মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ : ফরহাদকে সরানো হচ্ছে, মুস্তাফিজ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ

আগের সংবাদ

সব দলকেই নির্বাচনে চাই

পরের সংবাদ

নতুন চার অঞ্চলে রাশিয়ার সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: অক্টোবর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : গণভোটের মাধ্যমে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় চারটি অঞ্চলকে নিজেদের ভূখণ্ডের অংশ করে নিয়েছে রাশিয়া। রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্তিকরণের বিল রাশিয়ার পার্লামেন্টের দুই কক্ষেই পাস হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট পুতিনও সই করেছেন। এতে এই অঞ্চলগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার হয়ে গেছে। এসব অঞ্চল কেবল রাশিয়ার ভূখণ্ডের আকারই বাড়াবে না, একই সঙ্গে অর্থনীতির জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। কারণ, সাবেক ইউক্রেনীয় এই অঞ্চলগুলো শিল্প ও কৃষির দিক থেকে সম্ভাবনাময়। তবে এক্ষেত্রে রাশিয়াকে বেশকিছু চ্যালেঞ্জও মোকাবেলা করতে হবে। খবর আরটির
স¤প্রতি রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়া ইউক্রেনের সেই চার অঞ্চল হলো খেরসন, জাপোরিঝঝিয়া, দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিকস। গত সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত গণভোটে রাশিয়ায় যোগদানের পক্ষে এসব অঞ্চলের লোকেরা ভোট দেন। এরপর এসব অঞ্চলকে রাশিয়ার অংশ বলে ঘোষণা দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভøালাদিমির পুতিন।
কয়লাভিত্তিক অর্থনীতির কেন্দ্র দনবাস : ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দনবাসের লুহানস্ক ও দোনেৎস্ক এলাকা ইউক্রেনের শিল্পাঞ্চল হিসেবে খ্যাত। এই অঞ্চলে ইউক্রেনের রুশভাষী জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ বসবাস করে। ইউক্রেনের কয়লাভিত্তিক অর্থনীতির কেন্দ্র ছিল এই দনবাস এলাকা।
খনিজসমৃদ্ধ এই অঞ্চলে আছে ইউরোপের চতুর্থ বৃহত্তম কয়লাক্ষেত্র। এখানে উত্তোলনযোগ্য কয়লার মজুত আছে এক হাজার কোটি টনের বেশি। এছাড়া দনবাসে থাকা ১১৫টি কয়লাখনি থেকে বছরে প্রায় ৭ কোটি টন কয়লা উৎপাদিত হয়। দোনেৎস্ক অঞ্চলে আছে আটটি বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র। অন্যদিকে লুহানস্ক হচ্ছে ওই অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ পরিবহনকেন্দ্র। পাশাপাশি এলাকাটি ধাতুবিদ্যা, যন্ত্রপাতি ও কৃষিশিল্পের জন্যও সুপরিচিত। এখানে রাসায়নিক, ওষুধ কারখানা ও বেশ কয়েকটি কয়লাখনি আছে।
শক্তিকেন্দ্র জাপোরিঝঝিয়া : রাশিয়ায় যুক্ত হওয়া ইউক্রেনের আরেক অঞ্চল জাপোরিঝঝিয়ায় আছে ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, জল বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র। ২০১৯-২০ বছরে এই অঞ্চল থেকে প্রায় ৪ হাজার কোটি কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে, যা ইউক্রেনের মোট বিদ্যুতের ২৫-২৭ শতাংশ। তাই এই এলাকাকে ইউক্রেনের শক্তিকেন্দ্র বলা হয়।
কৃষিক্ষেত্রে এগিয়ে খেরসন : জাহাজ নির্মাণের জন্য বিখ্যাত খেরসন অঞ্চল। পাশাপাশি কৃষিক্ষেত্রেও আছে এই অঞ্চলের বড় অবদান। এই অঞ্চলে খাদ্যশস্য, সূর্যমুখী ও বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি উৎপাদিত হয়। উর্বর জমি হওয়ায় এক মৌসুমে কখনো দুই বা তারও বেশি ফসল দিতে পারে। এছাড়া গবাদিপশু প্রজননেও এগিয়ে এই এলাকা।
রাশিয়ার সামনে যেসব চ্যালেঞ্জ : এসব অঞ্চলে রাশিয়ার জন্য অবিশ্বাস্য কৃষি ও শিল্প সম্ভাবনা থাকলেও আছে অনেক চ্যালেঞ্জ। এসব এলাকার উন্নয়নে নতুন করে বড় বিনিয়োগ করতে হবে রাশিয়াকে। তা না হলে যে সম্ভাবনা আছে বলা হচ্ছে, তার সুফল পাবে না রাশিয়া। কিন্তু যুদ্ধ পরিস্থিতিতে এখানে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ। তাৎপার্যপূর্ণ বিষয় হলো- এই চার অঞ্চলের কোনোটাতেই রাশিয়ার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নেই। কোনো কোনো এলাকার উল্লেখযোগ্য ভূখণ্ড ইউক্রেন পুনরুদ্ধার করেছে। এলাকাগুলোতে রাশিয়ার নিয়োগ দেয়া প্রশাসনের প্রতিবেদনেও এসব কথা উঠে এসেছে। সব মিলিয়ে সেখানে বিনিয়োগের পরিবেশ তথা স্থিতিশীলতা একটি দীর্ঘমেয়াদি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়া যদি এই অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগ করে স্থায়ী হতে পারে, তাহলে তারা দেশটির খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে। প্রতিবেশী দেশগুলোতে রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে। সব মিলিয়ে রুশ অর্থনীতিতে লাখ কোটি ডলারের বেশি অবদান রাখতে পারবে এসব অঞ্চল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়