পাজেরোতে মাদক পাচারচক্রের হোতা ও ২ সদস্য গ্রেপ্তার

আগের সংবাদ

বিদ্রোহীদের রমরমায় দলে দুশ্চিন্তা : টাকা ছড়িয়ে ভোট কেনা ও জবরদস্তির অভিযোগ, দলীয় প্রার্থীদের পরাজয় খতিয়ে দেখবে আওয়ামী লীগ > জেলা পরিষদ নির্বাচন

পরের সংবাদ

বিশ্ব খাদ্য দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী : সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ থেকে দেশকে রক্ষায় খাদ্য উৎপাদন বাড়ান

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দেশবাসীকে খাদ্যের উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি অপচয় বন্ধের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খাওয়ার পর বেঁচে যাওয়া খাবার কীভাবে সংরক্ষণ করে তা পুনর্ব্যবহার করা যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী যে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে, তা থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত রাখতে হবে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে, বিশ্বে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে, খাদ্যের অভাব দেখা দেবে। আমাদের বাংলাদেশে যেন কোনোরকম খাদ্যের অভাব দেখা না দেয়, সেজন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। যার যতটুকু সামর্থ্য আছে, জমি আছে সেখানে কিছু উৎপাদন করুন। এজন্য ছাদে কৃষিজ পণ্য কীভাবে উৎপাদন করা যায়, সেদিকেও নজর দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সোমবার সকালে ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস-২০২২’ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মতিয়া চৌধুরী প্রমুখ। খাদ্য উৎপাদনে সবাইকে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাশ্রয়ী হোন। আমাদের সরকারি, বেসরকারি দপ্তর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনেক জায়গা আছে। আমি মনে করি, সব জায়গায় আমরা যদি কিছু কিছু উৎপাদনের দিকে নজর দেই, তাহলে বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ হবে না। বিশ্বব্যাপী দুর্ভিক্ষ হলে, বাংলাদেশ যাতে খাদ্য যোগান দিতে পারে, সেই ব্যবস্থাটাই করতে হবে।
খাদ্য অপচয় বন্ধ করে, বেঁচে যাওয়া খাদ্য সংরক্ষণ করে পুনর্ব্যবহার যাতে করা যায়, সেদিকে খেয়াল রাখার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উৎপাদিত পণ্য যাতে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা যায়, সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। আমদানি নির্ভর পণ্য ভোজ্য তেল, ভুট্টা উৎপাদনে সবাইকে মনোযোগী হতে হবে। কৃষকরা ভোজ্য তেল উৎপাদনে উদ্যোগী হলে, এটা আমদানি করতে হবে না। এই জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করতে হবে। তিনি বলেন, কোনো খাদ্যের অপচয় নয়, উৎপাদন বাড়ান। যার যেখানে

যতটুকু জমি আছে উৎপাদন বাড়ান। সারা বিশ্বে যে দুর্যোগের ঘনঘটার আভাস পাচ্ছি, তার থেকে বাংলাদেশকে সুরক্ষিত করুন। আমি বিশ্বাস করি সবার প্রচেষ্টায় এটা করা সম্ভব।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞায় পরিবহন ব্যবস্থা ব্যয়বহুল হয়ে গেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব এলাকায় খাদ্য উৎপাদন হতো, অনেক জায়গায় উৎপাদন হয়নি। সার, খাদ্য উৎপাদন ও পরিবহনের ক্ষেত্রে বিরাট আঘাত এসেছে। উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে। আমাদের দেশে, আমাদের ব্যবস্থা আগ থেকে নিতে হবে। এটা আমি বারবার বলে যাচ্ছি, আমাদের তা করতে হবে। সরকারের প্রথম কথা ছিল খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। পরবর্তী পদক্ষেপ হচ্ছে পুষ্টির নিশ্চয়তা দেয়া। কারণ পুষ্টিকর ও সুষম খাদ্য অপরিহার্য।
গবেষকদের স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখার অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই দেশের মানুষের আরো উদ্ভাবনী শক্তি বৃদ্ধি পাক। তাদের মেধা বিকাশের সুযোগ হোক, কর্মক্ষমতা বাড়ুক। এটা যত বেশি করতে পারব, তত দ্রুত দেশ উন্নত হবে। খাদ্য অধিকার নিশ্চিত করা মানুষের অধিকার। সেই সঙ্গে দেশ ও রাষ্ট্রকে উন্নত করা মানুষের কর্তব্য। উৎপাদনে ভূমিকা রাখায় কৃষিবিদ ও কৃষকদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের সম্মান করা, সহযোগিতা করা আমাদের অপরিহার্য।
প্রবাসীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, নিজের দেশ, গ্রাম, মাটি ও মানুষকে ভুলে যাবেন না। সেই দিকে নজর দেন। পতিত জমি থাকলে, চাষের আওতায় নিয়ে আসেন। তাহলে দেখবেন, আমাদের দেশ কখনোই পিছিয়ে থাকবে না। সরকার বহু পতিত জমি চাষের আওতায় নিয়ে আসতে পেরেছে। প্রায় ৮০ হাজার হেক্টর পতিত জমি চাষের আওতায় আনা হয়েছে। তাছাড়া কীটনাশক মুক্ত শাকসবজি উৎপাদনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়া কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানিতেও আমরা উদ্যোগ নিয়েছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়