কুমিল্লাকে হারের স্বাদ দিল রংপুর

আগের সংবাদ

বাংলাদেশ-ব্রাজিল বাণিজ্য বাড়ানোয় জোর প্রধানমন্ত্রীর

পরের সংবাদ

যাদুকাটা নদীর সেতু : ৩ বছর পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি নির্মাণ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা : পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনাময় ও প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের যাদুকাটা নদীর উপর সিলেট বিভাগের দীর্ঘতম সেতুর নির্মাণ চলছে ধীরগতিতে। সেতু নির্মাণের নির্ধারিত সময়ের তিন বছর পেরিয়ে গেছে গত বছরের ডিসেম্বরে। এরপর বর্ধিত সময়ও শেষ হয়েছে গত জুন মাসে। কিন্তু সেতু নির্মাণে এখনো বৃহৎ অংশের কাজ রয়েছে বাকি। এ নিয়ে তাহিরপুর উপজেলাবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা।
তারা বলছেন, সুনামগঞ্জ জেলা সদরের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বৃহৎ শুল্ক স্টেশন ও পর্যটনসমৃদ্ধ এলাকার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে এ সেতু তাদের কাছে স্বপ্নের সেতু। এ সেতু নির্মাণ হলে হাওড় অধ্যুষিত ভাটির জনপদ তাহিরপুর উপজেলার অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র বাদাঘাট বাজার ও পর্যটন এলাকা বারেকটিলা, নিলাদ্রীলেক, লাকমাছড়া ও টাঙ্গুয়ার হাওড় এলাকাসহ উপজেলার তিন শুল্ক স্টেশন বড়ছড়া, চারাগাঁও, বীরেন্দ্রনগর (বাগলী) ও ভাটির জনপদের ব্যবসা বাণিজ্যসহ সবকিছুতে অকল্পনীয় পরিবর্তন ঘটবে। স্বপ্নের এ সেতু নির্মাণে ধীরগতির কারণে তারা পড়েছেন হতাশায়। তবে বন্যাসহ নানা কারণে নির্মাণ ধীরগতিতে চলছে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পর্যটন এলাকা খ্যাত তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওড়, শহীদ সিরাজলেক (নিলাদ্রীলেক), শিমুল বাগানসহ পর্যটনের আকর্ষণীয় স্থানগুলো এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বৃহৎ শুল্কবন্দর বড়ছড়া, চারাগাঁও এবং বীরেন্দ্রনগর (বাগলী) কে সড়কপথে যুক্ত করার পরিকল্পনা নেয় সরকার। এসব এলাকার সঙ্গে উন্নত সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে যাদুকাটা সেতুর নির্মাণ শুরু হয়েছিল। সেতুটি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের যাদুকাটা নদীর ওপর নির্মাণ হচ্ছে।
জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে সেতুর কাজ শুরু করে। শুরুর দিকে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। গত বছরের ডিসেম্বরে নির্মাণ কাজের মেয়াদ শেষ হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন কাজের মেয়াদ আরো ছ’মাস বাড়ায়। সরজমিন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, এ পর্যন্ত শুধু সেতুর পিলারগুলো দাঁড়িয়েছে। বসানো হয়েছে কয়েকটি গার্ডার। সেতুর উপরের সিংহভাগ কাজ এখনো রয়েছে বাকি। গত জুনের ভয়াবহ বন্যার পর সেতুর কাজ অনেকটা থমকে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আবুল হোসেন খান বলেন, শুরু থেকেই সেতুর নির্মাণ চলছে ধীরগতিতে। বন্যার পর আর কাজই হচ্ছে না। বাদাঘাট ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম উদ্দিন কাজে ধীরগতি আছে বলে জানিয়ে বলেন, প্রাকৃতিক কারণেও সেতুর কাজ কিছুটা পিছিয়েছে। এলাকার মানুষ দ্রুত সেতুর কাজ শেষ করার দাবি জানাচ্ছেন। এ সেতু হাওড় ও সীমান্তবাসীর স্বপ্নের সেতু এবং হাওড়বাসীর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সফর উদ্দিন ভোরের কাগজকে বলেন, সেতুর নির্মাণকাজ শেষে বিশ্বম্ভরপুরের কারেন্টের বাজার থেকে সেতু পর্যন্ত সড়ক, সেতুর পশ্চিমপাড়ে সুন্দরপাহাড়ি এলাকা হয়ে সীমান্ত সড়কের সঙ্গে সংযোগ সড়ক এবং সেতুর অ্যাপ্রোচ থেকে বাদাঘাট পর্যন্ত সড়কের কাজ হবে। এতে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক জোন হবে বাদাঘাটসহ হাওড় ও সীমান্ত অঞ্চল।
যাদুকাটা সেতুর নির্মাণকাজ দেখভালকারী তমা কনস্ট্রাকশনের প্রকৌশলী নাছির উদ্দিন ভোরের কাগজকে বলেন, বন্যায় নদীর মাঝের স্ট্রেজিং (গার্ডার করার মঞ্চ) ওয়াশআউট হয়েছিল। এ সময় প্রয়োজনীয় অন্যান্য উপকরণও নষ্ট হয়েছে। এ কারণে গত কয়েক মাসে কাজ কম হচ্ছে। তবে আগামী সপ্তাহ থেকে পুরোদমে কাজ শুরু হবে বলেও জানান তিনি। জানতে চাইলে এলজিইডি সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান ভোরের কাগজকে বলেন, কাজটি দ্রুত সময়ের মধ্যেই আদায়ের চেষ্টা হচ্ছে। বন্যায় স্ট্রেজিং ওয়াশআউট হওয়ায় সময় নষ্ট হয়েছে। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে আবারো নির্মাণকাজ শুরু হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়