ঢাবিতে পর্দা নামল নন-ফিকশন বইমেলার

আগের সংবাদ

কালো মানিকের জন্য শোকার্ত বিশ্ব

পরের সংবাদ

চক্রের হোতাসহ গ্রেপ্তার ৬ : ভারতে বসে পরিকল্পনা ঢাকায় এসে ডাকাতি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় বোমা ফাটিয়ে স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনায় ল্যাংড়া হাছানসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা। গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলেন- মো. আরিফ, মো. আইনুল হক ওরফে ভোলা, মো. সাইফুল ইসলাম মন্টু, মো. আনসার আলী ও মো. শাহীন। গত বুধবার রাজধানীর রামপুরা থানার হাজীপাড়া বৌ-বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিএমপি গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) মতিঝিল বিভাগের খিলগাঁও জোনাল টিম। এ চক্রের হোতা হাছানের বিরুদ্ধে ডিএমপিসহ দেশের বিভিন্ন থানায় ১৭টি মামলা রয়েছে।
ডিবি বলছে, গত ২০১২ সালে সিলেটে ডাকাতি করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে পা হারিয়ে হাছান জমাদ্দারের নাম হয় ল্যাংড়া হাছান। গুলিবিদ্ধ হলেও থেমে থাকেননি তিনি। ভারতে আশ্রয় নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে যাতায়াত ছিল তার। এ সময় চক্রের সদস্যদের নিয়ে ডাকাতি করে ভাগবাটোয়ারার পর ফিরে যেতেন ভারতে। ল্যাংড়া হাছান দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত। মূলত তিনি ভারতে বসে সহযোগীদের সহায়তায় বিভিন্ন এলাকার স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির পরিকল্পনা করতেন। গত ১০ বছরে ৩০টির বেশি ডাকাতি করেছে ল্যাংড়া হাছানের দল। খিলগাঁও থানার একটি ডাকাতি মামলা ছায়া তদন্ত করতে গিয়ে এ দলের বিষয়ে তথ্য পেয়ে তদন্ত শুরু করে ডিবি।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ল্যাংড়া হাছানসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, ল্যাংড়া হাছান ভারতে বসে সহযোগীদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকার স্বর্ণের দোকান টার্গেট করত। এরপর ডাকাতির আগে তারা সেই দোকানের আশপাশে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে রেকি করে প্রস্তুতি নিতো। সব কিছু ঠিক হলে হাছান ভারত থেকে এসে দলে যোগ দিয়ে ডাকাতি সম্পন্ন করত। প্রথমে বোমা ফাটিয়ে ও গুলি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে ৬-৭ মিনিটের মধ্যে দোকানের স্বর্ণালঙ্কার লুট করে আগে থেকে ঠিক করে রাখা গাড়িতে করে পালিয়ে যেত।
তিনি আরো বলেন, এই চক্রটি ডাকাতির মালামাল কোথায় বিক্রি করে সেই তথ্য আমরা পেয়েছি। আপনারা জানেন পুরান ঢাকার তাঁতিবাজারে কিছু চক্র রয়েছে যারা এই সকল মালামাল কিনে থাকেন। আমরা মালিক সমিতিকে অনুরোধ করবো এই সব অসাধু চক্রকে প্রশ্রয় দেবেন না। তারা এসব মালামাল কেনার কারণেই এই সব দুর্ধর্ষ চক্র ডাকাতি করছে। আমরা অনেকের নাম পেয়েছি। আমরা তাদেরও আইনের আওতায় আনব। ল্যাংড়া হাছান ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে কোনো প্রক্রিয়ায় ভারতে যেত জানতে চাইলে হারুন অর রশীদ বলেন, তার পাসপোর্ট ইমিগ্রেশন থেকে ব্লক করে রাখা। তাই সে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে পালিয়ে যেত। একইভাবে আবার ফিরে আসত। সে ২০০৮ সাল থেকে ডাকাতি করে আসছে। তার আশ্রয়দাতাদের বিষয় খোঁজখবর নেয়া হবে। ভারতে সে কীভাবে নাগরিক হলো সে বিষয়ে আমরা লোক পাঠিয়ে খোঁজ করব। গ্রেপ্তার হওয়া চক্রের সদস্যদের স্বীকারোক্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, চক্রটি হাছানের নেতৃত্বে সারা দেশে ২৫-৩০টি ডাকাতি করেছে। এই ডাকাতির মাধ্যমে হাজার হাজার ভরি স্বর্ণ ছিনিয়ে নিয়েছে। এই চক্রটি স¤প্রতি কেরানীগঞ্জে ডাকাতি করার পরে ফেনীতে ডাকাতি করে। সেখানে ডাকাতির সময়ে একজনকে গুলিও করে তারা। সেই ব্যক্তি পরে মারা গেছেন। খিলগাঁও এলাকায় ডাকাতির ঘটনায় রামপুরা থানায় ডাকাতি ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা করা হয়েছে বলে জানান ডিবি কর্মকর্তা হারুন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়