এইচএসসির বিতর্কিত প্রশ্ন, প্রণেতারা শাস্তি পেলেন : আর কোনো পাবলিক পরীক্ষার দায়িত্ব নয়

আগের সংবাদ

স্বাচিপের পঞ্চম সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী : চাই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা

পরের সংবাদ

নিয়ন্ত্রণে চাই সমন্বিত সহযোগিতা : জনস্বাস্থ্যের বড় হুমকি হয়ে উঠছে এএমআর

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৫, ২০২২ , ১:৪৭ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দেশে প্রায় সব ধরনের জীবাণু ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে উঠছে। এন্টিবায়োটিক ওষুধের অকার্যকারিতা তথা এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে বড় হুমকির মুখে পড়বে জনস্বাস্থ্য। এএমআর একটি বহুমুখী সমস্যা। এই সমস্যা তৈরিতেও রয়েছে অনেকগুলো কারণ। এএমআর সমস্যা প্রতিরোধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরসহ সব অংশীজনের সমন্বিত সহযোগিতা প্রয়োজন।
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) নতুন ভবনের মিলনায়তনে ডিসেমিনেশন প্রোগ্রাম অন এএমআর সার্ভিলেন্স ইন বাংলাদেশ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন। প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির। বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (ডিজিজ কন্ট্রোল) ও লাইন ডিরেক্টর (কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল) অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক লোকমান হোসেন মিয়া, সুইডিশ অ্যাম্বেসি ফার্স্ট সেক্রেটারি ড্যানিয়েল নোভাক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার টিম লিডার (আইভিডি) ডা. রাজেন্দ্র বোহরা, ফ্লেমিং ফান্ড বাংলাদেশের টিম লিড অধ্যাপক ডা. নিতীশ দেবনাথ প্রমুখ। আইইডিসিআরের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অধ্যাপক ডা. জাকির হোসেন হাবিব এবং প্রতিষ্ঠানের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. রিপন বড়–য়া দুটি উপস্থাপনা দেন।
ডা. রিপন বড়–য়া বাংলাদেশের এএমআর সার্ভিলেন্সের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তার উপস্থাপনার মাধ্যমে তুলে ধরে বলেন, আইইডিসিআর ২০১৭ সাল থেকে এএমআর সার্ভিলেন্স সফলতার সঙ্গে পরিচালনা করে আসছে। সারাদেশের ৮টি মেডিকেল কলেজ ও একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে সার্ভিলেন্সটি পরিচালিত হয়। হাসপাতালের মেডিসিন, সার্জারি, শিশু বিভাগ, বার্ন ইউনিট ও আইসিইউতে ভর্তি রোগী এবং বহির্বিভাগে আসা নির্বাচিত রোগীদের মধ্য থেকে রক্ত, প্র¯্রাব, মল, কফ, এন্ডোট্রাকিয়াল এস্পিরেট ও ক্ষত থেকে নমুনা এবং ওই রোগীর তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। এসব নমুনা সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবরেটরিতে জীবাণু শনাক্তকরণ এবং শনাক্তকৃত জীবাণুর মধ্যে এন্টিবায়োটিকের কার্যক্ষমতার হার দেখার জন্য পরীক্ষা করা হয়। আরো দুটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খুব শিগগিরই সার্ভিলেন্স কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে।
২০১৭-২০২২ সাল পর্যন্ত এএমআর সার্ভিলেন্স থেকে প্রাপ্ত হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করে অধ্যাপক ডা. জাকির হোসেন হাবিব জানান, এই সময়ের মধ্যে মোট ২৭ হাজার ৪৩৮ জন রোগীর বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ এবং পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষাতে যথাক্রমে ভিব্রিও কলেরা, টাইফয়েড এবং প্যারাটাইফয়েডের জীবাণু এবং ই-কোলাই সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হয়েছে। ইমিপেনেম এন্টিবায়োটিকের ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশ প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়া। এছাড়া ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়া এমিকাসিন এন্টিবায়োটিকের ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ, নাইট্রোফুরানটনের ক্ষেত্রে ৭৭ শতাংশ, জেনটামাইসিনের ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। এমনকি বছরখানেক আগে বাজারে আসা পঞ্চম প্রজন্মের সর্বাধুনিক এন্টিবায়োটিক সেফিপিম-এর ক্ষেত্রেও ৪৫ শতাংশ প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে এ জীবাণু। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলা হয় পিডিআর বা প্যান ড্রাগ রেজিস্টেন্স। অন্যদিকে এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে মূত্রনালীর সংক্রমণ ঘটানো জীবাণু প্রটিয়াস, সিউডোমোনাস এরোজিনোসা, এসাইনোটা ব্যাক্টর, টাইফয়েড ও প্যারাটাইফয়েডের জীবাণু সালমোনেলা, রক্ত আমাশয়ের জীবাণু সাইগেলা, কলেরার জীবাণু ভাইব্রো কলেরা। এসব জীবাণুর কোনোটি এমডিআর, কোনোটি এক্সডিআর বা এক্সটেনসিভ ড্রাগ রেজিস্টেন্স (এমডিআরের চেয়ে বেশি প্রতিরোধী)।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়