প্রকাশিত: জানুয়ারি ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৬, ২০২৩ , ১:১২ পূর্বাহ্ণ
নাসির উদ্দিন জর্জ, শ্রীপুর (গাজীপুর) থেকে : গাজীপুরের শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে বিরল প্রাণী নীলগাইয়ের দলে আরো একটি নীলগাই যোগ হয়েছে। এর আগে পার্কটিতে নীলগাইয়ের সংখ্যা ছিল ৫টি। এ নিয়ে পার্কে চারটি পুরুষ নীলগাই ও দুটি মাদি নীলগাইয়ের ঠিকানা হলো। গতকাল বৃহস্পতিবার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) চাঁপাইনবাবগঞ্জে উদ্ধার করা পুরুষ নীলগাইটি সাফারি পার্কে হস্তান্তর করে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম জানান, গত বছরের ২৬ অক্টোবর বিজিবির রহনপুর ব্যাটালিয়ন চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার হাউসনগর গ্রাম থেকে আহতাবস্থায় একটি নীলগাই উদ্ধার করে। এলাকাবাসীর ধাওয়ায় নীলগাইটি ছোটাছুটি করে শারীরিক জখম ও খেতে না পেরে আহত হয়ে পড়ে। বিজিবির ভেটেরিনারি বিভাগ ২ মাসের বেশি সময় নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে তাদের ক্যাম্পে নীলগাইটিকে সুস্থ করে তোলে। পরে বৃহস্পতিবার গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে নীলগাইটি হস্তান্তর করা হয়। এসময় বিজিবির পরিচালক (ভেটেরিনারি) আ ন ম আশরাফুল আলম মণ্ডলসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, আগেই পার্কটিতে পাঁচটি নীলগাই ছিল। উদ্ধারের পর হস্তান্তর করাসহ পার্কটিতে মোট ৬টি নীলগাইয়ের ঠিকানা হলো। এর মধ্যে ৪টি পুরুষ ও ২টি মাদি। হেমন্তকাল থেকে শীতকালের শুরু পর্যন্ত পুরুষ নীলগাই মাদি নীলগাইয়ের সঙ্গে মিলিত হয়। তাদের গর্ভধারণ কাল গড়ে ২৪৩ দিন। এরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে যমজ বাচ্চা এবং ক্ষেত্রবিশেষে একটি থেকে তিনটি বাচ্চাও প্রসব করে থাকে। জন্মের ৪০মিনিটের মধ্যে দাঁড়াতে পারে। তিন বছরে পুরুষ শাবক এবং দুই বছরে মাদি শাবক প্রজননক্ষম হয়ে ওঠে। এদের গড় আয়ুু ২১ বছর।
গাঢ় ধূসর বর্ণ, অনেকটা কালচে রঙের হয়ে থাকে পুরুষ নীলগাই। নীলচে আভা দেখা যায় বলে এদের নীলগাই নামকরণ করা হয়েছে। মাদি নীলগাই এবং শাবকের রং লালচে বাদামি কিন্তু খুরের উপরের লোম সাদা। ঠোঁট, থুতনি, কানের ভেতরের দিক ও লেজের নিচের তলদেশ সাদা। নীলগাই ছোট ছোট পাহাড় আর ঝোপ-জঙ্গলপূর্ণ মাঠে চড়ে বেড়াতে ভালোবাসে। ঘন বন এড়িয়ে চলে। সচরাচর চার থেকে ১০ সদস্যের দল নিয়েই নীলগাই ঘুরে বেড়ায়। দলে কখনো ২০ বা তার বেশি সদস্যও থাকতে পারে।
নীলগাই সকাল-বিকালে খাওয়ার পাট চুকিয়ে দিনের বাকি সময়টা গাছের ছায়ায় বসে কাটায়। পানি ছাড়া এরা দীর্ঘসময় কাটিয়ে দেয়। এমনকি গরমের দিনেও এরা নিয়মিত পানি পান করে না। আত্মরক্ষার প্রধান উপায় দৌড়ে পালানো। দ্রুতগামী ও শক্তিশালী ঘোড়ার পিঠে না চড়ে নীলগাই ধরা প্রায় অসম্ভব। প্রায় ৮০বছর আগেই বাংলাদেশের প্রকৃতি থেকে নীলগাইয়ের সমাপ্তি ঘটেছে। বাংলাদেশের প্রকৃতি নীলগাই শূন্য। এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে দুটি নীল গাই বাচ্চা জন্ম দিয়েছে। আশি বছর পর বাংলাদেশে নীলগাই জন্মদানে সেটা ছিল প্রথম ঘটনা।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।