আ.লীগ নেতা টিপু হত্যার প্রতিবেদন পেছাল

আগের সংবাদ

মাদকের বিরুদ্ধে ‘নতুন যুদ্ধ’ : তালিকায় ৯৩ শীর্ষ মাদক কারবারি, এক লাখ মাদকাসক্ত, জনসচেতনতা বাড়াতে প্রস্তুত অ্যাপ

পরের সংবাদ

টেকনাফের করিম উল্লাহ হত্যা মামলা সিআইডিতে হস্তান্তর : জামিনে বের হয়ে দুবাই পালিয়েছে জামাতা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজার দক্ষিণ প্রতিনিধি : টেকনাফে আলোচিত হাজী করিম উল্লাহ খুনের মামলাটি অবশেষে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) হস্তান্তর করা হয়েছে। ২০২২ সালের ১১ ডিসেম্বর ঢাকা পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের অ্যাডিশনাল ডিআইজি (ক্রাইম রেঞ্জ) মোহাম্মদ শাহ জালাল স্বাক্ষরিত পত্রে উল্লেখ করা হয় “টেকনাফ মডেল থানার মামলা নং-৬০ তারিখ : ১৭-০৯-২০২১ এর তদন্তভার আদিষ্ট হয়ে সিআইডিতে হস্তান্তর করা হলো।” 
এই আদেশের পরপর সিআইডি কক্সবাজার অফিসের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শাহাদাত হোসেন মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করেন। তিনি ইতোমধ্যে মামলার ডকেট সংগ্রহ, ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ নিবিড়ভাবে এই খুনের রহস্য উন্মোচনে গ্রাউন্ড ওয়ার্ক শুরু করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন। 
টেকনাফ মডেল থানার ওসি মো. আবদুল হালিম জানান, আলোচিত এই খুনের মামলাটি এক বছরেরও অধিক সময় ধরে টেকনাফ মডেল থানার একজন উপপরিদর্শক তদন্ত কার্যাক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন এবং ঘটনায় জড়িত বেশ কয়েকজনকে আটকও করেছেন। মামলাটি আরো বেশি গভীর হলে তদন্তের জন্য সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করায় এ খুনের আসল রহস্য উন্মোচন ও প্রকৃত খুনিরা চিহ্নিত হবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন টেকনাফ পৌর সভার ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল বশর নুরশাদ ও নিহতের ভাই হাজী আমান উল্লাহ। 
এ ঘটনায় প্রথমে ২০২১ সালের ৩০ অক্টোবর (শনিবার) খুনের অন্যতম মাস্টার মাইন্ড ও নিহতের জামাতা (আপন মেয়ের স্বামী) 
মোহাম্মদ হোসেনকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। 
পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই তারেক ৩ নভেম্বর-২০২১  কক্সবাজার আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। দুদিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদও করেন তদন্ত কর্মকর্তা। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অটোরিকশা চালক এমরানকেও (২৭) পুলিশ ১

নভেম্বর-২০২১ আটক করে। সে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মাঠ পাড়া গ্রামের মো. আয়ুবের ছেলে। তবে তাদের বেশি দিন কারাগারে থাকতে হয়নি। 
মামলা পরিচালনায় বাদীর উদাসীনতা, তদন্ত কর্মকর্তার সময় ক্ষেপণ ও নানাবিধ কারণে আটক আসামি উচ্চ আদালতের আদেশে জামিনে বের হয়ে আসে। এরমধ্যে অতি সংগোপনে নিহতের জামাতা মোহাম্মদ হোসেন দুবাইয়ে পাড়ি জমান। 
অনুসন্ধানে জানা যায়, টেকনাফ পৌর সভার ৯ নং ওয়ার্ডের মৃত হাজী সাব্বির আহমেদের ছেলে হাজী করিম উল্লাহর মৃতদেহ গত ২০২১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সকালে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের কচ্ছপিয়া ব্রিজের নিচ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি আগের দিন ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে মেয়ের ঘরে দাওয়াত খেয়ে ফেরার পথে নিখোঁজ হন। এ সময় তার মোবাইল বন্ধ ছিল। পর দিন সকালে অজ্ঞাত মৃতদেহ হিসেবে পুলিশ উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপতাল মর্গে পাঠায়। ওই দিন সন্ধ্যায় পরিবার তার লাশ শনাক্ত করে। এরপর ১৬ সেপ্টেম্বর বিকালে নিহত হাজী করিম উল্লাহর জানাজা শেষে টেকনাফ পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়। গত ২০২১ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর স্ত্রী মুরশিদা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকে টেকনাফ মডেল থানার এসআই তারেক রহস্যময় এ মামলার তদন্ত কাজ শুরু করেন। 
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হাজী করিম উল্লাহ ওই দিন রাতে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মাঠপাড়ায় আপন মেয়ের ঘরে দাওয়াতে অংশ নেন। সেখান থেকে অটোরিকশাযোগে ফেরার পথে খুনের শিকার হন। কিন্তু এ বিষয়টি প্রথম থেকেই ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করেন হাজী করিম উল্লাহর স্ত্রী ও জামাতা। এ থেকে অনেকে সন্দেহের তীর ছোড়ে যে, এই খুনের মাস্টারমাইন্ড স্ত্রী ও মেয়ের জামাতা। কিন্তু স্ত্রী মামলার বাদী হওয়ায় পুলিশ সতর্কতার সঙ্গে তদন্ত কাজ পরিচালনা করে। তথ্য প্রযুক্তি, মোবাইল ট্র্যাকিং ইত্যাদির মাধ্যমে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা হাজী করিম উল্লাহর খুনের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে আপন মেয়ের স্বামী মোহাম্মদ হোসেনকে চিহ্নিত করে। অবশ্য ওই দিন রাতে মেয়ের ঘরে দাওয়াতে অংশ নেয়ার কথা স্বীকার করেন তারা। অবশেষে মামলার প্রায় দেড় মাসের মধ্যে তাকে আটক করে রহস্যের দ্বার উন্মোচন করতে পারলেও মামলার চার্জশিট দিতে পারেননি তদন্ত কর্মকর্তা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়