হাতিরঝিল লেক থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার

আগের সংবাদ

এলসি-এনডোর্সমেন্টে বিড়ম্বনা : ডলার সংকটে মূলধনি যন্ত্রপাতি-কাঁচামাল আমদানি ব্যাহত > বিদেশ যাত্রায় বিপাকে সাধারণ মানুষ

পরের সংবাদ

খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন জেলেরা : কুয়াকাটায় চলছে সরকারি জমি উদ্ধার অভিযান

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : কুয়াকাটায় তৃতীয় দিনের মতো চলছে সরকারি জমি উদ্ধার অভিযান। গতকাল রবিবার সকালে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চলছে এই উচ্ছেদ অভিযান। প্রথম পর্যায়ে বেড়িবাঁধের উপরে থাকা ৩ শতাধিক দোকানপাট ও জেলেদের বাসা ভেঙে দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। দ্বিতীয় দিন থেকে সরকারি জমি উদ্ধারে নামে জেলা প্রশাসন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রবিবার সমুদ্রসৈকত এলাকার চার শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদে নামে জেলা প্রশাসন। বিকাল পর্যন্ত তিন শতাধিক বাড়িঘর ভেঙে ফেলা হয়। পর্যায়ক্রমে বেড়িবাঁধের বাইরে থাকা সব স্থাপনা ভেঙে ফেলা হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। বেড়িবাঁধের বাইরে বসবাসরত বাসিন্দারা এখন উচ্ছেদ আতঙ্কে রয়েছে।
কুয়াকাটা সৈকতের জিরো পয়েন্টের পূর্বদিকে গড়ে ওঠা এসব স্থাপনার মালিকরা গত শনিবার উচ্ছেদের আগে পুনর্বাসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে। এ সময় তারা পুনর্বাসন করে তারপরে উচ্ছেদের দাবি জানান। কিন্তু জেলা প্রশাসন সরকারি জমি উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণায় অনেকেই নিজে থেকে বসতঘর সরিয়ে নিতে শুরু করে। এদের মধ্যে অনেকেই সরিয়ে নিতে পারলেও কেউ কেউ ব্যর্থ হয়। কুয়াকাটা বেড়িবাঁধের বাইরে বসবাসরতদের মধ্যে ৩০ ভাগ মানুষ রয়েছে বাস্তুহারা। এদের কোথাও কোনো থাকার স্থান নেই। তাই মালামাল নিয়ে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছেন। যদিও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রকৃত ভূমিহীনদের ঘর ও জমি দেয়া হবে। কবে নাগাদ ঘর ও জমি দেয়া হবে তা কেউ বলতে পারছেন না। এতদিন পরিবার পরিজন নিয়ে কোথায় থাকবেন এমন শঙ্কায় রয়েছে অনেকেই।
সৈকতের বেলাভূমে একধরনের ঝুপড়িসহ বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা তুলে জেলেসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ৫০-৬০ বছর ধরে বসবাস করে আসছেন। এসব দরিদ্র পরিবারের দাবি- তাদের আগে থেকে কোনো ধরনের নোটিস দেয়া হয়নি। কুয়াকাটা পর্যটনকেন্দ্র ঘিরে সরকারের রয়েছে উন্নয়ন মহাপরিকল্পনা।
যা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বেড়িবাঁধ আধুনিকায়নসহ উচ্চতা বাড়ানো এবং সৈকত এলাকার সৌন্দর্যবর্ধনে এসব স্থাপনা অপসারণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
বেড়িবাঁধের বাইরে বসবাসরত মো. সোহরাফ, আ ছত্তার, আবজাল, রত্তন. আনোরা, মজিদসহ একাধিক বাসিন্দা জানান, ঘরবাড়ি ভেঙে দেয়ার পর তারা খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখান থেকে সরিয়ে দিলে তারা কোথায় গিয়ে থাকবেন জানেন না। তারা আক্ষেপ করে বলেন, আমরাও সরকারের প্রজা। আমাদের জায়গাজমি নেই। তাই সাগরপাড়ে সরকারি জমিতে আশ্রয় নিয়েছি। এখানে থেকে সমুদ্রে মাছ ধরে, সৈকতে ক্ষুদ্র ব্যবসা ও দিনমজুরের কাজ করে কোনোরকম জীবিকা নির্বাহ করছি। এখন আমাদের সবকিছুই শেষ হয়ে গেছে। অনেকেই জানান, এই জমির মালিক দাবিদার শাহিন মিয়াজি গংদের কাছ থেকে প্রকারভেদে ৪০-৬০ হাজার টাকা দিয়ে কিনে এখানে বসবাস করেছেন।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, বেড়িবাঁধের বাইরের জমি যে কোনো মূল্যে অবৈধ দখলমুক্ত করে সরকার উদ্ধার করবে। পর্যটন সম্প্রসারণে এসব জমি উদ্ধারে নেমেছে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে। উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান ইউএনও।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়