এস আর সেলিম, দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) থেকে : দৌলতপুর উপজেলায় অচিরেই শতভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হতে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের মেয়াদে উপজেলার ২৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে চলতি বছরেই এমপিওভুক্তির আওতায় এসেছে ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এমপিওর আওতায় আসতে উপজেলাটিতে বাকি আছে হাতেগোনা আর মাত্র কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিকভাবে এমপিওভুক্তি এবং শতভাগ এমপিওভুক্তির সম্ভাবনাময় পরিস্থিতি পাঠদানে আগ্রহ ও অনুপ্রেরণা বাড়িয়েছে শিক্ষকদের। নিষ্ঠা বেড়েছে কর্মচারীদেরও।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বছরে দৌলতপুর উপজেলায় এমপিওর আওতায় এসেছে ১৫টি প্রতিষ্ঠান। নিম্নমাধ্যমিক থেকে মাধ্যমিকে উন্নীত হওয়ার পাশাপাশি এমপিওভুক্ত হয়েছে- উপজেলার পিপুলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, জিটিসিপি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মঈন উদ্দিন বিশ্বাস মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং কিশোরীনগর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। নিম্নমাধ্যমিকের কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতির সঙ্গে এমপিওভুক্তির তালিকায় উঠেছে- প্রান্তিক নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়, দীঘলকান্দি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়, বোয়ালিয়া নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়, হাসানপুর নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়, পিকেসি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং জিএন নিম্নম্যাধ্যমিক বিদ্যালয়। এছাড়া অপর ৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ মাদ্রাসা বিভাগে এমপিওভুক্তির আওতায় এসেছে উপজেলার ফয়সাল ওয়াজেদ দাখিল মাদ্রাসা।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় এখনো ৫-৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং এর প্রায় ৫০ জন শিক্ষক-কর্মচারী এমপিওভুক্তির আওতায় আসতে পারেননি, তারা পাইপলাইনে রয়েছেন। এই প্রতিষ্ঠানগুলো হয়ে গেলেই শতভাগ এমপিওভুক্ত হয়ে যাবে। এর মধ্য দিয়ে এ উপজেলায় শিক্ষা উন্নয়নক্ষেত্র আরো গতিশীল হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মজিবর রহমান জানান, চার ধরনের যোগ্যতা অর্জন করলে সাধারণত প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকারের পক্ষ থেকে এমপিওর আওতায় আনা হয়। স্থানীয় সংসদ সদস্যের আন্তরিকতা ও শিক্ষকদের সম্মিলিত চেষ্টায় এখানে সার্বিকভাবে শিক্ষা ব্যবস্থায় অনেক উন্নয়ন হয়েছে। সরকারের বর্তমান মেয়াদে এখানকার শিক্ষা খাতে রেকর্ড পরিমাণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটেছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সরদার মোহাম্মদ আবু সালেক বলেন, বর্তমানে ৯০টি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ উপজেলায় রয়েছে। এখানে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১টি এবং সরকারি কলেজের সংখ্যা ১টি। যদিও এই প্রতিষ্ঠান দুটিতে এখনো সরকারি সুবিধা আসতে শুরু করেনি।
সম্প্রতি জাতীয় সংসদে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ এবং শিক্ষকদের অধিকার বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে জোরালো বক্তব্য দিয়ে দেশব্যাপী সমাদৃত হন কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনের সংসদ সদস্য আ কা ম সরওয়ার জাহান বাদশাহ্। এরপর থেকেই দৌলতপুর উপজেলার শতভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করার বিষয়ে তোড়জোড় শুরু হয়। এতে অবশিষ্ট ননএমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নে আশার সঞ্চার হয়েছে।
সংসদ সদস্য আ কা ম সরওয়ার জাহান বাদশাহ্ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশের সার্বিক উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে। জাতির মেরুদণ্ড মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রসারে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় আগামী নির্বাচনের আগে শুধু কুষ্টিয়া বা দৌলতপুর নয়, সারাদেশেই যোগ্যতা সম্পন্ন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওর আওতায় আনবে বর্তমান সরকার।
এ উপজেলার বাদবাকি প্রতিষ্ঠানগুলো অচিরেই এমপিওভুক্তির আওতায় আসবে। এর মধ্য দিয়ে এখানকার শতভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিও সম্পন্ন হবে।