চট্টগ্রাম অফিস : ভিডিও প্ল্যাটফর্ম টিকটকে আট মাস আগে সুনামগঞ্জের রুয়েল আহমেদের সঙ্গে পরিচয় হয় চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির অষ্টম শ্রেণিপড়–য়া এক স্কুলছাত্রীর। এরপর থেকেই ওই স্কুলছাত্রীকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করতেন রুয়েল। কিন্তু পাত্তা না পেয়ে গত তিন মাস আগে সুনামগঞ্জ থেকে চট্টগ্রামে চলে আসেন তিনি। এসে একটি গার্মেন্টসে চাকরি শুরু করে। সেখানে থেকেই ওই স্কুলছাত্রীকে টার্গেট করে সুযোগ খুঁজতে থাকেন রুয়েল। সুযোগ বুঝে গত ৪ জানুয়ারি স্কুলে যাওয়ার পথে রুয়েল তার দুই সহযোগীসহ স্কুলছাত্রীকে কৌশলে অপহরণ করেন। অপহরণের পাঁচ দিন পর নগরের পতেঙ্গা এলাকা থেকে অপহৃত স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করেছে র‌্যাব-৭। এ ঘটনায় জড়িত রুয়েলসহ তার দুই সহযোগীকেও আটক করা হয়। তারা টিকটক করতেন বলে জানিয়েছে র‌্যাব।
গত রবিবার বেলা দুইটার দিকে নগরের পতেঙ্গা থানার পূর্ব কাঠগড় এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে নিখোঁজ স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় গ্রেপ্তার করা হয় তিন টিকটকারকে। তারা হলেন- সুনামগঞ্জের পাইকপাড়ার রুয়েল আহমেদ (২১), নেত্রকোনার মদন থানার মো. অনিক (২০) ও সিলেটের বিশ্বনাথ থানার ইমন মিয়া (১৮)। গ্রেপ্তার তিনজনই পতেঙ্গা পূর্ব কাটগড়েও ওই বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
র‌্যাব জানায়, অপহৃত ভুক্তভোগীর বয়স ১২ বছর। চট্টগ্রামের ভূজপুর থানাধীন একটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে সে। প্রায় ৮ মাস আগে আসামি রুয়েল আহমেদের সঙ্গে টিকটকের মাধ্যমে ভুক্তভোগীর পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে রুয়েল আহমেদ বিভিন্ন সময় ভুক্তভোগীকে মোবাইলের মাধ্যমে উত্ত্যক্ত করতেন এবং প্রেমের প্রস্তাব দিতেন। গত ৪ জানুয়ারি সকালে ভুক্তভোগী স্কুলে যাওয়ার পথে ভূজপুর থানাধীন হেঁয়াকো এলাকা হতে আসামি রুয়েল আহমেদ তার অপর দুজন সহযোগীসহ ভুক্তভোগীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে, ফুঁসলিয়ে জোরপূর্বক অপহরণ করে সিএনজি গাড়িযোগে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানাধীন পূর্ব কাঠঘর এলাকায় অনিকের ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী স্কুল থেকে সময়মতো বাড়ি ফিরে না আসায় ভুক্তভোগীর মা-বাবা তাদের আত্মীয়-স্বজনসহ আশপাশের প্রতিবেশীর বাসায় খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। কোথাও না পেয়ে ভূজপুর থানাধীন দাঁতমারা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে একটি জিডি করেন এবং বিষয়টি র‌্যাব-৭ অবহিত করেন।
র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার বলেন, ভুক্তভোগীকে উদ্ধার এবং অপহরণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আটক করতে আমরা গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখি। তারা টিকটক করতেন। রবিবার র‌্যাব গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পতেঙ্গা থানাধীন পূর্ব কাঠঘর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে। এ সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার কর হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা অপহরণের সঙ্গে জড়িত থাকার সত্যতা স্বীকার করে। মেয়েটির পরিবার সোমবার ভূজপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।