আ.লীগ নেতা টিপু হত্যার প্রতিবেদন পেছাল

আগের সংবাদ

মাদকের বিরুদ্ধে ‘নতুন যুদ্ধ’ : তালিকায় ৯৩ শীর্ষ মাদক কারবারি, এক লাখ মাদকাসক্ত, জনসচেতনতা বাড়াতে প্রস্তুত অ্যাপ

পরের সংবাদ

দোয়ারাবাজারে দখলযজ্ঞে নদী এখন সরু খাল

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা : সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে বালি নদী দখল করে দোকানপাট ও বাড়ি নির্মাণসহ ধান চাষ করছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র। এ ব্যাপারে প্রশাসন নীরব রয়েছে।
জানা যায়, দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের মরাচেলা বালি নদীর জায়গা দখল করে ধান চাষ, দোকানপাট ও বাড়ি নির্মাণ করছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র। দখলের ফলে নদীটি তার গতিপথ হারিয়ে সরু খালের আকার ধারণ করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একসময় এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য ও যোগাযোগের অন্যতম পথ ছিল বালি নদী। দুই পাড়ের কৃষকরা ফসলি জমিতে সেচ দিতেন এই নদী থেকে। বর্তমানে নদী দখল ও তলদেশ ভরাট হয়ে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় নদীর বুকে এখন ধানসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ হচ্ছে।
উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের কলাউড়া, ঢালিয়া, রামসাইরগাঁও, বড়খাল, কুশিউড়া, কিরণপাড়া গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মরাচেলা বালি নদীর কলাউড়া শিমুলতলা থেকে ভোলাখালী ব্রিজ পর্যন্ত নদীর ভেতর থেকে পিলার উঠিয়ে তার ওপর নির্মাণ করা হয়েছে পাকা ভবন। অনেকে পাকা ভবন করে গড়ে তুলেছেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। কেউ দোকান নির্মাণ করে তা ভাড়া দিচ্ছেন।
সরজমিন দেখা গেছে, বিভিন্ন স্থানে শ্যালোমেশিন বসিয়ে নদীর বুক থেকে নির্বিচারে বালু উত্তোলন করে তা অবাধে বিক্রি করছে স্থানীয় একটি চক্র। কেউ কেউ আবার শুকনো চর থেকে কোদাল, বেলচা দিয়েও বালু তুলে বিক্রি করছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যে অভিযান পরিচালনা করে ড্রেজার মেশিন জব্দ করলেও কিছুদিন পর আবারো শুরু হয় বালু উত্তোলন।
নদীর দুই পাড়ের বাসিন্দারা জানান, এক সময় মরাচেলা বালি নদীতে পর্যাপ্ত পানি প্রবাহ ছিল। শুষ্ক মৌসুমেও নদীতে থাকত প্রচুর পরিমাণ পানি। তা দিয়ে চাষাবাদ করার পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ করা যেত। বোরো ফসলের মাঠে সেচ দেয়ার কোনো চিন্তা করতে হতো না। দীর্ঘদিন ধরে খনন না হওয়ায় নদীর তলদেশে পলি জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে।
শুষ্ক মৌসুমে এখন আর সেচ দেয়ার মতো পানি থাকে না নদীতে। নদী তীরে যাদের জমি রয়েছে তারাই নদী দখলে নিচ্ছে। যাদের জমি নেই তারাও ধান চাষের ছলে নদী দখল করছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেন বলেন, নদীটি দখল আর দূষণের কারণে সরু হয়ে গেছে। শুষ্ক মৌসুমে পানি থাকে না আবার বর্ষাকালে উজানের পানি আসার কারণে জমি, বসতবাড়ি ও রাস্তা-ঘাট ভাঙনের কবলে পড়ে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত এ নদীটি দখলমুক্ত করে খননের জোর দাবি জানান তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা রায়হানুল ইসলাম রবিন বলেন, শৈশবে দেখেছি নদীটি ৩৫ থেকে ৪০ ফুট চওড়া ছিল। দখল ও দূষণের কারণে এখন তা সরু হয়ে গেছে। দ্রুত নদীটি খননের দাবি জানাচ্ছি প্রশাসনের কাছে।
বাংলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আবুল হোছাইন নদী খননের দাবি জানিয়ে ভোরের কাগজকে বলেন, ছোট বেলায় দেখেছি নদীটির অনেক গভীরতা ছিল। বর্তমানে এটি খনন না করা হলে কয়েক বছর পর পুরোপুরি অদৃশ্য হয়ে যাবে।
তিনি আরো বলেন, নদীটি পুনঃখনন না করায় বর্তমানে দখল করে দোকানপাট, বসতবাড়ি নির্মাণ করাসহ ধান ও বিভিন্ন ধরনের চাষ করা হচ্ছে।
দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা প্রিয়াংকা ভোরের কাগজকে বলেন, অবৈধ দখলের কারণে ফসলের মাঠে পরিণত হয়েছে নদীটি। অচিরেই অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়