হাতিরঝিল লেক থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার

আগের সংবাদ

এলসি-এনডোর্সমেন্টে বিড়ম্বনা : ডলার সংকটে মূলধনি যন্ত্রপাতি-কাঁচামাল আমদানি ব্যাহত > বিদেশ যাত্রায় বিপাকে সাধারণ মানুষ

পরের সংবাদ

কুলাউড়ার টিলাগাঁও শিংরাউলী বিল : বোরো ফলন ব্যাঘাতের আশঙ্কায় কৃষক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আব্দুল কুদ্দুস, কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) থেকে : কুলাউড়া উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়নের শিংরাউলী বিল বোরো ধান চাষে এখন বিখ্যাত। নদী তীরবর্তী এ অঞ্চলের কৃষকরা আউশ, আমনের চেয়ে বোরো ক্ষেতের উপর অনেকাংশেই নির্ভরশীল। কয়েক বছর ধরে এখানে বোরোর বাম্পার ফলন হচ্ছে। এক সময় শুষ্ক মৌসুমে বিলে প্রচুর পানি আটকে রাখা যেত। পরবর্তীতে মনু নদীর ভাঙনে পলি দ্বারা বিল ভরাট হয়ে যায়। ফলে এখন প্রতিবছরই শুষ্ক মৌসুম আসার আগে বিলের পানি শুকিয়ে যায়। তারপরও প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল না থেকে সেচের মাধ্যমে বোরো আবাদের আওতায় আনা হয়। নদী তীরবর্তী এই বিলে আউশ ও আমন ধান চাষে কৃষকদের তেমন আগ্রহ থাকে না। ফলে শুকনো মৌসুম এলেই পুরো বিল বোরো চাষের আওতায় আনা হয়। আসন্ন বোরো মৌসুমে সেচ পাম্প ও পানির চাহিদাও আগের চেয়ে বেড়ে যাবে। এই চাহিদা পূরণ না হলে বোরোর ফলনে ব্যাঘাত ঘটতে পারে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিংরাউলী বিলে ২০০৬ সাল থেকে ডিজেলচালিত পাম্প দিয়ে সেচের মাধ্যমে বোরো চাষ হচ্ছে। ২০০৯ সালে বিএডিসির আওতায় সেচ প্রকল্প শুরু হয়। প্রথমে ডিজেলচালিত পাম্প দিয়ে সেচ প্রকল্পের কাজ চলে। পরবর্তীতে ২০১২ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক বিএডিসির মাধ্যমে ৫ কিউসেক বৈদ্যুতিক পাম্প বরাদ্দ দেন। তাছাড়া তাজপুর সেচ প্রকল্পের আওতায় তাজপুরস্থ মন নদীর তীরে ১ কিলোমিটার বারিড পাইপ দিয়ে ভুগর্ভস্থ নালা তৈরি করা হয়। এই পাম্পের সর্বোচ্চ ১৫০ একর জমিতে পানি সেচের ক্ষমতা ছিল। পর্যায়ক্রমে কৃষকের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে এক হাজার একর জায়গায় বোরো আবাদ হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, তাজপুর সেচ প্রকল্পের আওতায় বিএডিসির একটি ভিত্তি বীজ উৎপাদন প্রকল্প রয়েছে এই বিলে। কিন্তু আসন্ন মৌসুমে ৫ কিউসেক পাম্প দিয়ে হাজার একর জায়গায় পানি সেচ দেয়া সম্ভব হবে না। তাজপুর সেচ প্রকল্পের ম্যানেজার শ্রীকান্ত দে জানান, ২০১২ সালে বিএডিসির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সরজমিন পরিদর্শনসহ তাজপুর গ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাশে পাম্প স্থাপনের জায়গা নির্ধারণ করা হয়। একই এলাকার দীপ্তি দাস জায়গার মালিকানা দাবি করে পাম্পটি অন্যত্র সরাতে ২০১৪ সালে আদালতে মামলা করেন। এমনকি ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর কিছু সংখ্যক লোক নিয়ে তিনি পাম্পের স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেন। ঘটনাটি সঙ্গেসঙ্গে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পরামর্শে সেচ পাম্পটি অন্যত্র সরানো হলে বর্তমানে ওই জায়গাটিও নদীগর্ভে বিলীন হতে যাচ্ছে। বোরো চাষের মৌসুমও আসন্ন। পাম্প স্থাপনের জায়গা না পাওয়ায় কৃষকরা শঙ্কায় রয়েছেন। তাছাড়া বর্তমানে ৫ কিউসেক পাম্প দিয়ে সেচের কাজ চলছে। আবাদের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় পানির চাহিদাও বেড়ে গেছে। এখন ১০ কিউসেকের পাম্প প্রয়োজন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল মোমিন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদী থাকবে না। কৃষকদের উৎসাহিত করতে সরকার প্রণোদনার ব্যবস্থা করছে। কৃষকদের পাশে সরকার সব সময় রয়েছে। বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণেও সরকার কৃষকদের ভুর্তুকি দিচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়