‘মুগ্ধ নয়নে’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন

আগের সংবাদ

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ : বাংলাদেশে তুরস্ককে আরো বিনিয়োগের আহ্বান

পরের সংবাদ

আগামীর তারকা জাকির হাসান

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কয়েক বছর ধরে টেস্টে টাইগার ওপেনিং জুটির অবস্থা বেশ ভঙ্গুর। শুরুতে কখনো সৌম্য সরকার, লিটন দাস আবার কখনো নাইম শেখকে খেলানো হলেও নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি কেউই। বিশেষ করে দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল সাদা পোশাকে দীর্ঘদিন না থাকায় তার জায়গায় সুবিধা করতে পারছেন না ওপেনাররাও। তবে এবার ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট ও ঢাকা টেস্টে আশার আলো দেখিয়েছেন ওপেনার জাকির হাসান।
নিজের টেস্ট অভিষেকে শতক পূর্ণ করে ইতিহাস গড়ার পাশাপাশি দ্বিতীয় টেস্টেও দেখা পেয়েছেন অর্ধশতক। এর আগে বাংলাদেশের আমিনুল ইসলাম বুলবুল, মোহাম্মদ আশরাফুল ও আবুল হাসান রাজু অভিষেক ম?্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন। কিন্তু ওপেনার হিসেবে জাকিরই প্রথম যিনি অভিষেকে সেঞ্চুরি পেলেন। সেই সঙ্গে অভিষেক ম্যাচে টেস্টে চতুর্থ ইনিংসে শতরান করা প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটারও তিনি। ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে ৫১৩ রানের কঠিন লক্ষ্যে খেলতে নেমে জাকির দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। সাদা পোশাকে ধৈর্যের কঠিন পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি। এক কথায় বলা যায়, চমৎকার খেলে অভিষেকেই ক্রিকেটপ্রেমীদের নজর কেড়েছেন জাকির। ২২৪ বলে ১০০ রানের দারুণ এক ইনিংসই খেলেছেন তিনি। এখানেই জাকিরের কীর্তি শেষ নয়। ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে আরো একটি মাইলফলক স্পর্শ করেছেন টাইগার এই ওপেনার। টেস্টে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে উদ্বোধনী জুটিতে নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে রেকর্ড গড়েছেন জাকির। তাদের দুর্দান্ত ব্যাটিং নৈপুণ্যে ভারতের বিপক্ষে টেস্টে উদ্বোধনী জুটিতে প্রথম শতরানের দেখা পায় বাংলাদেশ। জাকির-শান্ত মিলে ১২৪ রান তুলে দেশের হয়ে রেকর্ড গড়েছেন। এর আগে ভারতের বিপক্ষে উদ্বোধনী জুটিতে টাইগারদের সর্বোচ্চ রান ছিল ৫৩। ভারতের বিপক্ষে উদ্বোধনী জুটিতে সর্বোচ্চ রানের জুটি রেকর্ড গড়ার পথে ২৭৭ বল খেলেছেন শান্ত ও জাকির।
এরপর ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৫ রানে আউট হলেও দ্বিতীয় ইনিংসে করেন ৫১ রান। যা ছিল দলের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তার এই ৫১ রান এবং লিটন দাসের ৭৩ রানের সুবাদে ভারতকে প্রায় হারাতে বসেছিল টাইগাররা। তবে টার্গেট কম থাকায় ইতিহাস গড়া হয়নি লাল-সবুুজের প্রতিনিধিদের। জাকিরের আগে অভিষেকে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম সেঞ্চুরি করেছেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। তিনিও ভারতের বিপক্ষে এই কীর্তি গড়েন ২০০০ সালে। তিনি প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার যিনি টেস্টে শতরান করেন। এরপর মোহাম্মদ আশরাফুল এই কীর্তি গড়েন। ২০০১ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এই নজির গড়েন তিনি। সবশেষ ২০১২ সালে এই ক্লাবে যুক্ত হন টাইগার পেসার আবুল হাসান রাজু। একজন বোলার হয়েও দুর্দান্ত ব্যাটিং করে তিন অঙ্কের ম?্যাজিকাল ফিগারে পৌঁছান তিনি। এবার চতুর্থ ক্রিকেটার হিসেবে এই কৃতিত্ব দেখালেন জাকির হাসান। সব মিলিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে ওপেনার হিসেবে অভিষেক টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে সেঞ্চুরি করা দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান জাকির। এর আগে এ কীর্তি ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের লেন বাইচানের। ১৯৭৫ সালে লাহোরে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিনি করেছিলেন অপরাজিত ১০৫ রানে। অভিষেক টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে জাকিরের আগে সেঞ্চুরি করেছেন আরো ৮ জন ক্রিকেটার। সর্বপ্রথম এ কীর্তি গড়েছিলেন ভারতের আব্বাস বেগ। এরপর ইংল্যান্ডের ফ্রাঙ্ক হেইস, ওয়েস্ট ইন্ডিজের লিওনার্ড বাইচান, পাকিস্তানের মোহাম্মদ ওয়াসিম, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডোয়াইন স্মিথ, পাকিস্তানের ইয়াসির হামিদ, দক্ষিণ আফ্রিকার ফাফ ডু প্লেসিস ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাইল মেয়ার্স। তারা সবাই টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছেন।
এছাড়া ব্যাট হাতে দারুণ ছন্দে থেকে চট্টগ্রামে জাকিরের অভিষেক হয়। ২০২১ সালে এক বর্ষপঞ্জিকায় ১ হাজার রান করে আলোচনায় ছিলেন ২৪ বছর বয়সি এই তরুণ। এমনকি চলতি বছর ঘরোয়া ক্রিকেটে ৪৪২ রান করে নিজের অবস্থান শক্ত করেছেন। এর পর ভারত ‘এ’ দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে তার ম?্যাচ বাঁচানো ১৭৩ রানের অবিশ্বাস?্য ইনিংস খেলেন জাকির। এরপরই সুযোগ পান জাতীয় দলে। তবে চট্টগ্রামে প্রথম ইনিংসে দৃঢ়তা দেখালেও ২০ রানের বেশি করতে পারেননি। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন। অক্ষর প্যাটেলের প্রথম বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে মিড উইকেটের ওপর দিয়ে চার মেরে ৪৯ রানে পৌঁছান তিনি। একবল পরে মিডঅনে সিঙ্গেল নিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরির স্বাদ নেন তিনি।
– কামরুজ্জামান ইমন

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়