চট্টগ্রাম অফিস : টার্গেট করা ব্যক্তিকে নারীর প্রলোভন দেখিয়ে ফেলা হয় ফাঁদে। কখনো চোখের ইশারায়, আবার কখনো মোবাইল নিয়ে কথা বলার নাম করে ওই ব্যক্তিকে অসামাজিক মেলামেশার প্রস্তাব দেন সেই নারী। ওই ব্যক্তি প্রলুব্ধ হলে তাকে সিএনজিতে করে নির্জন স্থানে নেয়া হয়। যাওয়ার সময় পথিমধ্যে চক্রের অন্য সদস্যরা সিএনজিতে ওঠেন। এরপর কোনো এক নির্জন স্থানে নিয়ে ভিকটিমকে চক্রের সব সদস্য মিলে মারধর করে চাঁদা দাবি করেন। তাৎক্ষণিকভাবে চাঁদা দিতে না পারলে তাকে আরো মারধর করা হয়। এরপর বিকাশ অথবা নগদের মাধ্যমে আনা হয় চাঁদার টাকা। এভাবেই নারীকে ফাঁদ বানিয়ে চট্টগ্রামে কৌশলে অপহরণ, পরে চাঁদাবাজি করে আসছিল একটি চক্র।
নগরীতে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করে এমন একটি প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, নারীকে ব্যবহার করে প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ লোকজনকে ফাঁসিয়ে জিম্মি করে এই চক্রটি। বুধবার রাতে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- মো. সজিব (২২), মো. সাকিব (২১) ও মো. সুমন (২০)। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে গ্রেপ্তারদের মহানগর হাকিম আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়েছেন।
গত ২৬ ডিসেম্বর নগরীর পাঁচলাইশ থানার হিলভিউ এলাকায় এক ব্যক্তিকে অটোরিকশায় তুলে জিম্মি করে বিকাশের মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকা আদায় করে এই চক্রের সদস্যরা। ৩০ ডিসেম্বর নগরীর মুরাদপুর থেকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর আরেক ব্যক্তিকে অপহরণ করে একই প্রক্রিয়ায় ২০ হাজার টাকা আদায় করে। উভয় ব্যক্তি পাঁচলাইশ থানায় গিয়ে অভিযোগ করলে চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযানে নামে পুলিশ।
পাঁচলাইশ থানার ওসি নাজিম উদ্দীন বলেন, চট্টগ্রাম শহরে দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র জনসাধারণকে জিম্মি করতে নারীদের টোপ হিসেবে ব্যবহার করে প্রথমে অপহরণ, পরে চাঁদা দাবি করে বড় অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল। বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় ভিকটিমদের কেউ আইনগত প্রতিকার চাইত না। তিনি বলেন, বিকাশ নম্বর এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় চক্রের সদস্যদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর গত বুধবার রাতে নগরীর পাঁচলাইশ, বায়েজিদ বোস্তামি ও চাঁন্দগাও এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা আরো কয়েকজনের নাম জানিয়েছে।
এছাড়া চক্রের নারী সদস্যদের গ্রেপ্তারে চলছে অভিযান। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, বিভিন্ন এলাকায় প্রতারক নারীদের নির্জন সড়কে দাঁড় করিয়ে তারা দূরে অটোরিকশা নিয়ে অপেক্ষায় থাকে। ওই নারী বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে টার্গেট করা ব্যক্তিকে অটোরিকশায় নিয়ে তোলে। এরপর চক্রের পুরুষ সদস্যরা তাকে জিম্মি করে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে টাকা আদায় করে।
তাদের বিরুদ্ধে উল্লিখিত ভিকটিমদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।