দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত হওয়ার অপেক্ষায় ‘নতুনের উৎসব’। ছয় দিনের এই নাট্যোৎসবের আয়োজন করতে যাচ্ছে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়। সেজন্য সৃজনশীল এবং উদ্যমী পাঁচটি নাট্যদলকে নতুন নাটক মঞ্চে আনার জন্য প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। উৎসবে নাগরিকের প্রণোদনা পাওয়া পাঁচটি নতুন নাটকের উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হবে বলে জানিয়েছেন উৎসবের আহ্বায়ক সারা যাকের।
এবার প্রণোদনা পাওয়া নাট্যদলগুলো মধ্যে থিয়েটার ফ্যাক্টরি মঞ্চে আনতে যাচ্ছে অলোক বসুর নির্দেশনায় ‘রেস্পেক্টেবল প্রস্টিটিউট’। ‘হৃৎমঞ্চ’ মঞ্চায়ন করবে শুভাশিস সিনহার রচনা ও নির্দেশনায় ‘রিমান্ড’। এই রিমান্ড নাটকের মাধ্যমে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের বাইরে প্রথমবার অভিনয় করতে যাচ্ছেন আসাদুজ্জামান নূর। নাটকটিতে একজন লেখকের চরিত্রে অভিনয় করছেন নূর। এছাড়া নাটকের দল ‘বটতলা’ মোহাম্মদ আলী হায়দারের নির্দেশনায় মঞ্চে আনবে ‘সখি রঙ্গমালা’। বাকার বকুলের রচনা ও নির্দেশনায় ‘তাড়ুয়া’ মঞ্চে আনতে যাচ্ছে ‘আদম সুরত’। এছাড়া প্রাচ্যনাট আজাদ আবুল কালামের নির্দেশনায় মঞ্চে আনতে যাচ্ছে ‘অচলায়তন’।
নাগরিক নাট্য সম্প্রদায় ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বাংলাদেশে দর্শনীর বিনিময়ে নাট্যচর্চার ৪৫ বছর উদযাপনের প্রাক্কালে নাট্য প্রণোদনা ঘোষণা করে। ২০১৯ সালে তাদের প্রণোদনায় পাঁচটি নাটক নিয়ে প্রথমবারের মতো উদযাপিত হয় ‘নতুনের উৎসব’। ২০২০ সালে প্রয়াত হন নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের সভাপতি আলী যাকের। ২০২০ ও ২০২১ সালে মহামারির কারণে ‘নতুনের উৎসব’ আয়োজন সম্ভব না হলেও ২০২২ সালে আবার উৎসবের পরিকল্পনা করা হয়। সেজন্য পাঁচটি নাট্যদলকে নতুন নাটক মঞ্চে আনার জন্য প্রণোদনা দেয়া হয়। গত নভেম্বরে এ নাট্যোৎসব আয়োজনের কথা শোনা গিয়েছিল। পরে তারিখ পরিবর্তন করে ২০২৩ সালের ২১ থেকে ২৬ জানুয়ারির সূচি চূড়ান্ত করা হয়।
সারা যাকের বলেন, “প্রথমবার ২০১৯ সালে আমরা পাঁচটি নাটককে প্রণোদনা দিয়েছিলাম। সেই নাটকগুলো নিয়েই নতুনের উৎসব হয়েছিল। পরে আমাদের নাট্যদলের সভাপতি আলী যাকের প্রয়াত হন। দলের সবার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উৎসবটির নামকরণ করা হয় ‘আলী যাকের নতুনের উৎসব’। আগামী ২১ থেকে ২৬ জানুয়ারি আলী যাকের নতুনের উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য পাঁচটি নাটককে অনুদান দেয়া হয়েছে। উৎসবে এই ৫টি নতুন নাটকের উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হবে। এই নাটকগুলো নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের প্রণোদনায় মঞ্চে আসছে। পাঁচটি নাটকের উদ্বোধনী মঞ্চায়ন ছাড়াও আমাদের আরও কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। উদ্বোধনী পর্বে বর্ণিল আয়োজন সাজানো হচ্ছে।”
পাঁচটি নাট্যদলকে নতুন নাটকের জন্য ৩ লাখ টাকা করে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। প্রতিটি নাট্যদল প্রণোদনার অর্থ দিয়ে নতুন নাটক মঞ্চে আনবে এবং নতুনের উৎসবে সেই নাটকের উদ্বোধনী মঞ্চায়ন করবে। পরে দলগুলোর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় নাটকগুলোর নিয়মিত প্রদর্শনী অব্যাহত থাকবে। গত বছরের ৫ আগস্ট বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সেমিনার কক্ষে এ উৎসবের প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়। উৎসব কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন আসাদুজ্জামান নূর ও আবুল হায়াত। এ উৎসবের পৃষ্ঠপোষকতা করছে ‘মঙ্গলদীপ ফাউন্ডেশন’। পাশাপাশি নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের তহবিল থেকেও উৎসবের খরচ মেটানো হবে।

:: হেমন্ত প্রাচ্য