রাজশাহীতে শিশু ধর্ষণের মামলায় যাবজ্জীবন

আগের সংবাদ

নৌকায় ভোট দেবেন, ওয়াদা চাই : যশোরের জনসমুদ্রে শেখ হাসিনা, বিএনপির কাজই গুজব ছড়ানো, রিজার্ভের কোনো সমস্যা নেই

পরের সংবাদ

শক্তিশালী ক্রোয়াটদের রুখে দিল মরক্কো

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : কাতার বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শক্তিশালী ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করেছে মরক্কো। বিশ্বকাপের মঞ্চে গতকাল প্রথমবারের মতো ক্রোয়াটদের মুখোমুখি হয়েছিল তারা। প্রথম দেখাতেই চমকে দিয়েছে উত্তর আফ্রিকার দেশটি। আল বাইত স্টেডিয়ামে বল দখলে বেশ এগিয়ে ছিল ক্রোয়েশিয়া। তবে যে দলটা শেষ তিন বছরে ৪০ ম্যাচে হেরেছে মাত্র দুটো ম্যাচ, সেই মরক্কান রক্ষণ ভেদ করা যে মোটেও সহজ কাজ নয়, তা ম্যাচের আগেই আঁচ পাওয়া যাচ্ছিল। ম্যাচে তার প্রমাণ মিলেছে। তবে গোলের জন্য শট নেয়া ও লক্ষ্যে রাখায় দুদলই ছিল সমানে সমান। ৭টি করে শট নিয়ে কেবল দুটি করে রাখতে পারে লক্ষ্যে। ম্যাচে ফিনিশিংয়ে যে কার্যকারিতার প্রয়োজন ছিল, তা দেখাতে পারেনি কোনো দল। ফরোয়ার্ডদেরও বেশির ভাগ সময় দেখা গেছে রক্ষণে সহায়তা করতে। গোল করা গেলে ভালো, কিন্তু হজম করা যাবে না- দুদল যেন নেমেছিল এই ভাবনা নিয়ে। তাই তেড়েফুঁড়ে আক্রমণ হয়নি। মূলত প্রতিআক্রমণ দিয়ে চলে প্রতিপক্ষের রক্ষণ ভাঙার চেষ্টা।
ম্যাচের ১৮তম মিনিটে স্রোতের বিপরীতে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে যায় মরক্কানরা। কিন্তু পোস্টের সামনে বল পেয়েও অল্পের জন্য মাথা ছোঁয়াতে পারেননি ইউসেফ এননেসিরি। প্রথম ৪৫ মিনিটে লক্ষ্যে থাকেনি একটাও শট। গোলের সত্যিকারের সুযোগ প্রথম আসে যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে। বোর্না সোসার চমৎকার ক্রসে পা ছোঁয়ান নিকোলা ভøাসিচ। তবে পার করতে পারেননি ইয়াসিন বোনোকে। কোনোমতে জাল অক্ষত রাখেন মরক্কো গোলরক্ষক। পরের মিনিটে রিয়াল মাদ্রিদ তারকা মদ্রিচের শটে বল বারের ওপর দিয়ে যায়।
দ্বিতীয়ার্ধেও ক্রোয়েশিয়াকে বারবার হতাশ করে মরক্কোর ডিফেন্স। উল্টো মরক্কো দুইবার লক্ষ্যের খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু ডিফেন্ডার নুসে মাসাওয়ির ডাইভিং হেড শেষ মুহূর্তে ফেরে। এরপর আশরাফ হাকিমির দূরপাল্লার শট ঠেকিয়ে দেন ক্রোয়াট দমিনিক লিভাকভিচ। কর্নার থেকে এগিয়ে যেতে পারত ক্রোয়েশিয়া। তবে গোললাইন থেকে বল ফিরিয়ে দেন সোফিয়ান আমরাবাত। ৬৪তম মিনিটে আশরাফ হাকিমির বুলেট গতির ফ্রি-কিক শক্তিশালী পাঞ্চে ব্যর্থ করে দেন ক্রোয়াট গোলরক্ষক।
লুকা মদ্রিচের দুর্দান্ত ফ্রি-কিকে ৭২তম মিনিটে বিপদ হতে পারত। কিন্তু ইউসুফ এননেসিরি কোনোমতে বিপদমুক্ত করেন। দুই মিনিট পর প্রতিআক্রমণে প্রতিপক্ষের ডি বক্সে গিয়ে আব্দে ইজ্জাজুলি নিয়ন্ত্রণ হারালে বেঁচে যায় ক্রোয়েশিয়া। এরপর আরো দুইবার ক্রোয়েশিয়ার পোস্টে শট নিয়েছিলেন মরক্কোর সেলিম আমাল্লাহ। ফ্রি-কিক থেকে আতঙ্ক ছড়িয়েছিলেন হাকিমি। কিন্তু দুর্দান্ত সেভ করেন ক্রোয়াট গোলরক্ষক লিভাকোভিচ। ম্যাচের শেষ দিকে আক্রমণের ধার কিছুটা বেড়েছিল বর্তমান রানার্সআপদের। লুকা মদ্রিচের ফ্রি-কিক ঠেকাতে গিয়ে নিজেদের পোস্টেই বল প্রায় পাঠিয়ে দিয়েছিলেন মরক্কোর এক ডিফেন্ডার। শেষ দিকে আক্রমণে মনোযোগী হয় দুদল। তবে নিশ্চিত সুযোগ তৈরি করতে পারেনি কেউই। বাকি সময় দুই দলই কার্যকর আক্রমণ শানাতে ব্যর্থ হওয়ায় ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে দুই দল। এক পয়েন্ট নিয়ে খুশি থাকতে হয় লুকা মদ্রিচদের।
ম্যাচের আগে মরক্কো কোচ ওয়ালিদ রেগরাগি বলেছিলেন, আর্জেন্টিনার বিপক্ষে সৌদি আরবের জয় থেকে অনুপ্রাণিত তারা। সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে চমকে দিতে চান ক্রোয়াটদের। জিততে না পারলেও এই ড্র কম বড় প্রাপ্তি নয় মরক্কোর জন্য। এবারের বিশ্বকাপের তৃতীয় গোলশূন্য ড্র ম্যাচ এটি। এর আগে ডেনমার্ক-তিউনিশিয়া এবং মেক্সিকো-পোল্যান্ড ম্যাচ দুটি গোলশূন্য ড্র হয়। এছাড়া ইংল্যান্ড-ওয়েলস ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়।
চার বছর আগের সেই ফাইনাল খেলা দলের সঙ্গে এই ক্রোয়েশিয়ার অবশ্য পার্থক্যটা আকাশ আর পাতালের। সেই দল থেকে অনেক মুখই বদলে গেছে এবার। পারফরম্যান্সটাও যেন বদলে গেছে। চার বছর আগের সেই আগুনে ফর্ম, যাতে ভর করে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনাকেও গুঁড়িয়ে দিয়েছিল লুকা মদ্রিচের দল, সেটার যেন দেখাই মিলেনি।
২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা দলটি সেবার শুরু করেছিল আরেক আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ২-০ গোলের জয় দিয়ে। সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়ে সেই ক্রোয়েশিয়া উঠেছিল ফাইনালমঞ্চে। এবার তাদের শুরুটা হয়েছে পয়েন্ট হারিয়ে।
এবারের বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়াকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন রিয়াল মাদ্রিদের ব্যালন ডি’অর জয়ী মিডফিল্ডার লুকা মদ্রিচ। গতকালের ম্যাচে খেলতে নেমে নতুন একটি রেকর্ড গড়েছেন ৩৭ বছর বয়সি এই ক্রোয়েশিয়ান তারকা। প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে তিনটি ভিন্ন দশকে তিনটি ইউরো ও তিনটি বিশ্বকাপে অংশ নেয়া প্রথম খেলোয়াড় হয়েছেন মদ্রিচ। এর আগে তিনি ২০০৬ ও ২০১৮ বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিলেন। এছাড়া ২০০৮, ২০১৬ ও ২০২০ ইউরো প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। এতে বিরল কীর্তির রেকর্ড হয়ে যায় তার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়