পদ্মা সেতু : মোটরসাইকেল চলাচল চেয়ে হাইকোর্টে রিট

আগের সংবাদ

আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ : বিশ্বকাপে অপ্রতিরোধ্য টাইগ্রেসরা

পরের সংবাদ

বেগমগঞ্জে মেয়র আইভী : ষড়যন্ত্র রুখে দেয়ার বড় হাতিয়ার সংস্কৃতি অঙ্গন

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মোহাম্মদ সোহেল, নোয়াখালী থেকে : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী বলেছেন, আমার বাবা ১৯৭৯ সালে জাতীয় নির্বাচন করেছিল। কিন্তু ব্যালট বাক্স দিনের বেলায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল থানাগুলোতে। এখন অনেকে বলে রাতের ভোট। কিসের রাতের ভোট। দিনের বেলাইতো আপনারা ছিনতাই করেছিলেন ভোট। দিনের বেলাইতো ভোট নিয়ে আপনারা থানা থেকে ঘোষণা দিয়েছেন। কে আপনাদের নির্বাচিত হবে, ধানের শীষে ঘোষণা দিয়েছিলেন। এখন আবার এ সমস্ত কথা কেন বলেন? গত শনিবার রাতে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলা পাবলিক হল চত্বরে লোক সাংস্কৃতিক উৎসব উদযাপন ২০২৩ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মেয়র আইভি বলেন, আওয়ামী লীগ এখন অনেক জনপ্রিয়। হাজারো কাজ করেছে। যদি এত কাজ দেখে মা-বোনেরা ভোট না দেন কি জবাব দিবেন জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে, কি জবাব দেবেন আল্লার কাছে। দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা যারা দল করি আমরা সবাই শেখ হাসিনার উন্নয়নের কথা জানি। কিন্ত আমরা অনেক সময় বলিনা। এই বলার কাজটা আপনাদের দায়িত্ব নিতে হবে। এত কিছু করার পরও আমাদের বিরুদ্ধে দেশ-বিদেশে যে ষড়যন্ত্র চলছে, সে ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে আপনাকে-আমাকে সবাইকে। এই ষড়যন্ত্র রুখে দেয়ার বড় একটি হাতিয়ার হলো সাংস্কৃতিক অঙ্গন। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে গানটি গাইলে শরীর এখনো শিউরে ওঠে। সাংস্কৃতিক রেভ্যুলেশন আমাদের অনেকটা কমে গেছে। সংস্কৃতির বিকল্প আমাদের নেই।
আইভী বলেন. এই গ্রাম বাংলায় একতারা বাজাইওনা দোতারা বাজাইও না গানটা শুনুন। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান, মুসলমান আমরা সবাই গান গাইতাম। এই জিনিসগুলোকে আমাদের ফিরিয়ে আনতে হলে ছাত্রলীগ, যুবলীগকে প্রচণ্ডভাবে কাজ করতে হবে। টাকা টাকা চিন্তা করলে কিছুই দিতে পারবেন না। না দলকে না দেশকে না কাউকে। রুখে যেমন দাঁড়াতে হবে জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে তদ্রƒপভাবে অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে যারা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায়।
তিনি বলেন, অনেকে জয় বাংলা বলতে চায় না? কেন বলতে চায় না। কারণ তারা স্বাধীনতা বিশ্বাস করে না, বিশ্বাস করে না মুক্তিযুদ্ধকে, বিশ্বাস করে না বঙ্গবন্ধুকে। এখনো তারা পাকিস্তানের স্বপ্ন দেখে। পাকিস্তানের দোসররাই জয়বাংলা স্লোগান বলতে চাইনা। কারণ জয়বাংলা স্লোগানে আপনার ভেতর যে স্পিরিট আসবে, যে সাহস আসবে, যে অনুভূতি আসবে সেটা অন্য কোনো স্লোগানে আসেনা। সুতরাং এই স্লোগান দিয়ে আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। ।
তিনি আরো বলেন, এমন কোনো ডিস্ট্রিক্ট নেই যেখানে এমপি মহোদয়রা কাজ করেন নাই। এমন কোনো উপজেলা নেই যেখানে উপজেলা চেয়ারম্যানরা কাজ করেননি। তাহলে কেন এই এন্টি সেন্টিমেন্ট, এন্টি আওয়ামী লীগ সেন্টিমেন্ট। কারণ আমাদের বিরুদ্ধে সব সময়ই ছিল ইন্ট্রারন্যাশনাল ষড়যন্ত্র। শেখ হাসিনা যে সাহসী প্রদক্ষেপ নিয়েছে। তিনি কাউকে পরোয়া করেন না আল্লাহ ছাড়া। তিনি চান শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করতে। কতিপয় মানুষের এটা সহ্য হয়না। সহ্য হয় না বলেই দলের প্রতি এত ষড়যন্ত্র।  
মেয়র আইভী বলেন, আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে গর্ববোধ করি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বিশ্বাস নিয়েই রাজনীতিতে এসেছি। আমরা কেন জানি বাঙালির আবহমান ঐতিহ্য থেকে দূরে যাচ্ছি। আমরা মনে করি পাশ কাটিয়ে অল্প কিছু করেই যেন আল্লাহকে পেয়ে যাব। আল্লাহকে পাওয়া এত সোজা কথা নয়। আল্লাহকে পেতে হলে মানুষকে ভালোবাসতে হবে, মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে। আর যে মানুষের কল্যাণে কাজ করে সেই তার আল্লাহকে পায়, সে তার খোদাকে পায়। মানুষকে সেবা করার মাধ্যম হলো রাজনীতি। রাজনীতি এমন একটা জিনিস যেখানে আপনি আপনার দেশের জন্য কাজ করতে পারেন, মানুষের জন্য কাজ করতে পারেন,আপনার এলাকার জন্য কাজ করতে পারেন। সেই রাজনীতি হতে হবে সঠিক রাজনীতি।
এর আগে, একই দিন বিকাল ৪টার দিকে লোক সাংস্কৃতিক উৎসব উদযাপন পরিষদ বেগমগঞ্জ শাখার উদ্যোগে উপজেলার পাবলিক হল চত্ত্বরে এই উৎসবের উদ্বোধন করেন নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরণ। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিকিৎসা বিজ্ঞানী ও

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও লোক সাংস্কৃতিক উৎসব উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল ফারাহ্ পলাশের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলম। 
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী জেলা পরিষদের সাবেক চেয়রম্যান এবিএম জাফর উল্যাহ, বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইয়াসীর আরফাত প্রমুখ।
লোক সাংস্কৃতিক উৎসবে বক্তারা বলেন, জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে বাঙালির হৃদয়ের স্পন্দন লোক সংস্কৃতির ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উৎসবে লোক সংগীত শিল্পীরা বিভিন্ন গান পরিবেশন করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়