প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য চাকরি মেলা

আগের সংবাদ

গুচ্ছের ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হয়নি : অনিশ্চয়তায় ২১ হাজার শিক্ষার্থী

পরের সংবাদ

গত বছর মৃত্যু ৭,৭১৩ : সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সড়কে দুর্ঘটনা, প্রাণহানি বেড়েই চলেছে। সড়কে প্রাণহানির খবর প্রতিদিন গণমাধ্যমে আসছে। গত শনিবার রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালে দেশে ৬ হাজার ৮২৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৭১৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১২ হাজার ৬১৫ জন। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে শিশু ১ হাজার ১৪৩ জন এবং শিক্ষার্থী ১ হাজার ২৩৭ জন। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে মোটরসাইকেলে। দুই চাকার এই বাহনে ২ হাজার ৯৭৩টি দুর্ঘটনায় ৩ হাজার ৯১ জন নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ৪০ দশমিক ০৭ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ। দুর্ঘটনার এই পরিসংখ্যান খুবই উদ্বেগজনক। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা দিন দিন বাড়ছেই। সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (এআরআই) গবেষণায় দেখা গেছে, ৫৩ শতাংশ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী যানবাহনের বেপরোয়া গতি। কিন্তু গতি নিয়ন্ত্রণ, মহাসড়কে ছোট ও ধীরগতির যানবাহন বন্ধ ও বেপরোয়া যানবাহন চলাচল বন্ধে তেমন উদ্যোগ নেই। দেশব্যাপী অন্তত ৫ লাখ ফিটনেসবিহীন বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, হিউম্যান হলার অবাধে চলাচল করছে। নিবন্ধনবিহীন কয়েক লাখ অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল চলছে সড়ক-মহাসড়কে। এসব যানবাহন সড়কে দুর্ঘটনার প্রধান উৎস। দুর্ঘটনায় দায়ীদের শাস্তির নজিরও তেমন নেই। যার ফলে চালকরা ইচ্ছামতো গাড়ি চালান। হাই রিস্ক নিয়ে ওভারটেক করেন। এছাড়া চালকদের প্রশিক্ষণের অভাব রয়েছে, যা সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। ফুটপাতের বেহাল দশার কারণে মানুষ বাধ্য হয়ে মূল রাস্তায় হাঁটছেন এবং দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে হেলমেট ব্যবহারে অসচেতনতায় ছোটখাটো দুর্ঘটনায়ও প্রাণহানি ঘটছে। মোবাইল ফোন কানে রেখে গাড়ি চালানো দুর্ঘটনার আরেকটি কারণ। যদিও এ কাজ থেকে বিরত রাখতে আইন আছে। কিন্তু সে আইনের ব্যবহার নেই, আমাদের সচেতনতাও নেই। এসব কারণে দুর্ঘটনা ক্রমবর্ধমান। প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর অনুমোদন দিয়েছেন। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য যে, পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সংসদে সড়ক পরিবহন আইন পাস হলেও এখনো তা পুরোপুরি কার্যকর করা যায়নি। দীর্ঘ এ সময়ে ঢাকা মহানগরীতে ট্রাফিক পুলিশ সীমিত আকারে আইনের প্রয়োগ করলেও সারাদেশে অনেকটা স্থবির অবস্থা রয়েছে। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সমাধানের অসাধ্য বিষয় নয়। এজন্য দরকার ইতিবাচক চিন্তা ও সমন্বিত পদক্ষেপ। বিশেষ করে মোটরসাইকেলের বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশের কঠোর নজরদারি জরুরি। মোট দুর্ঘটনার প্রায় অর্ধেকই যখন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা তখন এর রাশ টেনে ধরতেই হবে। ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারী যে-ই হোক না কেন তার জরিমানা ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পরিবহন মালিক, শ্রমিকদের পাশাপাশি যাত্রীদেরও সজাগ থাকা দরকার। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে কেবল মাঝে মাঝে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা ও ট্রাফিক সপ্তাহ পালন যথেষ্ট নয়। দুর্ঘটনা রোধে কর্তৃপক্ষকে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। যানবাহন-সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বশীলতাও কাম্য। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা এবং আইন পালনে জনসাধারণের সদিচ্ছা ও সচেতনতার বিকল্প নেই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়