মির্জা ফখরুল : বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গণবিরোধী

আগের সংবাদ

সতর্ক-সংকুলানমুখী মুদ্রানীতি : আমানত সুদের ঊর্ধ্বসীমা প্রত্যাহার > নীতি সুদহার বাড়ল > রেপো সুদহার বেড়েছে ২৫ বেসিস পয়েন্ট

পরের সংবাদ

ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল : কক্ষ জটিলতায় পড়ে আছে মরদেহ সংরক্ষণের ফ্রিজার

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : অজ্ঞাত মরদেহ সংরক্ষণ, আত্মহত্যাসহ মামলা সংক্রান্ত সব মরদেহের রক্ষণাবেক্ষণে জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল মর্গে একটি আধুনিক ফ্রিজার সরবরাহ করে ঢাকার কেন্দ্রীয় ঔষধাগার। কিন্তু মর্গের পুরাতন ভবনের কক্ষ জটিলতায় ফ্রিজারটি গত চার মাসেও স্থাপন করা যায়নি সেখানে। ফলে ২৪ লাখ ৬৯ হাজার টাকা মূল্যের ফ্রিজারটি কোনো কাজে আসছে না মরদেহ সংরক্ষণে। বন্ধ অবস্থায় এটির ঠাঁই হয়েছে হাসপাতালের পুরাতন ভবনের মেঝেতে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এ হাসপাতালের মর্গে মরদেহ সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় নানা সমস্যার সৃষ্টি হতো। হাসপাতালটির ৪৪ বছরের সমস্যা লাঘবের লক্ষ্যে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে মরদেহ সংরক্ষণের জন্য ৪-ড্রয়ার বিশিষ্ট একটি আধুনিক মরদেহ সংরক্ষণের ফ্রিজার সরবরাহ করা হয়।
ফ্রিজারটি বুঝে পেলেও এটি মর্গে স্থাপন করতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে মর্গটির সংস্কার না হওয়ায় অনুপযোগী হয়ে পড়ে এর ভবন ও কক্ষগুলো।
হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. রাকিবুল আলম বলেন, মর্গটি অনেক পুরাতন ও কক্ষের দরজাটি সঙ্কুচিত হওয়ায় ৭ ফিট চওড়া ফ্রিজটি স্থাপন সম্ভব হচ্ছে না। মর্গের ভবন পুরাতন ও জরাজীর্ণ থাকায় নতুন বিল্ডিং নির্মাণের জন্য গণপূর্ত বিভাগকে চিঠি দেয়া হয়েছে। নতুন ভবন নির্মাণের পর এটি স্থাপন করা সম্ভব হবে। তবে দীর্ঘদিন ফ্রিজারটি এভাবে পড়ে থাকলে এর যান্ত্রিক ত্রæটি বা বিকল হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিতে পারে। সম্প্রতি হাসপাতাল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে শহরের আর্টগ্যালারি এলাকায় মর্গটিতে গিয়ে দেখা যায়, ময়নাতদেন্তর জন্য ভবনের সামনে ভ্যানে রাখা হয়েছে একটি মরদেহ। তার একদিন আগে মৃত্যু বরণ করেন ওই ব্যক্তি। মৃত ব্যক্তির ছেলে কলিন চন্দ্র রায় জানান, একদিন আগে বিকালে তার বাবা বিষপানে আত্মহত্যা করেন। মরদেহটি ময়নাতন্তের জন্য পুলিশ মর্গে পাঠালেও এখানে মরদেহ সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নাই। ফলে দুদিন ধরে ভ্যানে রাখা হয় তার বাবার মরদেহ। সুদেব চন্দ্র রায় নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, জেলার ৫টি উপজেলার একটি মাত্র মর্গ এটির বেহাল দশা, জায়গাও সংকুলান। এখানে মরদেহ সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকলে মরদেহ পচন ধরার আশঙ্কা থাকে না। পরে ধর্মীয়ভাবে মরদেহটির কবর বা সৎকার সময় মতো করা যেত।
মর্গে কর্মরত ডোম সুকুমার মহন্ত বলেন, আধুনিক যন্ত্রপাতি না থাকায় কামার থেকে বানিয়ে হাতুড়ি, বাটাল ও করাত দিয়ে মরদেহগুলোর কাটাছেঁড়া করা হয়। জরাজীর্ণ ছোট কক্ষে ময়নাতদন্তের কাজগুলো করছি ৩৭ বছর ধরে। লাশকাটা ঘরের পেছনের দিকে রয়েছে নদী সেখান থেকে পানি এনে পরিষ্কার করতে হয় ময়লা ও রক্ত। সব সরঞ্জামের সংকট রয়েছে দীর্ঘদিন। অন্যদিকে নিরাপত্তাপ্রহরীর পদেও কেউ নেই। বেশ কয়েকবার রাতে দুর্বৃত্তরা নতুন যন্ত্রাংশ চুরি করে নিয়ে যায়। নিয়ম অনুযায়ী নারী ডোম থাকার কথা থাকলেও এখানে তা নেই। ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. নুর নেওয়াজ আহমেদ বলেন, মর্গটি আধুনিকায়নের জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চিঠি দিয়েছি। মর্গের নিরাপত্তা ও লোকবলের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। নতুন ভবন পেলে ফ্রিজারটি স্থাপন করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়