সিনহার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য পেছাল

আগের সংবাদ

জাতীয় গ্রিড আধুনিকায়নে এবার গুরুত্ব দিন

পরের সংবাদ

ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে পুরোদস্তুর কৃষক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রোকনুজ্জামান মিলন, ঝিনাইদহ থেকে : পেশায় ব্যাংকার ছিলেন খন্দকার মিজানুর রহমান। স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে অমৌসুমে ব্লাক বেবি জাতের তরমুজ চাষ করে পেয়েছেন ব্যাপক সফলতা। খন্দকার মিজানুর রহমান ২০১৮ সালে গ্রামের বাড়িতে কিছু জমিতে ড্রাগন ও কুল চাষ শুরু করেন। সপ্তাহের প্রতি বৃহস্পতিবার অফিস শেষ করে বাড়িতে এসে কৃষিকাজ দেখাশোনা করতেন। এরই মধ্যে চাষে সফলতা আসতে শুরু করে। পরে ২০২০ সালে চাকরি ছেড়ে পুরোমাত্রায় শুরু করেন কৃষিকাজ। প্রথমে নিজের পাঁচ বিঘা জমি দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে তার ১৯ বিঘা জমিতে ফল ও সবজির চাষ রয়েছে। বর্তমানে তিনি পেশায় একজন আপাদমস্তক কৃষক। খন্দকার মিজানুর রহমান ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার চাঁদবা গ্রামের মৃত তবিবুর রহমানের ছেলে।
মিজানুর জানান, চলতি বছরের ২৫ জুলাই তিনি ৪০ শতক জমিতে ব্লাক বেবি জাতের তরমুজের বীজ রোপণ করেন। মাত্র দুই মাস পরই ফল সংগ্রহ করতে পারছেন। স্থানীয় ও ঢাকার বেপারীরা ক্ষেতে এসে এ তরমুজ নিয়ে যাচ্ছেন। তরমুজ বিক্রি শেষ হলে খরচ প্রায় ৪০ হাজার টাকা বাদে লক্ষাধিক টাকা লাভ করতে পারবেন বলে তিনি আশা করছেন। মাত্র দুই মাসে ভিন্ন জাতের এ তরমুজ চাষ দেখে গ্রামের অন্য কৃষকরাও উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। এর আগে জেলার বিভিন্ন এলাকায় গোল্ডেন ক্রাউন (হলুদ রঙের) জাতের তরমুজ চাষ হতে দেখা গেছে। এ তরমুজের পাশাপাশি তার বাকি প্রায় ১৮ বিঘা জমিতে রয়েছে মাল্টা, কমলা লেবু, ড্রাগন, কুল, ফিলিপাইন জাতের আখ, আম, ক্যাপসিকাম, ব্রুকলিসহ নাানা জাতের মৌসুমি সবজি।
মিজানুর জানান, ছোটবেলা থেকে তার সখ ছিল কৃষিকাজ করবেন। কিন্তু পরিবারের ইচ্ছায় লেখাপড়া শেষ করে একটি বেসরকারি ব্যাংকে যোগ দেন। তবু নিজের মধ্যে পুশে রাখা স্বপ্ন যেন তাকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াত। তাই শত বাধা সত্ত্বেও গ্রামের বাড়িতে নিজের কিছু জমিতে কৃষিকাজ শুরু করেন। মাত্র দুই বছরে সফলতা পাওয়ায় চাকরি ছেড়ে এখন পুরোমাত্রায় কৃষক তিনি। তার কৃষি কাজ দেখতে এখন বিভিন্ন এলাকা থেকে উদ্যোক্তারা আসছেন। তিনি জানান, প্রতিনিয়ত তিনি কৃষকদের মাধ্যমে খোঁজ করেন কোথায় কী চাষ হচ্ছে। নতুন কিছু মনে হলেই সেখানে ছুটে যান। সেখান থেকে চাষ পদ্ধতি রপ্ত করে নিজেই আবার চাষ করেন। ইউপি সদস্য রবজেল হোসেন বলেন, মিজানুর অসময়ে তরমুজ চাষ করেছেন শুনে দেখতেও গিয়েছিলাম। তরমুজ চাষ করে তিনি এলাকার মানুষের মধ্যে সাড়া ফেলে দিয়েছেন। তার মতো অন্যরাও নতুন নতুন ফল ও ফসলের চাষ করে পারিবারিক সচ্ছলতা আনতে পারেন। কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শিকদার মো. মোহায়মেন আক্তার বলেন, ‘এ মৌসুমে তরমুজের চাষ হয় না বললেই চলে। তবে শিক্ষিত যুবক মিজানুর রহমান বিদেশি জাতের তরমুজ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন, যা অন্য কৃষকদের জন্য অনুকরণীয়। এ জাতের তরমুজ পানি নিষ্কাষণ ও বেলে দো-আঁশ মাটি চাষের জন্য বেশ উপযোগী। আর মান ভালো হলে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে এ জেলার তরমুজের চাহিদা রয়েছে অনেক।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়