হাজারীবাগের বিস্ফোরণ : পা হারানো দিলীপসহ শঙ্কাজনক অবস্থায় ২

আগের সংবাদ

পাঁচ কারণে বাড়ছে ডেঙ্গু!

পরের সংবাদ

চার মাসে ১৫ জন খুন : অপরাধ বেড়েই চলেছে রোহিঙ্গা শিবিরে

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জসিম আজাদ, উখিয়া (কক্সবাজার) থেকে : শরণার্থী শিবিরগুলোতে প্রতিদিন ঘটছে ইয়াবা পাচার, ডাকাতি, খুন ও হত্যা। শুধু তাই নয়, মানবপাচার ও ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে তারা। এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িত অনেক রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ। এমন কি পুলিশের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাও ঘটে থাকে। এ জন্য চরম উদ্বিগ্ন সাধারণ রোহিঙ্গারা।
ইতোমধ্যে অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প। দিন যত যাচ্ছে ভয়াবহভাবে বাড়ছে খুন, ধর্ষণ, অপহরণ ও মাদকসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড।
গত ৪ মাসে রোহিঙ্গা শিবিরে তিন মাঝিসহ অন্তত ১৫ জন খুন হয়েছেন। এদের মধ্য পাঁচজন ছিলেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহারা দেয়া স্বেচ্ছাসেবক। সবাইকে একই কায়দায় হত্যা করেছে রোহিঙ্গা দুস্কৃতিকারীরা। তারা ছাড় দিচ্ছেন না বিভিন্ন সংস্থায় অপরাধীদের তথ্য সরবরাহকারীদেরও।
গত ২২ সেপ্টেম্বর ভোরে উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প-৪ এক্সটেনশনে রাতের আঁধারে এরশাদ (২২) নামে এক রোহিঙ্গা যুবককে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এর আগের দিন ২১ সেপ্টেম্বর উখিয়ার ময়নারঘোনা ক্যাম্প-১৮ তে জাফর নামে এক রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবককে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তার পরিবারের অভিযোগ, কথিত সন্ত্রাসী সংগঠনকে সহযোগিতা না করায় স্বেচ্ছাসেবক মোহাম্মদ জাফরকে নির্মমভাবে খুন করা হয়েছে।
এছাড়াও গত বছর ক্যাম্পে মাদ্রাসায় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের হামলায় প্রাণ হারান ৬ জন। একই বছরে গুলি করে হত্যা করা হয় রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকেও।
তথ্যানুযায়ী গত ৫ বছরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নানা অপরাধের ঘটনায় মামলা হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার। যার অর্ধেকই হয়েছে গত এক বছরে। এর মধ্যে হত্যা মামলা অন্তত ১০০টি, অপহরণ আর মুক্তিপণের ঘটনায় মামলা ৩৯ আর ধর্ষণ মামলা ৮৮টি। সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে মাদক সংক্রান্ত ১ হাজার ৬৩৭টি। মামলার পাশাপাশি খুন হয়েছেন অন্তত ১১৫ জন।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও চরম উদ্বিগ্ন ক্যাম্প কেন্দ্রিক খুনাখুনি আর নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে। তারা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে স্থানীয়দের জানমাল। উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন জানান, রোহিঙ্গাদের একটি অংশ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ায় নিরাপত্তা সংকটে রয়েছে সাধারণ রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয়রাও। উদ্বিগ্ন অবস্থায় জীবনযাপন করছেন তারা। রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন করা না গেলে ভবিষ্যতে আরো বড় হয়ে দেখা দেবে এই সংকট।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা ৮ আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, কতিপয় দুস্কৃতিকারী অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। যার কারণে উদ্বিগ্ন সাধারণ রোহিঙ্গারা। পর্যায়ক্রমে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এরকম উদ্বিগ্ন পরিস্থিতি বন্ধ করতে গোয়েন্দা কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরো জোরদার করা হয়েছে। এছাড়াও প্রতিরাতে প্রতিটা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একাধিক মোবাইল টিম কাজ করছে। দুস্কৃতিকারীদের গ্রেপ্তার করতে পয়েন্টে পয়েন্টে চেকপোস্ট করা হয়েছে। আশা করি ভবিষ্যতে সাধারণ রোহিঙ্গারা নিরাপদে এবং শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন অপরাধের ঘটনায় যেসব মামলা হচ্ছে তা গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ক্যাম্পের বাইরে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়