প্রকাশিত: নভেম্বর ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
কাগজ প্রতিবেদক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ২ লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কিনতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) যে ৮ হাজার ৭১১ কোটি ৪৪ লাখ টাকার প্রকল্প পেশ করেছিল, তা থেকে গাড়ি, জ¦ালানি ও লোকবলে ৩০০ কোটি টাকার মতো খরচ কমিয়ে প্রস্তাবনাটি আবারো পরিকল্পনা কমিশনে পাঠাচ্ছে।
গত মঙ্গলবার একনেক বৈঠকের পরে পরিকল্পনা কমিশনের পক্ষ থেকে কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে ইভিএম প্রকল্পটি নির্বাচন কমিশনে ফেরত পাঠানো হয়। এ নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার ইসির ইভিএম বিষয়ক টেকনিক্যাল কমিটির বৈঠকে কিছুটা ব্যয় কাটছাঁট করে আবারো তা আগামী রবিবার পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন ইভিএম প্রকল্পের পিডি কর্নেল সৈয়দ রাকিবুল হাসান। একইসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের দেয়া পর্যবেক্ষণের ব্যাখ্যাও ডিপিপির সঙ্গে পাঠানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।
গতকালের বৈঠকের পরে পিডি রাকিবুল হাসান বলেন, ইভিএম প্রকল্প প্রস্তাবে ফিজিবিলিটি স্টাডির বদলে টেকনিক্যাল কমিটির সুপারিশ গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনের গত ১৯ অক্টোবর ‘নির্বাচনী ব্যবস্থায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের ব্যবহার বৃদ্ধি এবং টেকসই ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠায়। জাতীয় নির্বাচনে ১৫০ সংসদীয় আসনে ইভিএমে ভোট করার লক্ষ্যে প্রায় ২ লাখ ইভিএম কেনা ও রক্ষণাবেক্ষণসহ আনুষঙ্গিক ব্যয়ের লক্ষ্যে এ প্রকল্পটি নেয়া হয়।
বৈঠক শেষে ইভিএম পিডি কর্নেল রাকিবুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, পরিকল্পনা কমিশন বেতনভাতা, পরিবহন ব্যয়, মেইটেইনেন্স সার্ভিস কতখানি যথার্থ সেগুলো দেখতে বলে একটি পর্যবেক্ষণ পাঠায়, আমরা সেটা নিয়ে আজ আলোচনা করেছি। প্রকল্প ব্যয় সেটা কিছু কমতে পারে। খুব একটা বেশি না, ২০০-৩০০ কোটির মতো। তিনি বলেন, ফিজিবিলিটি স্টাডিকে তো আর রিপ্লেস করা যায় না। যেহেতু প্রকল্পের সামনে সময় কম, তাই বর্তমান ইভিএমকেই আমরা রেপ্লিকেট করছি। সেই জন্য টেকনিক্যাল কমিটির মতামত জরুরি। বর্তমানে প্রকল্পটি গ্রিন সিগনালে আছে। প্ল্যানিং কমিশন আমাদের কিছু অবজারভেশনের জায়গা দিয়েছে, এর মধ্যে অন্যতম ছিল টেকনিক্যাল কমিটির রিপোর্টটা সাপোর্টেড কিনা। আমরা যে টেকনিক্যাল স্পেসিফেকশন দিয়েছি সেই কাজটা আজকে করলাম। প্রকল্পটি এখন গ্রিনবুকে এন্ট্রি হয়েছে। অর্থাৎ প্রকল্পটি এডিবিভুক্ত হয়ে গেছে। এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ে যাবে। তারা আবার যাচাই-বাছাই করে দেখবে। নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, টেকনিক্যাল কমিটি মোটাদাগে যে সুপারিশ দিয়েছে সেগুলো হলো- আগামী নির্বাচন করতে গেলে বেশ কিছু ইভিএম লাগবে। নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে যে দেড়শ আসনের ক্ষেত্রে আমাদের আরো ইভিএম কিনতে হবে। কমিশনের মাধ্যমে আমরা প্ল্যানিং কমিশনে পাঠিয়ে দেব। তারপরে পরবর্তী কার্যক্রম হবে। আগামী রবিবার টেকনিক্যাল কমিটির সবার স্বাক্ষরযুক্ত পর্যবেক্ষণ পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়ে দেয়া হবে। বাজেট কাটছাঁটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা তো টেকনিক্যাল কমিটি। এখানে বাজেট কাটছাঁটের বিষয় নেই।
গতকাল নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে ইসির যুগ্ম সচিব অশোক কুমার দেবনাথ, এনআইডি ডিজি হুমায়ুন কবীর খন্দকার, ইভিএম পিডি কর্নেল সৈয়দ রাকিবুল হাসানসহ টেকনিক্যাল কমিটির সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
তবে বাজেট কমে গেলে ইভিএমে ভোটগ্রহণে আসন সংখ্যা কমে যাবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর। তিনি বলেন, শুধু তাই নয়, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রকল্প অনুমোদন না হলে ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট করা সম্ভবও হবে না। কেননা, মধ্য জানুয়ারির মধ্যে ইভিএমের সাপ্লাই অর্ডার দিতে হবে। ইভিএম কিনতে এলসি খোলার পর সেগুলো দেশে আনতে হবে, কোয়ালিটি কন্ট্রোলের ব্যাপার আছে। প্রশিক্ষণ দেয়া, ফিল্ডে পাঠানোসহ অনেক কাজ আছে। সেক্ষেত্রে এ
সময়ের মধ্যে প্রকল্প পাস না হলে দেড়শ আসনে ইভিএমে ভোট সম্ভব হয়ে উঠবে না।
তিনি জানান, বর্তমানে যে ইভিএম আছে তা দিয়ে ৭০ থেকে ৭৫টা আসনে ভোট সম্ভব। সেগুলো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবহার করা হবে। মোট কথা ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট করতে হলে প্রকল্পটি দ্রুত পাস হতে হবে।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।