সহিংসতা প্রতিরোধে মাঠে থাকবে ১৪ দল

আগের সংবাদ

পঞ্চগড়ে নৌকা ডুবে নিহত ২৫, নিখোঁজ অর্ধশতাধিক : করতোয়া তীরে শোকের মাতম

পরের সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্রে হিন্দু নেতাদের কথা শুনলেন প্রধানমন্ত্রী : ১০ দফা দাবির স্মারকলিপি প্রদান

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধের জন্য জরুরি পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনুরোধ জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা। এ সময় তারা প্রধানমন্ত্রীকে ১০ দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপিও দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে এখন নিউইয়র্কে রয়েছেন। সেখানেই তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এসব দাবি জানান। যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার প্রভাষক ডক্টর দ্বিজেন ভট্টাচার্য্যরে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। সবমিলিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে হিন্দু নেতাদের কথা শোনেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় স্থায়ী ওই সভায় প্রতিনিধি দলের প্রত্যেকের বক্তব্য প্রধানমন্ত্রী মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং তাদের দাবি ও উদ্বেগের বিষয় নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেন। এ সময় তারা সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন, পূজার সময় নিরাপত্তা জোরদার করার বিষয়টিও প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনেন। প্রধানমন্ত্রী প্রতিনিধিদের স্পষ্ট ভাষায় বলেন, বাংলাদেশে সব নাগরিকের সমান অধিকার রয়েছে এবং সংখ্যালঘু নির্যাতকদের বিচার সব সময়ই হচ্ছে। আইনের হাত থেকে কোনো অপরাধীই রেহাই পাবে না বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বরাবর দেয়া স্মারকলিপিতে যুক্তরাষ্ট্রের হিন্দু নেতারা যেসব দাবি তোলেন তার মধ্যে রয়েছে- বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন করে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এপর্যন্ত সংঘটিত সব সংখ্যালঘু নির্যাতনের শ্বেতপত্র তৈরি করে প্রকাশ করতে হবে, অবিলম্বে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারপতি সাহাবুদ্দীন কমিশন রিপোর্টে চিহ্নিত সংখ্যালঘু নির্যাতকদের বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিদানের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে, যারা নির্যাতনের শিকার তাদের সার্বিক পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতে’র মিথ্যা অজুহাতে আটক এবং এই ‘অপরাধে’ শাস্তি পাওয়া সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের সবাইকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে পুলিশকে এই অমানবিক নিষ্ঠুরতা বন্ধ করার নির্দেশ দিতে হবে। এছাড়া, ইউনেস্কো স্বীকৃত বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য দুর্গাপূজা ও শারদোৎসবসহ সব প্রধান পূজাপার্বণে কঠোর নিরাপত্তা দিতে হবে। একটি আইন পাশ করে সব সংখ্যালঘু নির্যাতকদের ওই আইনে বিচার করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন ও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় করার পাশাপাশি সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন পাস করতে হবে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আদলে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ফাউন্ডেশন গঠন করতে হবে। সংখ্যালঘু নির্যাতক ও এর সাহায্যকারীদের নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে হবে। পার্বত্য শান্তিচুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে এবং ১৯৭২ সালের সংবিধান পুনর্বহাল করে দেশের সব নাগরিকের সমঅধিকার দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করা নেতাদের মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা প্রভাষক ড. দ্বিজেন ভট্টাচার্য্য, জগন্নাথ হল এলামনাই এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ও মহামায়া মন্দিরের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট শ্যামল চক্রবর্তী, ইউনাইটেড হিন্দুজ অফ আমেরিকার সিনিওর ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের ডিরেক্টর ভজন সরকার, যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক ও বাংলাদেশ পূজা সমিতির ডিরেক্টর বিষ্ণু গোপ এবং মূল ধারার রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত যুক্তরাষ্ট্র যুব ঐক্য পরিষদের প্রেসিডেন্ট দিলীপ নাথ। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সেখানে আরো উপস্থিত ছিলেন একজন প্রতিমন্ত্রী, একজন এমপি ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত, নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ও ডেপুটি কনসাল জেনারেল এবং সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়