সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী : সাম্প্রদায়িক সম্প্রীরীতি রক্ষায় সজাগ থাকতে হবে সবাইকে

আগের সংবাদ

পঞ্চগড়ে নৌকাডুবিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫০, এখনো নিখোঁজ অন্তত ২৭ : মরদেহের অপেক্ষায় স্বজনরা

পরের সংবাদ

ঝুঁকি নিয়ে চলাচল : ফানাই নদী পুনঃখননে ভেঙে গেছে ৬ সেতু

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সালেহ এলাহী কুটি, মৌলভীবাজার থেকে : জেলার দক্ষিণাঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে খর¯্র্েরাতা ফানাই নদী। তীর সংরক্ষণ, বন্যা নিয়ন্ত্রণে ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে নদীর ওপর নির্মিত ৬টি গ্রামীণ সড়কের সেতু নদী পুনঃখননের পর ভেঙে ও দেবে গেছে। প্রায় দেড় বছর ধরে সেতুগুলো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন ৪টি ইউনিয়নের ৪০ সহ¯্রাধিক মানুষ। এলজিইডি ও পাউবো পরস্পরের প্রতি পাল্টাপাল্টি অভিযোগে জনগণ পড়েছেন ভোগান্তিতে।
জানা গেছে, কুলাউড়া উপজেলায় ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে ফানাই নদী ২০২১-২২ অর্থবছরে পাউবো প্রায় ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নদীর প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকা এক্সকাভেটর দিয়ে পুনঃখনন করে। কাজ শেষ হওয়ার আগেই নদীর ওপর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে হাসিমপুর-রাঙ্গিছড়া সড়কে ২৫ মিটার দৈর্ঘ্য গেন্দুরা সেতু। আমঝুপা-ত্রিলাশিজুরা সড়কে ২৭ মিটার দৈর্ঘ্য ভবানীপুর সেতু। লস্করপুর-ল²ীপুর সড়কে ২০ মিটার দৈর্ঘ্য গুটগুটি সেতু। পলোকোনা-হিঙ্গাজিয়া সড়কে ২১ মিটার দৈর্ঘ্য কুমিয়া সেতু। এছাড়া বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিবির) আওতায় কুলাউড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উদ্যোগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রায় ৩৩ লাখ টাকা ভবানীপুর- হেলাপুর সড়কে একটি ও ২০১১-১২ অর্থবছরে ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে মুকুন্দপুর-পালগ্রাম সড়কের সেতু ভেঙে ও দেবে গেছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৬টি সেতুর মধ্যে ২টি এক বছর আগে দেবে গেছে। হাসিমপুর-ল²ীপুর সড়ক দিন দিন দেবে যাচ্ছে। এলজিইডি সাইন আর লাল পতাকা বাঁধা রয়েছে। এটা দেখে ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষ ও যান চলাচল করছে। ভবানীপুর-নর্তন রাস্তার কাজল মিয়ার বাড়ির পাশে সেতুটিরও একই অবস্থা। ৫ মাস আগে উজান ঢলে মুকুন্দপুর-পালগ্রামে সড়কে নির্মিত সেতুটি দুইপাশ ভেঙে গিয়ে সেতু পুরোপুরি দেবে যাচ্ছে। বাঁশের সাঁকো দিয়ে মানুষ চলাচল করছে।
রাউৎগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আকবর আলী সোহা বলেন, আমার ইউনিয়নে ফানাই নদীর ওপর তিনটি সেতুই নষ্ট। কী কারণে এই ব্রিজগুলো নষ্ট হয়েছে তিনি জানেন না। তবে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুগুলোর তালিকা পাঠিয়েছি। কুলাউড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শিমুল আলী বলেন, এডিবির আওতায় নির্মিত সেতু দুটি এখন আর সংস্কারের কোনো সুযোগ নেই। নতুন করে বরাদ্দ হলে পুনঃনির্মাণ করা হতে পারে। এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী আজীম উদ্দীন সরদার, অপরিকল্পিত নদী পুনঃখননকে দায়ী করে বলেন, ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে ফানাই নদী খননকালে আমরা অবগত হই যে এলজিইডির সেতুগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে। আমরা তাৎক্ষণিক চারটি পরিদর্শন করি। এ সময় আমরা দেখতে পাই সেতুর মাঝখানের পিলার নিচ থেকে মাটি তুলে নেয়ার কারণে ল²ীপুর সেতুর মধ্যবর্তী স্থান ধসে গেছে। অপরিকল্পিত নদী পুনঃখননের কারণে এ অবস্থা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ৪টি সেতু নির্মাণের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অপরিকল্পিত নদী পুনঃখননের অভিযোগ অস্বীকার করে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, ডেল্টা প্লান বাস্তবায়নে ২০২১ সালে ফানাই নদী খনন কাজ শেষ হয়। দ্রুত পাহাড়ি ঢলের পানি নিষ্কাশনের জন্য ফানাই নদী পুনঃখনন করা হয়েছে। নদীর পরিমাপ অনুযায়ীই এ কাজ হয়েছে। সেতুটি অনেক আগে করা হয়েছে। এ সময় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নদীর পরিমাপ বিবেচনায় আনেনি। ফলে সেতুর এ অবস্থা ঘটেছে। তিনি আরো বলেন, পানি উন্নয়নে জায়গায় কোন সেতু নির্মাণে পাউবো সঙ্গে পরামর্শ নেয়ার বিধান রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়