পদ্মা সেতু : মোটরসাইকেল চলাচল চেয়ে হাইকোর্টে রিট

আগের সংবাদ

আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ : বিশ্বকাপে অপ্রতিরোধ্য টাইগ্রেসরা

পরের সংবাদ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা : গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জীবন বদলে গেছে

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিনামূল্যে ঘর ও জমি দেয়ায় গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জীবন বদলে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে একজন মানুষও ভূমিহীন থাকবে না, ঠিকানাবিহীন থাকবে না। এটিই আমাদের লক্ষ্য। সে লক্ষ্য নিয়ে ইতোমধ্যে আমরা বহু মানুষকে ঘরবাড়ি করে দিয়েছি। যাদের কোনো ঘর ছিল না, জমি ছিল না, তাদেরই আমরা পুনর্বাসন করছি।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্সের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি একথা বলেন। এ সময় তারা ভূমিহীন-গৃহহীনদের ঘর নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পে ১১৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন। বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্সের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের নেতৃত্বে বিভিন্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পরিচালকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব কে এম শাখাওয়াত মুন সাক্ষাতের বিষয় নিয়ে পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
শাখাওয়াত মুন জানান, বিভিন্ন সময় অনুদান দেয়ার জন্য ব্যাংকারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনকে ধন্যবাদ জানাই। যে কোনো দুর্যোগ-দুর্বিপাকে আমার বলতেও হয় না, আপনারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সবাই চলে আসেন এবং সহযোগিতা করেন। আপনাদের প্রদত্ত অনুদান যথাযথভাবে মানুষের কাজে লাগে। আপনারা হয়তো চিন্তাও করতে পারবেন না, কত মানুষকে আমরা কতভাবে সাহায্য করি চিকিৎসা, ঘরবাড়ি সব বিষয়ে।
আশ্রয়ণের ঘর পাওয়া মানুষের জীবন বদলে যাওয়ার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আশ্রয়ণের ঘর পাওয়া মানুষের হাসি, তাদের তৃপ্তি, এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কিছু হতে পারে না। ঘরের সঙ্গে তাদের কিছু জমিও দেয়া হচ্ছে। জীবন জীবিকার জন্য আমরা নগদ টাকা দিচ্ছি। পাশাপাশি ট্রেনিং করিয়ে দিচ্ছি। ফলে আশ্রয়ণ প্রকল্পে তারা শুধু একটি ঘরই পাচ্ছে না, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও হয়ে যাচ্ছে। প্রায় সাড়ে ৭ লাখ পরিবার, আমরা যদি ৫ জন করেও ধরি। তাতেও দেখা যাচ্ছে প্রায় ৩৫ লাখেরও বেশি মানুষের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা হচ্ছে। খুবই দুস্থ, যাদের কোনো ঠিকানা ছিল না, থাকার জায়গা ছিল না। কারো বারান্দায়, গোয়ালঘরে, ফুটপাতে বা রাস্তাঘাটে পড়ে থাকত, একটি ঘর পাওয়ার পর আসলে তাদের

জীবনটাই পাল্টে গেছে।
তিনি বলেন, অনেকে সেখানে শাকসবজি চাষ করছে, হাঁস-মুরগি পালন করছে। কুটির শিল্প করছে অনেকে। অনেকে সেখানে দোকানও দিয়েছে। তারা নিজেরাই নিজেদের মধ্যে বিনিময় করছে, কেনাবেচা করছে। তারা জীবন জীবিকার একটা পথ খুঁজে পাচ্ছে। মানুষের জীবনটা পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে।
দেশের অধিকাংশ গৃহহীন-ভূমিহীন মানুষকে ঘর দেয়া হয়ে গেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অল্প কিছু বাকি আছে। সেগুলোও তৈরি হয়ে যাচ্ছে। আশ্রয়ণের প্রথম পর্বে ব্যারাক হাউসগুলোকেও আরো উন্নত করে দেয়া কিংবা তাদের নতুন ডিজাইনের ঘর নির্মাণ করে দেয়ার পরিকল্পনা আমরা নিয়েছি। এজন্য বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। শুধু সরকার না, সবাই মিলে দেশকে উন্নয়নের পথে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব।
বঙ্গবন্ধুকে অনুসরণ করে আশ্রয়ণ প্রকল্প নেয়া হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পরপর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এদেশে যারা ভূমিহীন আছে, তাদের তিনি ঘর দেবেন, জমি দেবেন এবং পুনর্বাসন করবেন। এ কাজটা শুরু করেছিলেন নোয়াখালীর চরে। বঙ্গবন্ধুকে অনুসরণ করে প্রথমে আমরা ব্যারাক হাউস নির্মাণ করে দিয়েছি। পরে আশ্রয়ণ প্রকল্প বলে একটা প্রকল্প নিলাম। সেনাবাহিনীর হাতে দায়িত্ব দিলাম। তারা এই ঘরগুলো করে দেবে, ব্যারাক হাউস। এভাবে আমরা প্রায় দেড় লাখ পরিবারকে পুনর্বাসন করে দিলাম। পরে ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত আমরা সরকারে ছিলাম না। ২০০৯ সালে সরকার গঠন করার পর আমরা আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ শুরু করলাম। আমরা দুই কাঠা জমি ও একটি ঘর তৈরি করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিই। যারা আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর নির্মাণে কাজ করছেন, তারা অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন। তাদের অনুভূতি, তারা একটা মহৎ কাজ করছেন।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, সব বাধা অতিক্রম করে সরকার দেশকে এগিয়ে নিচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে এগোতে পারলে যে কোনো দেশ উন্নতি করবে। আমাদের তো বাধা আছে, বাধা থাকবে। আমাদের একে হচ্ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, তারপর হচ্ছে মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ, আন্তর্জাতিকভাবেও বারবার কিছু বাধা আসে। করোনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সবকিছু মিলিয়ে অর্থনীতির ওপর একটু প্রভাব পড়েছে। তবে অন্য দেশের মতো আমরা বিপর্যস্ত না। আমরা কাটিয়ে উঠছি, কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি। দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
বেসরকারি খাতে ব্যাংক দেয়ার সুফলের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাইভেট ব্যাংকগুলো হওয়ায় তিন লাখ গ্র্যাজুয়েটের চাকরি হয়েছে। এটি একটি বড় বিষয়। এভাবেই আমরা কর্মসংস্থান তৈরি করছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়