ইউনেসকোর প্রতিবেদন : দেশে শিক্ষা ব্যয়ের ৭১ ভাগ বহন করে পরিবার

আগের সংবাদ

তীব্র শীতে জবুথবু জনজীবন

পরের সংবাদ

মৌলভীবাজারে চলছে মৃদু শৈতপ্রবাহ : সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শ্রীমঙ্গলে, জনজীবনে স্থবিরতা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারে বইছে মৃদু শৈত্যপ্র্রবাহ। গতকাল বুধবারও দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে শ্রীমঙ্গলে। বুধবার ভোর ৬টার দিকে জেলার শ্রীমঙ্গলে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এতে শীতকালীন সবজি ও চা পাতার ক্ষতি হচ্ছে।
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, কয়েকদিন ধরে শ্রীমঙ্গলের তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছে। আর তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রিতে নেমে আসলেই শুরু হয় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। তিনি জানান, মঙ্গলবার শ্রীমঙ্গলের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবার শ্রীমঙ্গলের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা।
এদিকে ঘনকুয়াশা ও ঠাণ্ডা বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় শীত অনুভূত হচ্ছে বেশি। তবে কনকনে ঠাণ্ডা উপেক্ষা করেই মানুষ নেমেছেন কাজে। এতে জনজীবনে নেমে এসেছে অনেকটা স্থবিরতা। পাশাপাশি গবাদিপশু নিয়েও মানুষ পড়েছে বিপাকে। পশুর গায়ে ছেঁড়া বস্তা ও কাঁথা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে ঘন কুয়াশায় শীতকালীন সবজিরও বেশ ক্ষতি হচ্ছে বলে জানান কৃষকরা।
শ্রীমঙ্গল সবুজবাগ এলাকার অর্জুন মালাকার জানান, ঠাণ্ডায় হাত কেটে পড়ছে। তবুও মাঠে কাজ করতে হচ্ছে। তিনি জানান, দীর্ঘ সময় ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকায়

তাদের চাষকৃত সবজি বড় হচ্ছে না। অনান্য বছরের ন্যায় তিনি এবারো লাল মুলার চাষ করেছেন। অন্যান্য বছর এই সময়ে মুলা অনেক বড় হতো। এবার এখনো মুলা বড় হয়নি। একই অবস্থা অনান্য সবজিতেও।
মৌলভীবাজার জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক সামছুদ্দিন আহমদ জানান, ঘন কুয়াশায় এখন পর্যন্ত বোরো ফসলের বীজতলার ক্ষতি হয়নি। তবে এ অবস্থা চলতে থাকলে চারার বৃদ্ধি কমে গিয়ে বীজতলায় বসে যেতে পারে।
মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. জালাল উদ্দিন মুরশেদ জানান, অন্য সময়ের তুলনায় এখন ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশু। মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে বুধবার ভর্তি রয়েছেন ২২৮ জন রোগী। এর মধ্যে অর্ধশতাধিক রোগী শীতজনিত কারণে ভর্তি হয়েছেন।
এদিকে রাত ৮টার পর থেকেই ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে জনপদ। এতে গাড়ি চলাচলেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। ঢাকা-মৌলভীবাজার রোডের শ্যামলী পরিবহনের চালক মো. স্বপন মিয়া জানান, কুয়াশার কারণে গাড়ি ধীরে চালাতে হচ্ছে। দিনের বেলায়ও জ¦ালাতে হয় লাইট।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল-হবিগঞ্জ সড়কের পাহারাদার মো. আব্দুল্লাহ জানান, ঘন কুয়াশায় এক পাশ থেকে অন্যপাশ দেখা যায় না। তাই তাকে রানিংয়ের ওপরই থাকতে হয়। তিনি জানান, এই শীতে তার শীতবস্ত্র সংকট রয়েছে। এক বছর আগে একটা কম্বল পেয়েছিলেন। কিন্তু তার ঘরে মানুষের সংখ্যা ৫/৬। একটা কম্বল দিয়ে কিছুই হয় না।
গত কয়েকদিন ধরে মৌলভীবাজারের তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত মিলছে না সূর্যের দেখা। সন্ধ্যা রাত থেকে দুপুর ১২/১টা পর্যন্ত কুয়াশার তিব্রতা বেশি থাকছে। ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেলা লাইট জ¦ালিয়ে গাড়ি চালাতে দেখা গেছে।
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক মুজিবুর রহমান জানান, এ অবস্থা আরো কয়েকদিন চলবে। কুয়াশা কেটে গেলে তাপমাত্রা আরো নিচে নামবে। ফলে শীত আরো বেশি অনুভূত হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়