আ.লীগ নেতা টিপু হত্যার প্রতিবেদন পেছাল

আগের সংবাদ

মাদকের বিরুদ্ধে ‘নতুন যুদ্ধ’ : তালিকায় ৯৩ শীর্ষ মাদক কারবারি, এক লাখ মাদকাসক্ত, জনসচেতনতা বাড়াতে প্রস্তুত অ্যাপ

পরের সংবাদ

আমরা কি মানুষ?

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এই প্রশ্নের জবাব আমরা শত লাখো কোটি কণ্ঠে বলতে পারি হ্যাঁ, আমরা মানুষ। যে শারীরিক কাঠামো আমাদের, তাকে মানুষের বলে শনাক্ত করতে কারো মনে দ্বিধা থাকার কথা নয়। আমরা দ্বিধান্বিত তখনই হয়ে পড়ি, যখন মনে হয় এ কাজ তো মানুষ করতে পারে না। কিন্তু সভ্য ও মানবতার তকমা ধারণ করেও যখন মানুষের বিরুদ্ধে মানুষ এমন সব নরক গুলজার করে, যা আমাদের হৃদয়কে রক্তাক্ত করে ফেলে। নরক বা দোজখের যে ইমেজ আমাদের মানবিক ও সামাজিক জীবনে, সেই দৃশ্যচিত্র অবশ্যই আমরা আহরণ করেছি সাংস্কৃতিক জীবন থেকে। সেই সাংস্কৃতিক দুরাচারের নিখিলেই যেন আমাদের বসবাস।
গাজীপুরের একটি ইউনিয়নের বিএনপি দলীয় নেতাকে কোন অপরাধে কারাগারে আটক রেখেছে সরকার, সেই প্রশ্নে আমি যেতে চাই না। কারণ তা রাজনৈতিক বা সামাজিক ঘটনা আর আইন ও আদালতের আওতাধীন। কিন্তু একজন মানুষের মৌলিক অধিকার হচ্ছে তার কৃত অপরাধের ন্যায়বিচার করা। বাংলাদেশে যথাসময়ে বিচারিক কাজ হয় না বলেই আইনের চোখে দোষী ও নির্দোষরা কারাগারে আটক থাকছে বছরের পর বছর ধরে। এ রকম হাজারটা নমুনা উদ্ধৃত করা যায়। যেসব পুলিশ গুলি চালিয়ে রাজনৈতিক মিছিলে মানুষ হত্যা করে চলেছে, তারা এবং তাদের নির্দেশদাতারা কি আইনের চোখে অপরাধী/অন্যায়কারী এবং মানবতাহীন কাঠামোর মানুষ? তাদের মনে কি মানুষের প্রতি মানুষের সামাজিক কর্তব্য, মানবিকতা দেখানোর ন্যূনতম অনুভূতি নেই? পুলিশের কৃতকর্মের একটি নমুনার উপস্থিত করছি, যা আমাদের পুলিশি আচরণের ছবি দেখাবে।
গাজীপুরের বিএনপি নেতা আলী আজমকে হাতকড়া ও ডাণ্ডাবেড়ি পরানো অবস্থায় মায়ের জানাজায় নেয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ নিন্দা জানায় কমিশন। মা সাহেরা বেগমের মৃত্যুর খবরে ৩ ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পান গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. আলী আজম। বাড়িতে নেয়ার পর তিনি নিজেই মায়ের জানাজা পড়ান। এ সময় তার হাতকড়া ও ডাণ্ডাবেড়ি পরানো ছিল। মানবাধিকার কমিশনের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনপূর্বক প্যারোলে মুক্তি দেয়ার পরও একজন বন্দিকে মায়ের জানাজায় ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে নিয়ে যাওয়া কেবল অমানবিকই নয়, বরং বাংলাদেশের সংবিধান ও মৌলিক মানবাধিকারের পরিপন্থি। বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বিচার বা দণ্ড প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেয়া যাবে না কিংবা নিষ্ঠুর, অমানুষিক বা লাঞ্ছনাকর দণ্ড দেয়া যাবে না। পাশাপাশি কোনো অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ডাণ্ডাবেড়ি পরানো-বিষয়ক উচ্চ আদালতের যে নির্দেশনা রয়েছে, সেটাও এ ক্ষেত্রে অনুসরণ করা হয়নি, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’ (সমকাল ২২-১২-২২)
এই নিউজ কি অস্বীকার করা যাবে? এই ডাণ্ডাবেড়ির কারাগারের রীতি ও তার নারকীয় ব্যবহার আমাদের অসংশোধিত ও সংশোধিত সংবিধানের কোথায়ও লেখা নেই। কিন্তু কারাগারের পুলিশ বা সাধারণ পুলিশ, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের পুলিশ যেসব অমানবিক ও বেআইনি (সংবিধানবিরোধী!) কাজ অহরহই করছে, তা সবারই চোখের সামনে ঘটছে, কিন্তু তার কোনো প্রতিবাদ করছে না। কারণ ব্রিটিশ আমল থেকে চাউর করা ‘পুলিশে ছুঁলে ৩৬ ঘা’ নামক উপমাটি চলে আসছে। পুলিশি চরিত্র প্রকাশে এর চেয়ে কঠোর প্রাবাদিক বাক্য আর রচিত হয়নি। সেই পুলিশি রীতি ও আচরণই, (বেআইনি হলেও/ অসাংবিধানিক হলেও) চলছে। অর্থাৎ দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বা অদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি এই উভয়ের মানবাধিকার সমান। কিন্তু পুলিশি আচরণে তা সমান হলেও কার্যক্রমে অসাংবিধানিক আচরণ করেছে পুলিশ। এই অপরাধ, পুলিশের সংবিধান লঙ্ঘনের বিষয়টি কখনো কখনো উচ্চ আদালতের দৃষ্টিতে এলে বিচারপতিগণ নির্দেশনামূলক রায়ে উল্লেখ করেন, কিন্তু পুলিশ ও সরকার তাকে আমলে নেয় না, বাস্তবায়নও করে না। যেমন রাজনৈতিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে বা খুনের আসামির বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতের বিচারক রিমান্ডের যে আইনি নির্দেশ দেন, তার বৈধতা নেই। সংবিধানে রিমান্ডের কোনো তথ্য নেই। অর্থাৎ নিম্ন আদালতের বিচারকরাও সংবিধান লঙ্ঘন করছেন। এই রিমান্ড নামক অবৈধ কাজটির সূচনা ব্রিটিশদের হাতে। মানুষকে তাদের প্রজা মনে করে নিগৃহের জাঁতা হিসেবে কিছু পুলিশি কাজ যুক্ত করে, যা মানবাধিকার হরণের জন্য যথেষ্ট। সেই মানবাধিকার হরণের ধারা আজো চলছে। ডাণ্ডাবেড়ি পরানোর পুলিশি সংস্কৃতিও সেখান থেকেই আসছে।
যে মানুষটি মায়ের জানাজা পড়তে প্যারোল পেয়ে কারাগারের বাইরে এসেছিল, তিনি পালিয়ে যাবেন, এই পোক্ত ধারণা ও বিশ্বাস থেকেই কারাগারের পুলিশ তার পায়ে ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে বাইরে এনেছিল। তিনি ওই ডাণ্ডাবেড়ি নিয়েই মায়ের জানাজা পড়েছেন। এই সচিত্র খবর পড়ে ও দেখে আহত হয়েছেন সাধারণ মানুষ। মানবাধিকার নিয়ে যারা কাজ করেন, তারা কেবল আহতই হননি, তারা এর বিরোধিতা করে প্রতিবাদী সভা ও মিছিলের আয়োজন করেছেন। কারণ তাদের কাজের মধ্যে মানবাধিকার রক্ষার বিষয়টি পড়ে। সরকারের ন্যায়বোধের মধ্যে সংবিধানপ্রদত্ত অধিকার রক্ষা ও ন্যায় কায়েমের যে শপথ সরকার করেছে, তা যে লঙ্ঘিত হচ্ছে নিয়তই, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকগুলোর মনে কি একবারও উঁকি দেয়নি এই অন্যায় ও অবৈধ কাজ? অসংখ্য পুলিশি নির্যাতনের খবর ও ছবি পত্রিকার পাতায় মুদ্রিত হয়েছে। অনেক ফুটেজ আছে ইলেকট্রনিকস মিডিয়ার কাছে। আছে ইউটিউবের বিভিন্ন ইভেন্টে। কিন্তু রাজনৈতিক দল যখন ক্ষমতার আসনে বসেন, তখন তারা সেই পুলিশের ডাণ্ডা বাড়ির ব্যথার কথা ভুলে যান। কারণ তারা মনে করেন, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্যই তারা মার খেয়েছেন পুলিশের হাতে। সেই পুলিশ আজ তাদেরই স্বজন। আজ তারা তাদের রাজনীতিরই রাজনৈতিক শক্তি। প্রজাতন্ত্রের আইন প্রয়োগ ও শৃঙ্খলা রক্ষার নিরাপত্তা কায়েমের অঙ্গীকারবদ্ধ বেতনভুক বাহিনী তারা। জননিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব তাদের। জনগণের টাকায় লালিত-পালিত ও জনগণের অর্থে কেনা অস্ত্র বহন ও ব্যবহার করছে পুলিশ। আজকাল দেখি পুলিশের উচ্চপদের কর্মকর্তারা সরকারের রাজনৈতিক কর্মীর মতো বক্তৃতা দেন। তারা ভুলে যান যে কেবল সরকারের টাকায় তারা পালিত নন, জনগণের টাকায়ই তাদের বেতনভাতা হয়। এর কারণ, অন্যায় সইতে সইতে আমরা ভুলে গেছি, আদতেই কোথাও সাংবিধানিক ন্যায় আছে কি নেই।
আমাদের সংবিধান বহুবারই কাটাছেঁড়া হয়েছে, কিন্তু মৌলিক অধিকার হরণের বিষয়গুলো কখনোই সংস্কার হয়নি। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে সাংসদদের অধিকার হরণমূলক ধারাগুলো কখনোই সরকারি তরফ থেকে সংস্কার করা হয়নি। ওই ধারাটি যে মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করেছে, যা সংবিধানের মৌলিকত্বকেই সাংঘর্ষিক করে রেখেছে, তা সংস্কার করার কথা কোনো রাজনৈতিক দলই মনে করে না। কারণ তাতে তাদের রাজনীতির মনস্তাত্ত্বিক ধারা ব্যাহত হবে। তার মানে ব্রিটিশরা যে নিবর্তনমূলত রাজনৈতিক লিগ্যাসি রেখে গেছে, সেই সুড়ঙ্গেই ঢুকেছে আমাদের রাজনীতি, আমাদের রাজনৈতিক সরকারের প্রশাসন। এ কারণেই আমরা পুলিশের অসাংবিধানিক কাজকে বাহবা দিই। প্রমোট করি এবং ব্যক্তিগত স্তরের সেসব পুলিশকে প্রমোশন দিই। রাজনৈতিক সরকারের এই কাজ কেবল অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়া নয়, অপরাধীকে আরো সুযোগ ও সুবিধা করে দেয়া। তার মানে অন্যায়কে যারা সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়, তারাও অপরাধী, তারা সংবিধানকথিত ন্যায় প্রতিষ্ঠার বিপরীতে অপরাধী কর্মের দাতা হিসেবে অপরাধী।
সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনায় মৌলিক যে চারটি মূলনীতি রয়েছে, যা মূলত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্তম্ভ। জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতা- এগুলো রাষ্ট্রের দর্পণস্বরূপ। এই দর্পণের কয়টি বাস্তবে রাষ্ট্রকাঠামোয় প্রতিষ্ঠিত? জাতীয়তাবাদের ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার ও দল বাঙালি চেতনায় উজ্জীবিত। তারা বাঙালি বলে গর্বিত। কিন্তু অন্যান্য দলের চিন্তাভাবনায় জাতীয়তাবাদে বাঙালির চেয়ে বাংলাদেশি চেতনা ধারণ ও বিশ্বাস করে। তারা বলেন, দেশের টেরিটোরিয়াল বাউন্ডারি বা সীমান্ত অনুযায়ী জাতীয়তা হবে বাংলাদেশি। সরকারও জাতীয়তায় লিখছেন বাংলাদেশি। তাহলে সংঘর্ষের সূচনা তো ওইখান থেকেই। রাষ্ট্রে সমাজতন্ত্রের লেশমাত্র নেই। কয়েকটি রাজনৈতিক দল ওই সমাজতন্ত্র ধারণা বহন করেন রাজনৈতিক বিশ্বাসে। আর সবশেষ হচ্ছে ধর্মনিরক্ষেতা। যার যার ধর্ম চর্চার অধিকার। দেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ আইনে। সংখ্যায় যারা কম এবং সংখ্যায় যারা বেশি তারা উভয়েই সমান অধিকারী। সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠায়, মানুষকে মানুষ হিসেবে চেনা ও জানার মধ্যেই তা নিহিত। কেউ হিন্দু, কেউ মুসলমান, কেউ বৌদ্ধ বা খ্রিস্টান নয়, সবাই মানুষ। সবাই এই স্বাধীন দেশের নাগরিক। এই চিন্তাই ধর্মনিরপেক্ষতার নিহিত। তবে যার যার ধর্ম সে পালন করবে, এতে কোনো বাধা নেই। আরো একটি দতব্য নিয়ে ভাবতে হবে- তবে সংখ্যালঘুদের ওপর সংখ্যাগুরুদের অন্যায় অত্যাচার সামাজিকভাবে ও রাজনৈতিকভাবেও নিয়তই হচ্ছে। এতদবিষয়ক একটি রিপোর্ট পড়া যাক।
দেশের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক উল্লেখ করে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) নির্বাহী পরিচালক নুর খান। তিনি বলেন, আমাদের মানবাধিকার পরিস্থিতি অনেকটাই মাকাল ফলের মতো। যেমন ধরুন, লেপে পেঁচিয়ে মানুষকে পেটানো হলে তার ভেতর রক্তক্ষরণ হবে, কিন্তু বাইরে থেকে কিছু বোঝা যাবে না। ২০২২ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরতে অতিসম্প্রতি রাজধানীর লালমাটিয়া আসকের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি। আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরে সারাদেশে স্থানীয় নির্বাচন ও রাজনৈতিক কারণে ৪৭৯টি সংঘাত ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৭০ জন। আহত হন ৬ হাজার ৯১৪ জন। (সমকাল ১ জানুয়ারি ২৩)
এই রিপোর্টের ভেতরে ঢুকলে জানা যায়, মানুষ হত্যা, গুম-খুন ও মানবাধিকার হরণের কত ঘটনা ঘটেছে ২০২২ সালে। গোটা রিপোর্টটি তুলে দিতে পারলে পাঠক বুঝতে পারতেন দেশের পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ ছিল। এ বছর ২০২৩ সাল কেমন যাবে? এর উত্তর জানতে হলে গত বছরের অভিজ্ঞতারই প্রতিফলন বা পুনরাবৃত্তি দেখতে পাব আমরা। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) প্রতিবেদনের গোটাটাই মানবাধিকার হরণের তথ্যে ভরা। এগুলো নিয়ে সরকার ভাবিত, কিন্তু কোনোভাবেই এগুলোর সমাধান করতে পারছে না। এগুলোর সমাধান করতে হলে রাজনীতিকদের মন-মানসিকতায় পরিবর্তন জরুরি। পুরনো ধারার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি আর চর্চার মাধ্যমে এই রকম পরিস্থিতি থেকে মানবাধিকার বাস্তবায়ন করতে পারবে না সরকার। বিচার করতে হবে নিজেদের রাজনৈতিক ভুল ও বিরোধীদের ওপর তাদের পুলিশি নির্যাতনসহ অপরাপর অপকর্মগুলো আইনের আশ্রয়ে আনতে হবে। সেই সঙ্গে বিরোধী রাজনীতিকদের ভুলকে অস্ত্রের মাধ্যমে বা পুলিশের মাধ্যমে সমাধানে যাওয়ার যে মনন, তাকে ধুয়ে-মুছে ফেলতে হবে। কেননা, মানুষ হিসেবে দেখতে হবে তাদের। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শত্রæ জ্ঞান করা অপরাধেরই শামিল। নিজেদের রাজনীতিকে বাগাড়ম্বর করার পরিবর্তে জনকল্যাণমুখী করতে হবে। বাংলাদেশ সীমান্তে হত্যার বিরুদ্ধে সরকারকে কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে ভারতের সীমান্তরক্ষীরা আর কোনো বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা না করে। ভারতকে বলতে হবে সীমান্তে যেন আর কোনো বাংলাদেশিকে হত্যা করা না হয়। যদি সেটা অব্যাহত থাকে, তাহলে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে যেতে হবে বাংলাদেশকে।
অন্যান্য মানবাধিকার হরণের ব্যাপারে রাষ্ট্রকাঠামোয় বা প্রশাসনে গণতান্ত্রিক ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা গেলে ধারণা করা যায় এবং রাজনৈতিক দলে গণতান্ত্রিক ন্যায়নীতি অনুসৃত হলে অপরাধ ও মানবাধিকার হরণ কমে আসবে। আইনের কঠোর প্রয়োগ আর বিচার বিভাগকে দলীয় চিন্তার বাইরে আনতে হবে। এছাড়া দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কোনো দিনই প্রতিষ্ঠিত হবে না। সাংবাদিকতা ও লেখক সাংবাদিকদের লেখার অবাধ স্বাধীনতাই পারবে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কার্যকর অবদান রাখতে। আমরা কি চাই না সাংবিধানিক অধিকারগুলো কায়েম হোক সর্বস্তরে, সমানভাবে সমাজ ও রাজনীতির রন্ধ্রে রন্ধ্রে?

ড. মাহবুব হাসান : সাংবাদিক ও কলাম লেখক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়