২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু : হাসপাতালে ভর্তি ৩৫৩

আগের সংবাদ

সমান সুযোগের রূপরেখা নেই : ইসির রোডম্যাপ

পরের সংবাদ

বৃষ্টিতে স্বস্তি : আমন চাষিদের মুখে হাসি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ঘোর বর্ষার মৌসুম আষাঢ়-শ্রাবণে বৃষ্টির দেখা পাননি কৃষকরা। তবে ভাদ্রের শেষ সপ্তাহে ভারি বৃষ্টিতে প্রাণ পেয়েছে তারা। পানিতে ভরে উঠেছে কৃষিজ জমি, ডোবা, নালা। আমন ধান ও পাট চাষিরা ফিরে পেয়েছেন স্বস্তি। ৫৯ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের শীষ জাগার সম্ভাবনা জেগেছে। তবে আগামী দুদিনের মধ্যে বৃষ্টি কমে যাওয়ার আশা করছে আবহাওয়া অফিস।
গত ৩ দিন ভারি বৃষ্টি হয়। সারাদিন ঝরেছে বৃষ্টি। এই বৃষ্টি উপেক্ষা করে জমি তৈরি ও আমনের চারা রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েন নড়াইলের কৃষকরা। তেমনি কৃষকদের পাটে জাগ দেয়া সহজ হয়েছে। কৃষকরা জানান, এ বছর আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে বৃষ্টি হয়নি। ফলে চাষের জন্য জমি তৈরিতে পানির কষ্ট পেতে হয়েছে। আমন মৌসুম শুরুর পর থেকে অনাবৃষ্টি। এ কারণে প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল আমন ধান চাষিরা পানি সংকটে জমি তৈরিসহ চারা রোপণ করতে পারেননি। পাট চাষিরা পাট জাগ দিতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। জমিতে রোপণ করা ধানের চারাও শুকিয়ে যেতে শুরু করেছিল। বৃষ্টির ফলে সেগুলো এখন নতুন জীবন পেতে শুরু করেছে। বৃষ্টির মৌসুম শেষ। তবু গত ৩ দিনের বৃষ্টিতে ওইসব জমিতে পানি জমায় এবং ডোবা-নালা পানিতে ভরে যাওয়ায় কৃষকরা স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন।
কালিয়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কালিয়ায় ২৬ হাজার ৪৩৫ হেক্টর আবাদ যোগ্য জমি রয়েছে। চলতি বছর ১১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সেচ সুবিধা বহির্ভূত জমির পরিমাণ প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমি। আর ৪ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে পাট উৎপাদন করা হয়েছে যেগুলো জাগ দিতে পানির ঘাটতি দেখা দিয়েছিল। এ সময়ে বৃষ্টি না হলে কৃষকের প্রায় ৯৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা মূল্যের ১৩০ টন ডিজেল খরচ লাগত।
কৃষি অধিদপ্তরের সূত্রে জানা যায়, সারাদেশে ৫৯ হাজার হেক্টর জমিতে আমনের চাষ হয়। কিন্তু বৃষ্টির না হওয়ায় ইতোপূর্বে রোপণকৃত আমনের চারা প্রায় শুকিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু টানা বর্ষণে সেগুলো যেন আবার নতুন জীবন পেতে শুরু করেছে। সব মিলিয়ে কৃষকরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। বৃষ্টি দেখে তারা কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন।
কৃষি অধিদপ্তরের সরেজমিন উইংয়ের পরিচালক হাবিবুর রহমান চৌধুরী ভোরের কাগজকে বলেন, গত কয়েক দিনের বৃষ্টি রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলের কৃষকদের জন্য খুবই উপকারী। আমন ধানের চাষ এই অঞ্চলে বেশি হয়। অনাবৃষ্টির দুর্যোগ কাটিয়ে কাক্সিক্ষত বৃষ্টিতে আমন ধানের চাষ সহজ হয়ে উঠেছে। যদি বৃষ্টি না হত সেচের জন্য লাখ লাখ টাকার ডিজেল প্রয়োজন হত। যারা নির্দিষ্ট সময়ের আগে আমন ধান লাগিয়েছে তারা সূর্যালোক বেশি পেয়েছে, সেই সঙ্গে বৃষ্টি। দুটিই তাদের জন্য খুবই উপকৃত হয়েছে। কৃষকের প্রয়োজন মুহূর্তে বৃষ্টি হচ্ছে।
অন্যদিকে নদীর পানি বেড়ে যাওয়া এবং টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় কয়েকশ একর রোপা আমনের জমি তলিয়ে গেছে। ফলে নষ্ট হচ্ছে জমিতে রোপণ করা ধানের চারা। এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম বলেন, এ বছর বর্ষার পানি দ্রুত সময়ে চলে যাওয়ায় কৃষকরা তাদের জমিতে আমন ধান রোপণ করেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ পানি বাড়ায় জমিতে ধানের চারা নষ্ট হয়ে গেছে। এতে কয়েকশ একর ধানের জমি পানিতে তলিয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করে তাদের সহযোগিতা দেয়া হবে বলে উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় আজকে (বৃহস্পতিবার) সারাদেশে ভারি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। সমুদ্র বন্দরগুলোকে তিন নম্বর সর্তকতা সংকেত দেখানো হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টার আবহাওয়া অধিদপ্তর পূর্বাভাসে বলা হয়, সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি ভারতের মধ্যপ্রদেশ ও এর কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। এটি ক্রমাগত দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় গভীর সঞ্চরণশীল মেঘমালার সৃষ্টি হচ্ছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন জানান, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়াগায় হালকা দমকা হাওয়াসহ মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। আগামী দুদিনের বৃষ্টির প্রবণতা কমে যেতে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়