মির্জা ফখরুল : বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গণবিরোধী

আগের সংবাদ

সতর্ক-সংকুলানমুখী মুদ্রানীতি : আমানত সুদের ঊর্ধ্বসীমা প্রত্যাহার > নীতি সুদহার বাড়ল > রেপো সুদহার বেড়েছে ২৫ বেসিস পয়েন্ট

পরের সংবাদ

লাভ বেশি হওয়ায় মেলান্দহে কমেনি বিষাক্ত তামাক চাষ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সাকিব আল হাসান নাহিদ, মেলান্দহ (জামালপুর) থেকে : জামালপুরের মেলান্দহে কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় তামাক চাষে আগ্রহ কমছে না কৃষকদের। কিছুতেই তামাক চাষ ছাড়ছেন না তারা। তবে অন্য ফসলের চাষও করতে চান না তারা।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, উপজেলার শেখ সাদী ও রৌমারী বিলে তামাক চাষ হয়। কৃষকদের তামাক চাষের কুফল ও স্বাস্থ্যের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বোঝানো হচ্ছে এবং তামাকের বদলে ধান চাষের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তবে ওই তামাক চাষিরা বলছেন, ধান চাষ থেকে তামাক চাষে বেশি লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। তাই এখনো তামাক চাষের মায়া ছাড়তে পারেনি কেউ। ধান চাষ করলে তেমন লাভ হয় না তাই তামাক চাষ করা হয়।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ঝাউগড়া ইউনিয়নের শেখসাদী ও রৌমারী এলাকায় সবচেয়ে বেশি তামাক চাষ হয়। উপজেলায় এ বছর ২০ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে। যে জায়গাটিতে তামাক চাষ করা হয়েছে সেই জায়গাটি ধানের জন্য উপযোগী। তাই ধান চাষের জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে?। ধান চাষে ভালো ফলনও হচ্ছে। তবুও কিছু কৃষক তামাক চাষ করছে।
ওই এলাকায় ধান চাষ নিয়ে কথা হলে কৃষকরা জানায়, শেখ সাদীর এলাকা ও রৌমারী বিলে ধান চাষের জন্য ভালো উপযোগী জায়গা। ধান চাষে ভালো ফলন হয়। ১ বিঘা জমিতে ধান চাষ করলে ৮-১০ হাজার টাকা খরচ হয়। ১ বিঘা জমিতে ধান হয় ২৫ থেকে ২৮ মণ। এ বছর ধান বিক্রি হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা মণ। ধান চাষেও লাভবান হচ্ছে বলে জানান কৃষকরা।
তবে শেখ সাদী ও রৌমারী এলাকার তামাক চাষিরা বলছেন, তামাক ছাড়া অন্যসব চাষে যে পরিমাণ খরচ লাগে তার তুলনায় তামাক চাষে খরচ অনেক কম হয়। তামাক চাষের লাভ বেশি থাকে। তামাক চাষের সার তেমন লাগে না একবার সার দিলেই হয়। তামাকের পাতা বিক্রি করতে বাজারে যেতে হয় না বাড়ি থেকে বিক্রি হয় লাভটা অনেক বেশি। তাই ধান চাষ করতে চাই না।
সরজমিন উপজেলার শেখ সাদী, রৌমারী বিল এলাকায় দেখা যায়, বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে তামাক খেত। কেউ তামাক গাছের পরিচর্যা করছেন, কেউ তামাক গাছের ছোট পাতা কাটছেন, আবার ক্ষেতে সার দিচ্ছেন কেউ। তামাক চাষি গোলাপ নবী বলেন, ‘৮-৯ বছর ধরে ধরে তামাক চাষ করি। এবার ৩৫ শতাংশ জমিতে করেছেন। তামাক চাষে খরচ কম হয় লাভ বেশি হয়। সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা খরচ হবে। আর বিক্রি করতে পারব ৩২ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। বিক্রি করার জন্য বাজারে বা বাহিরে যেতে হবে না বাড়ি থেকেই তামাক পাতা বিক্রি হয়।
শেখ সাদী এলাকার তামাক চাষি মুজিবর বলেন, ‘আমার বাপ দাদারাও এই তামাক চাষ করত। আমরাও তামাক চাষ করি। জানি তামাক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তবুও লাভটা একটু বেশি তাই তামাক চাষ করি। এ বছরের যদি শিলাবৃষ্টি না হয় তাহলে বেশ লাভবান হবো আমরা।
ঝাউগড়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইব্রাহিম ফকির বলেন, ‘শেখ সাদী এলাকায় অনেক আগে থেকেই তামাক চাষ হয়। বাপ দাদার আমল থেকে দেখি এই এলাকায় চাষ হয় তামাক। তাই এই চাষ কেউ সহজে ছাড়তে পারছে না। তামাক কোম্পানির লোকগুলো বাড়ি থেকে এসে তামাক কিনে নিয়ে যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল বলেন, তামাক বিক্রির নিশ্চয়তা এবং ভালো দাম পাওয়ার কারণে তামাক চাষ কমানো যাচ্ছে না। তামাকের প্রতি পাতা ১২ থেকে ১৫ টাকা বিক্রি করে কৃষকেরা তাই তারা ছাড়তে চায় না অধিক লাভজনক হাওয়ায়। তামাকের ক্ষতিকর বিষয় নিয়ে কৃষকদের সঙ্গে

প্রতিনিয়ত কথা হচ্ছে তবুও কৃষকেরা ছাড়ছে না। তামাক চাষ কমিয়ে আনতে আমরা সব সময় কাজ করছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. গাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তামাক স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তামাক ভাঙার সময় তামাকের গুঁড়া বাতাসের সঙ্গে মানুষের শ্বাসনালি দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে। তামাক ফুসফুসে মারাত্মকভাবে ক্ষতি করে। এবং ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়