কাগজ প্রতিবেদক : আগামী ১৬ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়ায় পর্দা উঠছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অষ্টম আসরের। এর আগে নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ড সফরের আগে দুবাইয়ে অনুশীলন ক্যাম্প করবে টাইগাররা। এর ফাঁকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে দুটি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে টাইগার বাহিনী। ম্যাচ দুটি হওয়ার সম্ভাব্য তারিখ ২৫ ও ২৭ সেপ্টেম্বর। ২৮ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরে ৩০ সেপ্টেম্বর নিউজিল্যান্ডের উদ্দেশে উড়াল দেবে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল। ২ অক্টোবর ক্রাইস্টচার্চে পৌঁছাবে সাকিব-মিরাজরা।
টি-টোয়েন্টির নতুন টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট শ্রীধরন শ্রীরামের অধীনে তিনদিনের ম্যাচ সিনারিও ক্যাম্প করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। কিন্তু বৃষ্টির কারণে সে ক্যাম্প ফলফসূ হয়নি। অন্যদিকে বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি রাখতে চায় না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। মূলত এ কারণেই আমিরাতে ক্যাম্পের আয়োজন করা হচ্ছে।
বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী গতকাল এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, যেহেতু আমাদের এখানে অনুশীলনের জন্য আবহাওয়া সাপোর্ট করছিল না, সেজন্য আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সহযোগী কিছু দেশের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি। আমরা একটা ক্যাম্প বা প্রস্তুতি সেশন যাই বলেন না কেন, সেটা আরব আমিরাতে আয়োজন করব। ওদের জাতীয় দলের সঙ্গে আমাদের দুটো ম্যাচ হবে। কথাবার্তা হচ্ছে আমাদের। সে মোতাবেকই আমরা এগোচ্ছি। তিনি যোগ করেন, আমাদের ২২ তারিখে যাওয়ার বিষয়ে একটা পরিকল্পনা রয়েছে। ২২ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত। ২৮ তারিখ আমরা খুব সম্ভবত ব্যাক করব। এই সময়ের ভেতর আমাদের অনুশীলন ও দুটো প্র্যাকটিস ম্যাচ হওয়ার কথা রয়েছে। সেভাবেই আমরা আরব আমিরাত ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।
অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বকাপের জন্য আরব আমিরাতে ক্যাম্প করে কতটা ফলপ্রসূ হবে সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কন্ডিশনের চেয়ে নিজেদের স্কিল শাণিত করার জন্যই এই ক্যাম্প আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানান প্রধান নির্বাহী, আসলে কন্ডিশনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো এখানে আবহাওয়ার কারণে খুব একটা সুযোগ আমরা পাইনি প্র্যাকটিসের। এই বিষয়গুলো বিবেচনা করেই এটা টিম ম্যানেজমেন্টের পরিকল্পনা, সে অনুযায়ী আমাদের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে।
কন্ডিশনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, ম্যাচ পরিস্থিতি এবং অন্য যে অনুশীলন সুবিধা দুবাই স্পোর্টস সিটিতে আছে, সেগুলো আমরা কাজে লাগাতে পারব। দুবাইয়ের সুযোগ-সুবিধা ব্যবহারের পাশাপাশি এই ক্যাম্পকে ঘিরে টিম ম্যানেজমেন্টের বিশেষ পরিকল্পনার কথাও বললেন প্রধান নির্বাহী। তিনি জানান, শুধু যে ওখানকার সুযোগ-সুবিধার জন্যই যাওয়া হচ্ছে, তা নয়। আরো কিছু পরিকল্পনা তো আছে। সব ব্যাপারগুলো ওভাবে সামনে না এনে আমাদের ফোকাস থাকবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য দলকে পুরোপুরি তৈরি করা।
তবে এই অনুশীলন পর্বে ও দুই ম্যাচের সিরিজে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে পাওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে বড় অনিশ্চয়তা। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে খেলতে তাকে আগেই ছুটি দিয়ে রেখেছে বোর্ড। তার ব্যাপারে টিম ম্যানেজমেন্ট সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানান বোর্ডের প্রধান নির্বাহী, সাকিব আল হাসানকে আগেই একটা ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের জন্য অনাপত্তিপত্র দেয়া আছে। ওই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। টিম ম্যানেজমেন্টই সিদ্ধান্ত নেবে, ওই সময়ে তাকে ফিরিয়ে আনার কতটুকু দরকার আছে। এদিকে বিশ্বকাপ ও নিউজিল্যান্ড সিরিজের দলের পাশাপাশি স্ট্যান্ড বাই তালিকায় থাকা চার ক্রিকেটারকেও এই ক্যাম্পে রাখা হবে। হুট করেই পরিকল্পনাটা হওয়ায় কোচিং স্টাফের সবাইকে এই ক্যাম্পে পাওয়া নিয়ে সংশয় এখনো আছে। তবে সবাইকে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানালেন প্রধান নির্বাহী।
এদিকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের সব টিকিট বিক্রি শেষ হয়েছে। গতকাল আইসিসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমান বরাদ্দ অনুসারে ২৭ অক্টোবর সিডনির বাংলাদেশ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। বাড়তি টিকিট ছাড়ার আগ পর্যন্ত আগ্রহী দর্শকদের অপেক্ষা করতে বলা হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, এরই মধ্যে ৫ লাখের বেশি টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। ১৬টি আন্তর্জাতিক দলের সেরা খেলোয়াড়দের দেখতে ৮২টি দেশের দর্শক টিকেট কিনেছেন। ২০২০ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে ৮৬ হাজার ১৭৪ জন দর্শকের রেকর্ড উপস্থিতির পর এবারই প্রথম আইসিসির ইভেন্টে গ্যালারি ভর্তি দর্শক ফিরছে।
১৬ দল নিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হবে ১৬ অক্টোবর। প্রথমে আটটি দল দুটি গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে প্রথম রাউন্ডে। দুই গ্রুপ থেকে সেরা ৪ দল উঠবে সুপার টুয়েলভে, যেখানে আগে থেকেই জায়গা করে নিয়েছে ৮টি দল। বাংলাদেশ দল আছে সুপার টুয়েলভে। ২৪ অক্টোবর সাকিব আল হাসানদের বিশ্বকাপ অভিযান শুরু হবে প্রথম রাউন্ড থেকে উঠে আসা এ গ্রুপের রানার্সআপ দলের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। দ্বিতীয় ম্যাচ ২৭ অক্টোবর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। ৩০ অক্টোবরের প্রতিপক্ষ বি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দল। এরপর ২ নভেম্বর ভারত আর ৬ নভেম্বর পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ।