ইসমাইল হোসেন বাবু, ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) থেকে : শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত হালিমা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও হালিমা সুপার মার্কেটের দক্ষিণপার্র্শ্বে কুব্বাত সুপার মার্কেটে ঢাকা ডেন্টালের সামনে খোলা জায়গায় একটি চালাঘর। সেখানে প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে পপুলার চা বিক্রেতা মস্তানের চা বিক্রি।
মোস্তফা আলী মস্তানের চা অনেক সুস্বাদু ও সুখ্যাতি থাকায় স্কুল কলেজের ছাত্র, ব্যবসায়ী, ডাক্তার, চাকরিজীবী, পথিক সবাই তার তৈরি করা চায়ের ভক্ত ও ক্রেতা। সকাল থেকেই সিরিয়াল অনুসারে তার চা দেয়া শুরু হয়। ভোরের কাগজ প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপচারিতায় উঠে আসে চা বিক্রির কাহিনী ও সংসারের কথা।
ভেড়ামারা উপজেলার ধরমপুর ইউনিয়নের সাতবাড়ীয়া গ্রামের মৃত ওমর আলীর চার সন্তানের সর্ব কনিষ্ঠ মো. মোস্তফা আলী মস্তান। বাবার অভাবের সংসারে তার বেড়ে উঠা যে কারণে ছোটবেলা থেকেই বাবাকে সহায়তা করতে শিশুশ্রম বিক্রি করতে হয় তাকে। তার স্বাদ ছিল লেখাপড়া শিখে মানষের মত মানুষ হওয়া কিন্তু বিধিবাম, দারিদ্রতার সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে তার সে স্বপ্ন সাধ পূরণ হয়নি কোনোদিন।
মো. মোস্তফা আলী মস্তান ১৯৯৫ সাল থেকে টানা ২৭ বছর চা বিক্রি পেশার সঙ্গে যুক্ত। সারাদিন চা বিক্রি করে তার কোনোদিন ১৫০০ আবার কোনোদিন ১২০০ কোনোদিন ১০০০ টাকা লাভ হয়। আর এ লাভের টাকা দিয়েই চলে তার সংসার।
ব্যক্তি জীবনে মো. মোস্তফা আলী মস্তানের ২ ছেলে, ১ মেয়ে ও ১ স্ত্রী নিয়ে বসবাস। বাড়িঘর তেমন নির্মাণ না করতে পারলেও তার ঘুণেধরা স্বপ্ন সাধ ছেলে মেয়েদের দিয়ে পূরণ করতে চান। তাইতো তিনি ছেলেমেয়েদের করে তুলেছেন স্কুলমুখী। তার বড় মেয়ে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে অনার্স ১ম বর্ষের ছাত্রী। বড় ছেলে অনিক হোসেন ভেড়ামারা আদর্শ কলেজের একাদশ শ্রেণির এবং ছোট-ছেলে ভেড়ামারা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র।
জীবন সংগ্রামে বহু ঘাত-প্রতিধাতের সঙ্গে যুদ্ধ করা মো. মোস্তফা আলী মস্তান তার ঝুঁপড়ি দোকানটি বড় করতে চান। এজন্য তার বড় পুঁজি দরকার যা তার স্বাধ পূরণে বড় অন্তরায়। ভেড়ামারা চা বিক্রেতা মো. মস্তানের জীবনের গল্পের শেষ এখানেই নয়। তার সন্তানরা হতে পারে তার স্বপ্ন সাধ পূরণের বড় হাতিয়ার।