পুণ্যস্নানে শেষ হবে সুন্দরবনের রাসমেলা

আগের সংবাদ

মিলছে আইএমএফের ঋণ > বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো : রাহুল আনন্দ

পরের সংবাদ

চন্দ্রিমা উদ্যানে স্বজনদের মানববন্ধন : জিয়ার কবর অপসারণের দাবি শহীদ পরিবারের সদস্যদের

প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সংসদ ভবন এলাকার চন্দ্রিমা উদ্যান থেকে সাবেক সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের কবর সরানোর দাবি জানিয়েছে ‘মায়ের কান্না’ নামের একটি সংগঠন। অন্যথায় তারা নিজেরাই এখান থেকে কবর সরানোর উদ্যোগ নেবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চন্দ্রিমা উদ্যান এলাকায় এ মানবন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক, নিহত কর্নেল নাজমুল হুদার সন্তান সংসদ সদস্য নাহিদা ইজাহার খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল হেলাল মোর্শেদ খান বীরবিক্রম, শহীদ মেজর জেনারেল খালেদ মোশারফের কন্যা মাহজাবিন খালেদসহ ১৯৭৭ সালে গণফাঁসির শিকার সেনা ও বিমানবাহিনীর সদস্যদের সন্তান ও পরিবারের সদস্যরা।
এ সময় ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর সেনা ও বিমানবাহিনীর সদস্যদের ফাঁসি দেয়ার দায়ে জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার দাবি করে বক্তারা বলেন, ওই সময় বিদ্রোহ দমনের নামে ষড়যন্ত্র করে সামরিক বাহিনীর প্রায় দেড় হাজার সদস্যকে অন্যায়ভাবে ফাঁসিসহ নানা দণ্ড দেয়া হয়েছিল। ইতিহাসে এটি ন্যক্কারজনক ঘটনা। নিজের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে জিয়াউর রহমান এই হত্যাকাণ্ড চালান। কাউকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে, কাউকে কোনো ধরনের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে জিয়াউর রহমান বেছে বেছে মুক্তিযোদ্ধা সৈনিকদেরই ফাঁসি কার্যকর করেন সবার আগে। এতদিন পরও স্বজনের কবরের সন্ধান না পাওয়ায় ক্ষোভ জানান দণ্ড কার্যকর হওয়াদের স্ত্রী ও সন্তানরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে স্বামী ও বাবা হত্যার বিচারের পাশাপাশি এমন হত্যাকাণ্ডের অপরাধে জিয়ার মরণোত্তর বিচারও দাবি করেন তারা।
স্বজনরা বলেন, তথাকথিত বিদ্রোহ দমনের নামে জিয়াউর রহমান একদিনের সামরিক আদালতে বিচার করে সেই রাতেই ফাঁসি সম্পন্ন করতেন ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, রংপুর, যশোর ও বগুড়া কেন্দ্রীয় কারাগারে। রাতের আঁধারে কারফিউ দিয়ে ফাঁসি কার্যকর করা হত। কোনো প্রকার ধর্মীয় সৎকার ছাড়াই লাশগুলো ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে, কুমিল্লার টিক্কারচর কবরস্থানে মাটিচাপা দেয়া হয়। জিয়ার নির্দেশে গঠিত বিশেষ সামরিক ট্রাইব্যুনালের কথিত বিচারে ফাঁসি হওয়া ১৯৩ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়। কিন্তু ওই ঘটনার জেরে মৃতের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ১৪৩ জন, তেমনি কারাদণ্ড ভোগ করেছিলেন সেনা ও বিমান বাহিনীর আড়াই হাজার সদস্য।
মানববন্ধনে বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক বলেন, জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের চর হিসেবে কাজ করেছে। জিয়া মূলত ভারত যায় পাকিস্তানের চর হিসেবে। সে কারণে যখনই সুযোগ পেয়েছে, তখনই পাকিস্তানিদের নির্দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
অনেক মানুষকে বিচারের নামে প্রহসন করে হত্যা করেছে। জিয়া বিএনপি নামক যে দলটি গড়ে তুলেছিল তার ব্যানারে রাজনীতি করার কারো অধিকার নেই। জামায়াত ও বিএনপির মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। এ দুটি দল স্বাধীনতাবিরোধী সংগঠন হিসেবে পরিচিত। বিএনপিকে বিলুপ্ত করার দাবি জানান তিনি।
নিহত কর্নেল নাজমুল হুদার সন্তান সংসদ সদস্য নাহিদা ইজাহার খান বলেন, ৪৭ বছর আগে জিয়া নির্মমভাবে আমাদের বাবাকে হত্যা করেছে। একজন খুনির মরদেহ সংসদ ভবনের মতো পবিত্র এলাকায় থাকতে পারে না। জিয়াসহ সব যুদ্ধাপরাধীদের কবর এখান থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারিভাবে আর্থিক সহায়তা দেয়ার জোর দাবি জানান তিনি। পরে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা ও খুনিদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়