসভাপতি গ্রুপ। অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে সাধারণ শিক্ষকদের ব্যানারে পাল্টা মানববন্ধন করেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক গ্রুপ। সহসভাপতি সমর্থিত মানববন্ধনে শিক্ষক নেতাকর্মী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন, সিন্ডিকেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে গড়িমসি এবং শিক্ষক নিয়োগ প্রসঙ্গে দুর্নীতি ও চারুকলা ইনস্টিটিউটে সৃষ্ট অচলাবস্থা নিরসনের ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণে ব্যর্থতাসহ নানা অভিযোগ জানানো হয়। এ সময় শিক্ষক সমিতির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, সদস্য ড. ফণী ভূসন বিশ্বাস, শোয়াইব উদ্দিন হায়দার, সৈয়দা করিমুন্নেছা ও হোসাইন মুহাম্মদ ইউনুস সিরাজীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মুহাম্মদ তৌহিদ হোসেন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. হেলাল উদ্দিন নিজামী, ইঞ্জিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. রাশেদ মোস্তফা ও হলুদ দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সেকান্দার চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এ সময় শিক্ষক নেতাকর্মীরা বলেন, বিভিন্ন অনিয়ম-সমস্যা নিয়ে বারবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানানোর পরেও প্রশাসন এ নিয়ে সুষ্ঠু পদক্ষেপ নেয়নি। এ কারণেই আমাদের বাধ্য হয়ে মানববন্ধনে আসতে হয়েছে। উল্লিখিত বিষয়ে আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে যদি সন্তোষজনক সমাধান না আসে তাহলে আমরা পরবর্তী সময়ে আরো বৃহৎ কর্মসূচি ঘোষণা করব। অপরদিকে এই মানববন্ধনের প্রতিবাদ জানিয়ে একই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে সাধারণ শিক্ষকদের ব্যানারে পাল্টা মানববন্ধন করেছে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. সজীব কুমার ঘোষ সমর্থিত গ্রুপ। এতে শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক এস এম জিয়াউল ইসলাম, সদস্য অধ্যাপক ড. নাজনীন নাহার ইসলাম ও ড. শারমিন মুস্তারি উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া মানববন্ধনে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মাহবুবুল আলম, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুক, প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া, সহকারী প্রক্টরসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সমাবেশ থেকে চবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. সজীব কুমার ঘোষ বলেন, আমরা আলোচনাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিই। তারপরে আন্দোলনে যাই। আমি প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষকদের দাবি-দাওয়াগুলো আদায়ের চেষ্টা করেছি। দাবি নিয়ে শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী সভায় আলোচনা করে প্রশাসনের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমাদের সহসভাপতি যিনি বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তার নেতৃত্বে কয়েকজন সদস্য কোনোভাবেই দাবিগুলো নিয়ে প্রশাসনের কাছে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেননি। আমি সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বারবার বলেছি যে, সাধারণ সভার যে দাবি তা প্রশাসনকে জানাতে হবে। এরপরেও যদি প্রশাসন ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আমরা আন্দোলনে যাব। কিন্তু আমি জানি না কোন উদ্দেশ্যে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বারবার আলোচনাকে এড়িয়ে গেছেন। এমনকি উপাচার্যও তাকে আলোচনার জন্য ডেকেছেন- তিনি তাও প্রত্যাখ্যান করেছেন।
তিনি আরো বলেন, তিনি (অধ্যাপক আবদুল হক) মূলত সহসভাপতি। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হয়ে তিনি বারবার নিজের সিদ্ধান্তে শিক্ষক সমিতির সভা ডেকেছেন। তিনি আমাদের অনুরোধকে অগ্রাহ্য করে নিজ সিদ্ধান্ত নিয়ে তা আবার সংবাদ রিলিজে দিয়ে দিয়েছেন। তার এই কর্মকাণ্ডগুলো শিক্ষক সমিতির দীর্ঘ ঐতিহ্যকে ভূলুণ্ঠিত করেছে। আমি এই মানববন্ধনে আসতে চাইনি। কিন্তু সাধারণ সম্পাদক হিসেবে শিক্ষকদের প্রতি দায়বদ্ধতার কারণেই আমাকে আজকে এখানে আসতে হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়