বোটানিক্যাল গার্ডেনে স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় স্বামীর স্বীকারোক্তি

আগের সংবাদ

বিদেশে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা : কী করছেন কূটনীতিকরা

পরের সংবাদ

গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচন : উদ্বেগ উৎকণ্ঠার ভোট আজ > থাকছে সিসি ক্যামেরা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক, ঢাকা এবং শাহ আলম যাদু (ফুলছড়ি-গাইবান্ধা) প্রতিনিধি : ব্যাপক অনিয়মের কারণে মাঝপথে বন্ধ হয়ে যাওয়া জাতীয় সংসদের গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনের পুনঃভোট আজ বুধবার। আজ সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত একটানা ইভিএমে ভোটগ্রহণ চলবে। এ ভোটকে ঘিরে রয়েছে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, শঙ্কা। তবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সুষ্ঠু ভোট করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। গতবারের মতো এবারো এ উপনির্বাচন ইসি সচিবালয় থেকে সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করবেন সিইসিসহ অন্য চার কমিশনার ও ইসির মনিটরিং সেল।
নির্বাচন উপলক্ষে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট, র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পুনঃভোটে প্রতি কেন্দ্রে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৬ থেকে ১৮ জন সদস্য। গতকালই ইভিএমসহ ভোট সামগ্রী কেন্দ্রে কেন্দ্রে চলে গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান বলেন, জাতির সামনে একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দেয়ার প্রচেষ্টা বর্তমান কমিশন চালিয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্রে কেন্দ্রে অনিয়মের কারণে বন্ধ হওয়া গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে এবারো কোনো অনিয়মকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না।
তিনি বলেন, গাইবান্ধা উপনির্বাচন সুষ্ঠু এবং অবাধভাবে করতে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। ইসি কোনো প্রকার অনিয়ম, পক্ষপাতিত্ব বা অস্বচ্ছতার প্রশ্রয় দেয়নি। ভবিষ্যতেও দেবে না। ভোটের প্রচারণা বন্ধ হওয়ার পরও কেউ কেউ প্রচারণার চেষ্টা করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা কিন্তু কঠিন হস্তে দমন করেছি। সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। অনিয়মের পুনরাবৃত্তি হলে তা দেখে পর্যালোচনা করে তারপর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ইসির জনসংযোগ পরিচালক ও যুগ্ম সচিব এস এম আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ থেকে ১৭ জন এবং ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে নিরাপত্তা বাহিনীর ১৭ থেকে ১৮ জন সদস্য নিয়োজিত থাকবে। ভোটকেন্দ্র পাহারায় পুলিশ, অঙ্গীভূত আনসার ও গ্রামপুলিশ ভোটের আগে পরে চার দিনের জন্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়া পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের ছয়টি ভ্রাম্যমাণ ও চারটি স্ট্রাইকিং ফোর্স ভোটের মাঠে থাকবে। চার প্লাটুন বিজিবি ও র‌্যাবের ৯টি টিম আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবে। ৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং দুজন বিচারিক হাকিম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন।
উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচনী কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, ভোটের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ইভিএম থাকবে, আর সিসি ক্যামেরাও থাকবে। পূর্বের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এই নির্বাচনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। সবার সহযোগিতায় আমরা একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারব বলে আশা করছি।
গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচন ঢাকা থেকে পর্যবেক্ষণের জন্য মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবন থেকে এ মনিটরিং সেল পরিচালিত হবে। আইডিইএ-২ এর প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ সায়েমকে প্রধান করে গঠিত সেলের অন্য চার সদস্য হলেন- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, পুলিশ সদর দপ্তর, বিজিবি, র‌্যাব, আনসার ও ভিডিপি এবং আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের প্রতিনিধি।
ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত গাইবান্ধা-৫ আসনে ভোটার মোট ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন। ১৪৫টি কেন্দ্রের ৯৫২টি বুথে ইভিএমে ভোট হবে। এ উপনির্বাচনে মাহমুদ হাসান রিপন (আওয়ামী লীগ-নৌকা), এ এইচ এম গোলাম শহীদ রঞ্জু (জাতীয় পার্টি-লাঙ্গল), এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম (বিকল্প ধারা-কুলা), নাহিদুজ্জামান নিশাদ (স্বতন্ত্র-আপেল) ও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান (স্বতন্ত্র-ট্রাক) প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন।
ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া গত ২৩ জুলাই মারা গেলে তার সংসদীয় আসনটি শূন্য হয়। গত ১২ অক্টোবর গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণের মধ্যে সিসি ক্যামেরায় এক-তৃতীয়াংশ কেন্দ্রে অনিয়মের দৃশ্য দেখে মাঝপথে ঢাকা থেকে নির্বাচন বন্ধের নির্দেশ দেয় ইসি। বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশনের ইতিহাসে অনিয়মের কারণে কোনো সংসদীয় আসনের নির্বাচন পুরোপুরি (সব কেন্দ্র) বন্ধ করার ঘটনা সেটাই প্রথম। এরপর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল অনিয়মে সম্পৃক্তদের চিহ্নিত করতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে পরে রিটার্নিং অফিসার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, প্রিসাইডিং অফিসার, পুলিশের উপপরিদর্শক, নির্বাহী হাকিমসহ শতাধিক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও নির্বাচনী এজেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। তবে কোনো ধরনের অনিয়মে সম্পৃক্ততার প্রমাণ না পাওয়ায় প্রার্থী, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়নি।
গত ৬ ডিসেম্বর গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনের পুনঃভোটের জন্য ৪ জানুয়ারি নতুন তারিখ ঠিক করে ইসি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়