পদ্মা সেতু : মোটরসাইকেল চলাচল চেয়ে হাইকোর্টে রিট

আগের সংবাদ

আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ : বিশ্বকাপে অপ্রতিরোধ্য টাইগ্রেসরা

পরের সংবাদ

মহাসড়কে দুর্ঘটনা কমবে : গাড়িচালকদের বিশ্রামাগার দ্রুত চালু হোক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মহাসড়কে দুর্ঘটনা কমাতে দেশের চারটি জাতীয় মহাসড়কের পাশে পণ্যবাহী গাড়িচালকদের জন্য পার্কিং সুবিধাসহ বিশ্রামাগার স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় সরকার। ইতোমধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার নিমসারে ও বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমে মহাসড়কে সিরাজগঞ্জের পাঁচলিয়ায় গড়ে তোলা হচ্ছে দুটি অত্যাধুনিক বিশ্রামাগার। দূরপাল্লার গাড়িচালকরা সড়কে একটানা দীর্ঘ সময় গাড়ি চালানোর ফলে একঘেয়েমিসহ ঘুম-ঘুমভাব তৈরি হয়। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে। সড়কে দুর্ঘটনা রোধে সরকারের এমন উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। বিশ্রামাগার তৈরির কাজ প্রায় শেষের দিকে। আমরা আশা করি, এসব বিশ্রামাগার চালু হলে দেশের সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে যাবে। নিরাপদ সড়কের দাবিতে সামাজিক আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া সংগঠন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’র (নিসচা) তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিককালে প্রতি বছরই গড়ে ২ হাজারের ওপরে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে। এসব দুর্ঘটনায় বছরে গড়ে ৫ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হচ্ছেন। সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (এআরআই) গবেষণায় দেখা গেছে, ৫৩ শতাংশ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী যানবাহনের বেপরোয়া গতি। কিন্তু গতি নিয়ন্ত্রণ, মহাসড়কে ছোট যানবাহন বন্ধ ও বেপরোয়া যানবাহন চলাচল বন্ধে সাফল্য নেই। এখনো দেশের সড়ক-মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ১০ লাখ নছিমন-করিমন-ইজিবাইক। অবাধে আমদানি হচ্ছে অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক। দেশব্যাপী অন্তত ৫ লাখ ফিটনেসবিহীন বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, হিউম্যান হলার অবাধে চলছে। নিবন্ধনবিহীন কয়েক লাখ অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল চলাচল করছে সড়ক-মহাসড়কে। এসব যানবাহন সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান উৎস। দুর্ঘটনায় দায়ীদের শাস্তির নজিরও তেমন নেই। যার ফলে চালকরা ইচ্ছামতো গাড়ি চালান। এছাড়া চালকদের প্রশিক্ষণের অভাব রয়েছে, যা সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। ফুটপাত দিয়ে মানুষ চলাচলের অবস্থা নেই। কাজেই মানুষ বাধ্য হয়ে মূল রাস্তায় হাঁটছে এবং দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। ইদানীং মোবাইল ফোন কানে রেখে গাড়ি চালানো দুর্ঘটনার আরেকটি কারণ। দুর্ঘটনার জন্য যাই দায়ী হোক না কেন, দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করতে হবে। উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে জাতিসংঘ ২০১১ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সময়কে ‘সড়ক নিরাপত্তা দশক’ হিসেবে ঘোষণা করে। এ সময়ের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা ও প্রাণহানি অর্ধেকে নামিয়ে আনার বিষয়ে সদস্য দেশগুলো একমতও হয়। ইতোমধ্যে বহু দেশে সড়ক নিরাপত্তায় দৃশ্যমান অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তৎপরতা দৃশ্যমান নয়। ২০১৭ সালের ২২ অক্টোবর দেশে প্রথমবারের মতো ‘সাবধানে চালাবো গাড়ি, নিরাপদে ফিরবো বাড়ি’ প্রতিপাদ্যে ‘জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস’ উদযাপন করা হয়। এ দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেছিলেন, দেশ ২০২০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতের সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনতে অঙ্গীকারবদ্ধ। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হলো, সড়কে দুর্ঘটনা কমেনি। আমরা সড়ক নিরাপত্তায় সরকারের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার বাস্তবায়ন দেখতে চাই। সড়কে মৃত্যুর মিছিল আর যেন দীর্ঘ না হয়। সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় সব রকম ব্যবস্থা নিতে হবে। দায়ীদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করার পাশাপাশি নিরাপদ চলাচলের বিষয়টি পরিবহন সংশ্লিষ্ট সবার উপলব্ধিতে আনতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়