জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি : ডা. এস এ মালেকের মৃত্যু অপূরণীয় ক্ষতি

আগের সংবাদ

পল্টন ছেড়ে গোলাপবাগে বিএনপি : বিকাল থেকেই সমাবেশস্থলে নেতাকর্মীদের অবস্থান, রাজধানীজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা

পরের সংবাদ

যে কারণে কাতার বিশ্বকাপ সেরা

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : বিশ্বকাপ ফুটবলের ২২তম আসরের দায়িত্ব পায় কাতার। এরপর থেকেই শোনা যাচ্ছিল নানা সমালোচনা। তবে সমালোচনার মধ্যেই সুন্দরভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছে কাতার। শেষ হয়েছে কাতার বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব ও শেষ ষোলোর ম্যাচ। আজ থেকে শুরু হবে কোয়ার্টার ফাইনাল। এর মধ্যেই এ আসরকে ইতিহাসের সেরা বিশ্বকাপ হিসেবে অ্যাখ্যায়িত করেছেন ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। এছাড়া নানা কারণে স্মরণীয় হয়ে থাকবে কাতার বিশ্বকাপ। এদিকে গোল্ডেন বুটের দৌড়ে এগিয়ে আছেন এমবাপ্পে। তাকে টেক্কা দিচ্ছেন মেসি। নেইমারও ফিরেছেন ছন্দে।
এবারের বিশ্বকাপে শুরু থেকেই দেখা গেছে একের পর এক চমক। নানা সমালোচনা ও বিতর্ককে সঙ্গী করে শুরু হয়েছিল কাতার বিশ্বকাপ। কিন্তু সেই কাতার বিশ্বকাপেই কিনা ফুটবলপ্রেমী মানুষেরা সাক্ষী হলেন একের পর এক অনন্য রেকর্ডের। একদিকে ফেভারিট তকমা পাওয়া অনেক দলের বিদায়, অন্যদিকে এশিয়া ও আফ্রিকার দলগুলোর গর্জন এবং সর্বোচ্চসংখ্যক দর্শক উপস্থিতি নিয়ে এক দুর্দান্ত আয়োজন হিসেবে প্রতীয়মান হয়েছে কাতার বিশ্বকাপ। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনাকে হারিয়েছে সৌদি আরব, জার্মানি ও স্পেনকে হারিয়েছে জাপান, বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে হারিয়েছে তিউনিশিয়া, পর্তুগালকে হারিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। এছাড়া গ্রুপ পর্বে বেলজিয়ামকে হারানোর পর শেষ ষোলোতে স্পেনকে হারিয়ে শেষ আটে পৌঁছে গেছে মরক্কো। নকআউটে জাপানও ছিল অপ্রতিরোধ্য। তবে ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে হেরে যায় তারা। যে কারণে এবার কাতার বিশ্বকাপ সেরা। ফিফার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ইনফান্তিনো বলেন, কাতার বিশ্বকাপের সবগুলো ম্যাচ দেখেছি। খুব সহজে ও স্পষ্টভাবে বলতে গেলে, এটি বিশ্বকাপের সর্বকালের সেরা গ্রুপ পর্ব ছিল।
একই সঙ্গে স্টেডিয়ামগুলোর মান ছিল দারুণ এবং দর্শকের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো, গড়ে ৫১,০০০ দর্শক দেখা গেছে ম্যাচগুলোতে। টেলিভিশনে সংখ্যাটা রেকর্ড ভেঙেছে। আমরা ইতোমধ্যে ২০০ কোটির বেশি দর্শক পেয়েছি টেলিভিশনে, যা সত্যিই অবিশ্বাস্য! ২৫ লাখ মানুষ দোহার রাস্তায় দাঁড়িয়ে এবং লাখো মানুষ প্রতিদিন স্টেডিয়ামে এসে খেলা দেখেছেন। তারা একই সঙ্গে উল্লাস করেছেন এবং নিজেদের দলকে সমর্থন দিয়েছেন। এখন আর বড় দল ও ছোট দল বলে কিছু নেই। সবার মানই প্রায় কাছাকাছি। প্রথমবারের মতো সব মহাদেশের জাতীয় দল নকআউট পর্বে গেল। এটাই প্রমাণ করে যে, ফুটবল এখন বৈশ্বিক একটি খেলা।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রতিটি মহাদেশের দল নকআউট পর্বে প্রতিনিধিত্ব করেছে। এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি) থেকে তিনটি দেশ এবং আফ্রিকান ফুটবল কনফেডারেশন (সিএএফ) থেকে দুটি দেশ (ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো) প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেছে। কাতার বিশ্বকাপ দেখিয়ে দিয়েছে যে, এখন আর বিশ্বকাপে ছোট দল বা বড় দল বলে কিছু নেই। এই কারণেও এবার কাতার বিশ্বকাপ সেরা।
সময়ের সাথে জার্মানি আর বেলজিয়াম বিদায় নিয়েছে প্রথম পর্ব থেকেই। দ্বিতীয় রাউন্ডে আটকে গেছে স্পেনও। তিন জায়ান্ট না থাকলেও বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে দাপট কমেনি ইউরোপের। বরং বেড়েছে। টুর্নামেন্টের শুরুতে ৩২টি দলের ৮৩২ খেলোয়াড়ের মধ্যে ইউরোপীয় ক্লাবের ফুটবলার ছিল ৭২ শতাংশ। প্রথম রাউন্ড থেকে ১৬ দল বিদায় নেয়ার পর এই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৬ শতাংশে। কোয়ার্টারে দল সংখ্যা কমে আটে আসতে আসতে যা ৯৪ এ উঠে গেছে।
এ মুহূর্তে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি খেলোয়াড় আছেন প্রিমিয়ার লিগের দুই ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটি ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের। ক্লাব দুটির খেলোয়াড় টিকে আছেন যথাক্রমে ১২ ও ১১ জন।
অপরদিকে কাতার বিশ্বকাপে দারুণ ছন্দে রয়েছেন ফ্রান্সের ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপ্পে। যেখানে শেষ, ঠিক সেখান থেকেই যেন শুরু করলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। ২০১৮ বিশ্বকাপে ক্যারিয়ারের প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে এসে পুরো আলোটাই নিজের করে নিয়েছিলেন তিনি। বিশ্বকাপের ফাইনালে গোল করার পর এই বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেও গোলের দেখা পান তিনি। এছাড়া গ্রুপ পর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে জোড়া গোল করে দলের জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন। এবার কাতার বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাটট্টিক গৌরব অর্জন করেন পর্তুগালের গঞ্জালো রামোস। মরক্কোর হাকিমি দুর্দান্ত নৈপূণ্যের মাধ্যমে দর্শকদের মন জয় করেছেন।
পাশাপাশি নকআউটে পোল্যান্ডের বিপক্ষেও করেন জোড়া গোল। এখন পর্যন্ত গোল্ডেন বুটের দৌড়ে এগিয়ে আছেন তিনি। এমবাপ্পের পাশাপাশি গোল্ডেন বুটের দৌড়ে এগিয়ে আছেন লিওনেল মেসি।
কাতার বিশ্বকাপে নেমেই লিওনেল মেসি স্পর্শ করেছিলেন নতুন একটি রেকর্ড। টানা পাঁচ বিশ্বকাপে অংশ নেয়া খোলোয়াড়দের তালিকায় নাম লিখিয়েছিলেন তিনি। এছাড়া আরো কিছু রেকর্ডের দ্বারপ্রান্তে ছিলেন তিনি। তিন গোল করে আছেন এমবাপ্পের পরেই। তার পারফরম্যান্সে দল উঠেছে কোয়ার্টার ফাইনালে। এছাড়া ব্রাজিল তারকা নেইমারও ছন্দে ফিরেছেন। কাতার বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে দক্ষিণ কোরিয়াকে ৪-১ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ব্রাজিল। দলের জয় ও রেকর্ডের পাশাপাশি দারুণ রেকর্ড গড়েছেন দলের তারকা খেলোয়াড় নেইমার। রিচার্লিসনকে ডি বক্সের ভেতরে ফাউল করায় পেনাল্টি পায় ব্রাজিল। ব্রাজিলের তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপের তিন ভিন্ন আসরে গোল করার অনন?্য কীর্তি গড়েছেন এই তারকা।
এর আগে এই রেকর্ড গড়েছিলেন রোনালদো ও পেলে। নেইমার ২০১৪ এবং ২০১৮ বিশ্বকাপে দলের হয়ে গোল করেছিলেন। ২০১০ সালে কোনো গোল পাননি। ২০১৪ সালে চারটি ও ২০১৮ সালে দুই গোল করেছিলেন। পেলে ১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৬৬ ও ১৯৭০ সালে গোল করেছিলেন। রোনালদো গোল করেছেন ১৯৯৮, ২০০২ ও ২০০৬ সালে। ইনজুরির কারণে গ্রুপ পর্বের দুই ম্যাচে না খেললেও নকআউটে এসেই নেইমার হয়েছেন সেরা খেলোয়াড়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়