প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য চাকরি মেলা

আগের সংবাদ

গুচ্ছের ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হয়নি : অনিশ্চয়তায় ২১ হাজার শিক্ষার্থী

পরের সংবাদ

হোয়াইটওয়াশ এড়াল দক্ষিণ আফ্রিকা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : সিডনি টেস্টের পঞ্চম দিনে গতকাল রোমাঞ্চের অপেক্ষায় ছিল ক্রিকেটপ্রেমীরা। তবে শেষ দিনে উত্তেজনা ছড়িয়ে ড্র হলো অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার তৃতীয় টেস্ট ম্যাচ। যার ফলে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল এখনো নিশ্চিত হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। পাশাপাশি স্বাগতিকদের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ এড়াতে সক্ষম হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষ দিন ছিল আকাশ একদম পরিষ্কার। ৬ উইকেটে ১৪৯ রানে খেলা শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। সিমন হার্মার ৬ ও মার্কো জানসেন ১০ রানে অপরাজিত ছিলেন। জানসেন (১১) আর এক রান যোগ করে ট্র্যাভিস হেডের কাছে উইকেট হারান।
এরপর কেশব মহারাজকে নিয়ে হার্মার সময় পার করে দেন। তাদের জুটিতে দলীয় স্কোর আড়াইশ ছাড়ায়। ৮১ বলে ৫৩ রান করে থামেন মহারাজ, জুটিটা ছিল ৮৫ রানের। লাঞ্চের পর ধস নামে প্রোটিয়াদের ব্যাটিংয়ে। তিন রানের ব্যবধানে শেষ তিন উইকেট হারায় তারা। হার্মার (৪৭) তিন রানের জন্য হাফসেঞ্চুরি পাননি। কাগিসো রাবাদাকে (৩) ফিরিয়ে ২৫৫ রানে অলআউট করেন নাথান লিয়ন।
সর্বোচ্চ চার উইকেট নেন অস্ট্রেলিয়ার পেসার জশ হ্যাজেলউড। তিনটি পান প্যাট কামিন্স। অস্ট্রেলিয়ার ৪৭৫ রানের জবাবে ফলো অনে দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নামে দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের লড়াই ছিল টিকে থাকার। প্রায় দেড় সেশনে ১০ উইকেট নেয়ার কঠিন মিশন ছিল অজিদের সামনে। পারেনি ২টি উইকেটের বেশি নিতে।
যদিও ডিন এলগার (১০) দ্বিতীয় ইনিংসে হতাশ করেন। হেনরিখ ক্লাসেন ও সারেল আরউই ক্রিজ কামড়ে পড়ে থাকেন। হ্যাজেলউড ৩৫ রানে ফেরান ক্লাসেনকে। বাকি সময় আরউই ও টেম্বা বাভুমা অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেন। ৪২ রান আসে আরউইর ব্যাটে, ১৭ রান করেন বাভুমা। ২ উইকেটে ১০৬ রান যোগ হয় প্রোটিয়াদের স্কোরবোর্ডে। ১৯৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হয়েছেন স্বাগতিক দলের ব্যাটসম্যান উসমান খাজা। ২১৩ রান করে সিরিজের সেরা খেলোয়াড় তার সতীর্থ ডেভিড ওয়ার্নার।
ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের চেয়ে দলের স্বার্থই বড়। ক্রিকেটে এই কথাটা বেশ প্রচলিত। এ কারণেই তো কোনো ব্যাটসম্যান বড় ইনিংস খেলার পরও আরো ভালো স্ট্রাইক রেটে খেলা যেত কিনা, এই আলোচনা চলে।
আবার দলের প্রয়োজনেই আগ্রাসী না হয়ে ক্রিজের একপাশ ধরে রেখে ব্যাট করা যেত কিনা, এই আলোচনাটা কিন্তু সবসময়ই প্রাসঙ্গিক থাকে। আর অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল তো এই নীতিবাক্য মেনে চলার ক্ষেত্রে এক ধাপ এগিয়ে।
সবচেয়ে বড় উদাহরণ হতে পারে সিডনি টেস্টে উসমান খাজাকে ১৯৫ রানে অপরাজিত রেখে প্যাট কামিন্সের ইনিংস ঘোষণা। দলের স্বার্থে যে ওপেনার তার ক্যারিয়ারের প্রথম দ্বিশতককে জলাঞ্জলি দিয়েছেন, সেই খাজাও কিন্তু দিনশেষে বলেছেন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের চিরাচরিত সেই কথা দল সবকিছুর আগে।
সিডনি টেস্টে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতার পর খাজা কথা বলেছেন কামিন্সের ইনিংস ঘোষণা নিয়ে। খাজা নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে ১৯০ রান ছুঁয়েও দ্বিশতক করতে পারেননি।
খাজার আগে ১৯০ রান ছোঁয়ার পর দ্বিশতকের আগেই ইনিংস ঘোষণার নজির আছে টেস্ট ইতিহাসে মাত্র দুটি। মেয়ের গলায় ম্যাচসেরার মেডেল পরিয়ে দিয়ে ৩৬ বছর বয়সি ওপেনার বলেছেন, ‘নামের পাশে দ্বিশতক থাকলে ভালো লাগত। আমরা মাঠে নামি এসব অর্জনের জন্যই। কিন্তু দিনশেষে তো জয়টাই আসল। ছোট বড় যারাই এই ম্যাচটা দেখেছে, কিংবা অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটটা যারা দেখে আসছে, তারা জানে অস্ট্রেলিয়ার খেলায় দল সবকিছুর আগে। আর দলগত খেলাতে এটাই গুরুত্বপূর্ণ।’
এর আগে সিডনি টেস্টে বৃষ্টির বাগড়া এবং আলোক স্বল্পতার কারণে অনেক ওভার কম খেলা হয়। বৃষ্টির কারণে তৃতীয় দিনে একটি বলও মাঠে গড়ায়নি। চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনের খেলাও বন্ধ ছিল। খাজার ৫ রানের আক্ষেপ রেখে ইনিংস ঘোষণা করেন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। খাজা অপরাজিত ছিলেন ১৯৫ রানে। অস্ট্রেলিয়া ইনিংস ঘোষণা করেছিল ৪ উইকেটে ৪৭৫ রানে।
দ্বিতীয় ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকাকে যখন মাত্র ২৫৫ রানেই গুঁড়িয়ে দেয় অজি বোলাররা, তখন অনেকেই ভেবেছিল ম্যাচে ফল আসতে পারে। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে আর ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েনি প্রোটিয়ারা। যার ফলে ম্যাচটি ড্র হয়।
কিন্তু তৃতীয় টেস্ট ম্যাচটি ড্র হলেও তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজটি অস্ট্রেলিয়া জিতেছে ২-০ ব্যবধানে। ব্রিজবেনে প্রথম টেস্ট ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া জয় পেয়েছিল ৬ উইকেটে। আর মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটি স্বাগতিকরা জিতেছিল ইনিংস ও ১৮২ রানে। আগামী মাসে ভারতের মাটিতে ৪ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে যাবে অস্ট্রেলিয়া।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়