পদ্মা সেতু : মোটরসাইকেল চলাচল চেয়ে হাইকোর্টে রিট

আগের সংবাদ

আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ : বিশ্বকাপে অপ্রতিরোধ্য টাইগ্রেসরা

পরের সংবাদ

আইনি লড়াই : মা-বাবাসহ জাপানি দুই শিশুর বক্তব্য শুনলেন আদালত

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : জাপানি বংশোদ্ভুত সেই দুই শিশু বাবার কাছে, নাকি মায়ের অভিভাবকত্বে বা জিম্মায় থাকবে সে বিষয়ে শিশুদের বক্তব্য শুনেছেন পারিবারিক আদালত। একই সঙ্গে আদালত তাদের বাবা ও মায়ের বক্তব্যও শুনেছেন। গতকাল রবিবার দুপুরের পর ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান তাদের বক্তব্য শোনেন। বেলা ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত রুদ্ধদ্বার এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বড় মেয়ে জেসমিন মালিকা তার জাপানি মায়ের সঙ্গে ও মেজ মেয়ে বাংলাদেশি বাবার সঙ্গে চলে যান।
যাওয়ার সময় শিশুদের বাবা ইমরান শরীফ বলেন, আমার দুই মেয়ে আমার কাছে থাকতে চায়। কিন্তু উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে ভুয়া পাসপোর্ট তৈরি করে তাদের জাপানে নিয়ে যেতে চাইছিল স্ত্রী এরিকো। পরে ইমিগ্রেশনে ধরা পড়ে। বাচ্চারা জানতো না তাদের জাপানে নিয়ে যাচ্ছে। মেজ মেয়ে আমার সঙ্গে থাকে। বড় মেয়েও থাকতে চায়, কিন্তু তাকে আটকে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে শিশুদের মা নাকানো এরিকো ইংরেজিতে বলেন, চুরি করে বড় দুই মেয়েকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়েছে। তারা আমার কাছে থাকতে চায়। জাপানি আদালতের নির্দেশ বহাল রেখে আমার কাছে মেয়েদের দেয়ার জন্য আদালতে অনুরোধ করেছি।
এদিকে জাপানি বড় মেয়ে জেসমিন মালিকা ইংরেজিতে বলেন, আমি জীবনে কখনো এখানে (বাংলাদেশে) আসিনি। এখানে আমি কীভাবে থাকব। আমি জাপানে যেতে চাই। সেখানে আমার বন্ধুরা রয়েছে। আত্মীয় স্বজন রয়েছে। আমার মা অসুস্থ। আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তবে তার ছোট বোন কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।
জাপানি নারী এরিকোর আইনজীবী শিশির মনির জানান, দুই শিশু ও বাবা-মায়ের বক্তব্য শুনেছেন আদালত। আগামী ২২ জানুয়ারি মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি হবে। এরপর বিচারক রায়ের জন্য দিন ধার্য করবেন। তারপর শিশুরা কার কাছে থাকবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। তবে আদালত থেকে দুই শিশুকে মায়ের কাছে রাখার কথা বলা হলেও ২৪ ডিসেম্বর থেকে জোর করে মেজ মেয়েকে বাবা নিজের কাছে রাখছেন বলে দাবি করেন তিনি।
উল্লেখ্য, নাকানো এরিকোর সঙ্গে বাংলাদেশি প্রকৌশলী ইমরান শরীফের বিয়ে হয় ২০০৮ সালে। ১২ বছরের সংসারে তারা তিন কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। তারা হলো- জেসমিন মালিকা, লাইলা লিনা ও সানিয়া হেনা। দাম্পত্য কলহের জেরে ২০২০ সালের শুরুতে বিচ্ছেদের আবেদন করেন এরিকো। তবে ডিভোর্স না হলেও এরপর ইমরান বড় দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। ছোট মেয়ে জাপানে এরিকোর সঙ্গে থেকে যায়।
তবে মেয়েদের জিম্মা পেতে করোনা মহামারির মধ্যে গত বছর জুলাই মাসে বাংলাদেশে আসেন এই জাপানি নারী এবং হাইকোর্টে রিট করলে তাদের সমঝোতায় আসতে বলেন বিচারক। কিন্তু তারা সমঝোতায় না আসায় কয়েক মাস ধরে শুনানির পর হাইকোর্ট দুই সন্তানকে বাবার হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত দেয়। পাশাপাশি মা যাতে সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে বাবাকে বলা হয়।
পরে হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন মা এরিকো। পরে আপিল বিভাগ গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি আদেশে বলেন, দুই মেয়ে কার জিম্মায় থাকবে, তার নিষ্পত্তি হবে পারিবারিক আদালতে। তার আগ পর্যন্ত দুই শিশু তাদের মায়ের কাছেই থাকবে। তবে সন্তানসহ পালানোর চেষ্টা করলে জাপানি মা এরিকোর বিরুদ্ধে গত ২৯ ডিসেম্বর ঢাকার আদালতে মামলা করেন সন্তানদের বাবা ইমরান শরিফ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়