বাংলা একাডেমির তিনটি পুরস্কার ঘোষণা

আগের সংবাদ

মহাসড়কে পদে পদে মরণফাঁদ :

পরের সংবাদ

আলোচনায় কোহলির ফেক ফিল্ডিং : আইসিসিতে যাবে বিসিবি

প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে গত বুধবার ভারতের বিপক্ষে ৫ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। এ ম্যাচের সবকিছু ছাপিয়ে আলোচনায় কোহলির ফেইক ফিল্ডিং। দেশ ও বিদেশের ক্রিকেট পাড়ায় এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ম্যাচে ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ৫ রানে হারা বাংলাদেশ দল পেতে পারত ৫টি অতিরিক্ত রান। ফেক ফিল্ডিংয়ের নিয়ম অনুযায়ী, ভারতকে ৫ রান পেনাল্টি বা জরিমানা করার কথা ছিল আম্পায়ারদের। কিন্তু অভিযোগ করেও তাতে সাড়া পায়নি বাংলাদেশ দল।
অক্ষর প্যাটেলের করা ইনিংসের সপ্তম ওভারে বাউন্ডারি লাইন থেকে থ্রো হওয়া একটি বল মাঠের মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে ধরে ফের থ্রো করার ভঙ্গি করেন বিরাট কোহলি। উইকেটে থাকা ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত তাৎক্ষণিক অভিযোগ করেন আম্পায়ারের কাছে। তবে আম্পায়ার জানান, এমন কিছু তাদের চোখে পড়েনি। ওই ওভার শেষেই বৃষ্টিতে বন্ধ হয় খেলা। বিরতির সময় বাংলাদেশ দলের টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট শ্রীধরন শ্রীরামও আম্পায়ারদের সঙ্গে এটা নিয়ে কথা বলেন। কিন্তু আম্পায়াররা কোনো অভিযোগ আমলে নেননি।
এই ম্যাচকে ঘিরে বিতর্ক শুধু ফেক ফিল্ডিংয়েই সীমাবদ্ধ নেই। বাংলাদেশের সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় চলছে ভেজা মাঠে খেলানোর অভিযোগ নিয়েও। বৃষ্টির পর মাঠ যথেষ্ট না শুকিয়েই খেলা শুরু করা হয়েছে বলে মনে করছেন ক্রিকেট অনুসারীদের অনেকে। এই ভাবনা আরো উসকে দিয়েছে আম্পায়ারদের সঙ্গে সাকিবের তর্ক করার ভিডিও। সেখানে দেখা যায়, দুই আম্পায়ারের সঙ্গে বেশ উত্তেজিত হয়ে কথা বলছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মাও ছিলেন পাশে। তিনি কিছু বলার চেষ্টা করলে সাকিব তাকে থামিয়ে দেন। ওই আলোচনা পর্ব শেষেও সাকিবকে খুব একটা খুশি মনে হয়নি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সাকিব ভেজামাঠে খেলতে চাইছিলেন না। কিন্তু আম্পায়াররা ভেজা আউটফিল্ডের বিষয়টি আমলে আনেননি। এ প্রসঙ্গে ম্যাচ শেষে সাকিব বলেন,?‘আমার কি ক্ষমতা আছে আম্পায়ারদের কোনো কিছুতে রাজি করানোর!’ তিনি জানান, তেমন কোনো কিছু নিয়ে তর্ক হয়নি। টাইগার অধিনায়কের দাবি,‘আম্পায়ার দুই অধিনায়ককে ডেকেছিলেন। তারা আমাদের জানাচ্ছিলেন আমাদের পরিবর্তিত লক্ষ্য কী, পরিবর্তিত নিয়ম কী। আমাদের কত ওভার আরো খেলতে হবে এবং আমাদের লক্ষ্য কী হবে। এটুকুই।’ ভেজা আউটফিল্ডে খেলানোর সিদ্ধান্ত প্রশ্ন করা হলেও তা কৌশলে এড়িয়ে যান সাকিব। বলেছেন, ‘আমাদের ড্রেসিংরুমে কেউ এটা ঠিক নাকি বেঠিক, এটা নিয়ে আলোচনা করিনি। আমরা খেলতে চেয়েছি, আমরা জিততে চেয়েছি। সবাই তাদের সেরা চেষ্টা করেছে।’
ভেজামাঠে রান নিতে গিয়ে লিটন দাসকে দুইবার পিছলে পড়ে যেতেও দেখা যায়। তবে সাকিব এসব নিয়ে অজুহাত তুললেন না। টাইগার দলপতির কথা,‘৫ ওভারে ৫২ রান, হাতে ৮ উইকেট; এ রকম কন্ডিশনে আমাদের এটি করে ফেলা উচিত ছিল। আমাদের যেমন ব্যাটিং লাইনআপ ছিল, আমি বিশ্বাস করছিলাম যে আমরা ওই রান তাড়া করতে সামর্থ্যবান ছিলাম। দুর্ভাগ্যজনকভাবে হয়নি।’
বাংলাদেশ দলের উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহান ম্যাচ শেষে অভিযোগের সুরে বলেছেন,‘মাঠ যে ভেজা, আপনারাও দেখছেন বাইরে থেকে, আমরাও দেখছি। ইভেনচুয়ালি আমার কাছে মনে হয় যে, যখন আমরা কথা বলি একটা ফেক থ্রোও ছিল। যেটায় ৫ রান পেনাল্টি হয়তো হতে পারত। যেটা আমাদের দিকে আসতে পারত। দুর্ভাগ্যবশত সেটাও আসেনি।’
এই দুই ইস্যুতে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। অভিযোগ জানানোর বিষয়টি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক ও ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস নিশ্চিত করেছেন। গতকাল গণমাধ্যমে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন,‘ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে ভেজা মাঠ, ফেক ফিল্ডিং ও আম্পায়ারিং নিয়ে আইসিসির পরবর্তী সভায় আলোচনা তুলতে চায় বাংলাদেশ। আপনারা জানেন, এই অস্ট্রেলিয়াতেই মিটিং রয়েছে সামনে। তবে একটা জিনিস দিন শেষে আম্পায়ার এবং ম্যাচ রেফরির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত।’
এর আগে বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান তানভীর আহমেদ টিটু গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি নিজেদের মধ্যে। অভিযোগ করার সুযোগ আছে কিনা দেখছি। বর্তমান যে নিয়ম তাতে এই ব্যবস্থা এখন সম্ভবত নেই। তারপরও বিষয়টি আমরা দেখছি।’ এদিকে ভারতীয় ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে বাংলাদেশকে উদ্দেশ্যে করে বলেছেন,‘সত্যটা হচ্ছে ফেক ফিল্ডিংটা কেউ দেখেনি। আম্পায়াররা দেখেনি, ব্যাটাররা দেখেনি, আমরাও দেখিনি।
আইনের ৪১.৫ ধারায় ফেক ফিল্ডিংয়ে জরিমানার বিধান আছে (আম্পায়ারের কাছে এটা বোধগম্য হতে হবে)। কিন্তু কেউই তো ঘটনাটা দেখেনি। তাহলে কার কী করার আছে?’ তিনি যোগ করেন,‘সুতরাং আমার বাংলাদেশের বন্ধুদের বলব, লক্ষ্যে পৌঁছাতে না পারার দায় ফেক ফিল্ডিং বা ভেজা কন্ডিশনকে দেবেন না। যদি একজন ব্যাটসম্যানও শেষপর্যন্ত টিকে থাকতে পারত, ম্যাচটা বাংলাদেশ জিতত। আমরা সবাই এর জন্য দায়ী। অজুহাত খুঁজলে বড় হওয়া যায় না।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়