৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে সংসদ অধিবেশন

আগের সংবাদ

চ্যালেঞ্জ অনেক, প্রত্যয়ী আ.লীগ : অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা > সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরা ও অপপ্রচারের জবাব দেয়া

পরের সংবাদ

জাতীয় হিন্দু মহাজোটের প্রতিবেদন > ২০২২ সালে দেশত্যাগে বাধ্য হয় ৪৪৫ হিন্দু পরিবার : আরো প্রায় ২ লাখ পরিবার নিরাপত্তাহীনতায়

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৭, ২০২৩ , ১:২৯ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ২০২২ সালে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের ১৫৪ জন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও হিন্দু সম্পদ্রায়সহ দেশের সংখ্যালঘুদের ৩৯ জন ধর্ষণের শিকার হয়। দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় ২৭ জন। ধর্ষণের পর ১৪ জনকে হত্যা করা হয়েছে। দেশত্যাগে বাধ্য করা হয় ৪৪৫টি হিন্দু পরিবারকে। দেশত্যাগে হুমকির মুখে রয়েছে ১৫ হাজার ১১৫টি পরিবার। নিরাপত্তাহীনতা আছে আরো ১ লাখ ৯৫ হাজার ৯৯১টি পরিবার। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায় বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট। সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন সংগঠনের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক।
এতে বলা হয়, গত এক বছরে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের ৪২৪ জনকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। ৬২ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ৮৪৯ জনকে হত্যার হুমকি দেয়া হয় এবং জখম ও আহত হয়েছেন ৩৬০ জন। সংঘবদ্ধ হামলা হয় ৯৫৩টি। অপহরণ হয়েছে ১২৭ জন এবং অপহরণের চেষ্টা করা হয় ২৭ জনকে।
৪৪৫টি হিন্দু পরিবারকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে উল্লেখ করে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮৯ হাজার ৯৯০ একর জমি দখল করা হয়েছে। বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ হয়েছে ৫৭২টি পরিবার, উচ্ছেদের চেষ্টা হয়েছে ৩ হাজার ৬৯৪টি পরিবার, উচ্ছেদের হুমকি পেয়েছে ৩৫ হাজার ৮০০ পরিবার। ¤্রাে, তঞ্চঙ্গ্যা, সাঁওতাল ও ত্রিপুরা পাহাড়ি আদিবাসীদের ৬ হাজার ৫৫০ একর এবং সমতলের হিন্দুদের ২ হাজার ৪৪০ একর ভূমি দখল করা হয়েছে। দেশত্যাগের হুমকির শিকার ১৫ হাজার ১১৫টি হিন্দু পরিবার। ৫১টি মন্দিরের ভূমি দখল করা হয়েছে। মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ১২৮টি, প্রতিমা ভাঙচুর ৪৮১টি, প্রতিমা চুরি ৭২টি। ২৭ কোটি ৪৬ লাখ ৩৩ হাজার টাকা চাঁদাবাজি করা হয়েছে। মোট ক্ষতি হয়েছে ২২০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।
২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য ও সারাদেশে থাকা সংগঠনের কর্মীদের দেয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে জানান গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক। তিনি বলেন, ৫৫ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। ১৫২ জনকে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে। ধর্মান্তরকরণের চেষ্টা করা হয়েছে ৪০ জনকে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান অপবিত্রকরণের ঘটনা ঘটেছে ১৭৯টি এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনে বাধা দেয়ার ঘটনা ১২৯টি। ধর্মীয়ভাবে নিষিদ্ধ গরুর মাংস খাইয়ে ৩৩৩ জনকে অপবিত্রকরণসহ একটি পরিবারের ওপর গোমাংস নিক্ষেপ করা হয়েছে।
গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের অবক্ষয়, ভিন্নমত দমন ও সহনশীলতা চর্চার অভাবে দেশে অসহিষ্ণু ও বিদ্বেষপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হচ্ছে বলে মনে করে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট। সংগঠনটির দাবি, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের ঘটনা ঘটেছে ১২৭টি। মিথ্যা মামলায় আসামি গ্রেপ্তার, বরখাস্ত, চাকরিচ্যুত করা এবং জেল-জরিমানার শিকার হয়েছেন ৭৯১ জন। ১ হাজার ৬৫৭টি পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে কিন্তু দেশের হিন্দু স¤প্রদায় কখনোই স্বাধীনতার স্বাদ লাভ করেনি। তাই সংখ্যালঘুদের উপর সহিংসতা ও নির্যাতন বন্ধে এবং তাদের প্রতিনিধিত্ব সুনিশ্চিত করতে জাতীয় সংসদে ৬০টি সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা, সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা এবং একটি উপরাষ্ট্রপতি ও উপপ্রধানমন্ত্রীর পদ সৃষ্টি করে সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত রাখার দাবি জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়