সাগর-রুনি হত্যা মামলা : তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পেছাল ৯৩ বার

আগের সংবাদ

গ্যাস সংকট তীব্র হওয়ায় শঙ্কা : ৩৮০ কোটি ঘনফুট চাহিদার বিপরীতে বিতরণ ২৬০ কোটি ঘনফুট

পরের সংবাদ

গম সংকটে সৈয়দপুরে ১০ ফ্লাওয়ার মিল বন্ধ

প্রকাশিত: নভেম্বর ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জিকরুল হক, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে : গম সংকটে সৈয়দপুর উপজেলার ১০টি আটা-ময়দা তৈরির মিল বন্ধ হয়ে গেছে। অবশিষ্ট সচল ৭টি মিলও বন্ধের উপক্রম হয়েছে। চালু মিলগুলো চাহিদার মাত্র সিকিভাগ গম দিয়ে চলছে। মিল বন্ধ ও উৎপাদন কমে যাওয়ায় প্রায় ৩০০ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। চলমান গমের সংকট কবে কাটবে, এ নিয়ে মিল মালিকরা অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। আর এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে পাইকারি ও খুচরা আটা-ময়দার বাজারে। গমের সংকট ও মূল্য বৃদ্ধির ফলে আটা-ময়দার দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে।
মিল মালিকদের সূত্রে জানা যায়, সৈয়দপুর বিসিক শিল্প নগরীসহ বিভিন্ন এলাকায় ছোট-বড় ১৭টি আটা-ময়দার মিল রয়েছে। এসব মিলে প্রতিদিন গমের চাহিদা ৩০ টন। কিন্তু বর্তমানে গম সংকটে চাহিদামতো সরবরাহ পাচ্ছেন না মিল মালিকরা। ফলে ১০টি মিল বন্ধ হয়ে গেছে। সচল ৭টি মিলও বন্ধের উপক্রম হয়েছে। ভারত থেকে গম আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এ সংকট তৈরি হয়েছে। গমের পাইকারি মোকাম চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পাওয়া যাচ্ছে না চাহিদামতো গম। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণেও দুই দেশ থেকে গম আমদানি নেই বললেই চলে। ফলে গম আমদানিকারকরা তাদের মজুত গম দ্বিগুণ দামে বিক্রি করছেন। বর্তমানে প্রতি কেজি গম ৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এর সঙ্গে রয়েছে পরিবহনসহ অন্যান্য খরচ। অথচ গত সেপ্টেম্বর মাসেও প্রতি কেজি গমের দাম ছিল ২৫ টাকা। বর্তমানে গমের সংকট ও উচ্চমূল্যের কারণে মিল বন্ধ করে দিয়েছেন অধিকাংশ মালিক। যারা মিল চালু রেখেছেন তারা শ্রমিক-কারিগর ও বাজার ধরে রাখতে লোকসান দিয়ে মিল চালাচ্ছেন।
বিসিক শিল্প নগরীর আরিফ ফুড প্রডাক্টসের মালিক ও বিসিক শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বলেন, আমার মিলে প্রতিদিন ৩০ টন গম দরকার। কোথাও চাহিদামতো গম পাওয়া যাচ্ছে না। স্থানীয় ও আশপাশের জেলা থেকে গম জোগাড় করে মিল চালু রেখেছি। গমের অভাবে এখন ১০ টন গম দিয়ে আটা-ময়দা তৈরি করতে হচ্ছে। বাজার ও শ্রমিক-কারিগরদের ধরে রাখতে মিল চালাতে গিয়ে লোকসান গুনতে হচ্ছে। লোকসান কমাতে অর্ধেক শ্রমিককে বসিয়ে দেয়া হয়েছে। আটা-ময়দার দাম বৃদ্ধিতে বাজারে এর বিক্রি কমে গেছে। ফলে বিনিয়োগ উঠে না আসায় শ্রমিক-কর্মচারীদের মাসিক বেতন দেয়াও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। গমের সংকট না কাটলে মিল বন্ধ করে দেয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।
শহরের গাউসিয়া মেজর অটোমেটিক ফ্লাওয়ার মিলের মালিক মো. মোস্তফা বলেন, আমরা ভারত থেকে আমদানি করা গমের ওপর নির্ভরশীল। ভারত গম রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ায় সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ফলে গমের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণ। এতে খরচ মিলিয়ে প্রতি টন গমের ক্রয়মূল্য পড়ছে ৫০ হাজার টাকার বেশি, যা কোনোভাবেই লাভজনক নয়। আর যুদ্ধের কারণে রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে গম তেমন আমদানি হচ্ছে না। ফলে গমের সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। গম সংকটের মুখে অনেক মালিক মিল বন্ধ করে দিয়েছেন। আমরা যারা মিল চালু রেখেছি তাও বন্ধের উপক্রম হয়েছে। সংকট দীর্ঘায়িত হলে চালু সব মিলই বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা ব্যক্ত করেন তিনি।
জানতে চাইলে, সৈয়দপুর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বৈশ্বিক কারণে দেশে গমের সংকট হয়েছে। গমের সংকটের কারণেই হয়তো তারা মিলের উৎপাদন বন্ধ রেখেছেন। তবে খাদ্য বিভাগের চুক্তিবদ্ধ মিলে সরকারি গম সরবরাহ করে আটা তৈরি করে নেয়া হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়