একদিনে ২৭৮ করোনা রোগী শনাক্ত

আগের সংবাদ

দেশীয় কয়লা উত্তোলনে গুরুত্ব : বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে নীতি ও পরিবেশ, বিশ্বে কয়লার ব্যবহার বেড়েছে

পরের সংবাদ

মহম্মদপুরে আইনশৃঙ্খলার অবনতি : দেড় মাসে ৭ সংঘর্ষে নিহত দুই, শতাধিক আহত

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মুরাদ হোসেন, মহম্মদপুর (মাগুরা) থেকে : মাগুরার মহম্মদপুরের শান্ত জনপথ অশান্ত হয়ে উঠেছে। গত ৪৬ দিনে ৭টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এই অপ্রীতিকর ঘটনায় দুইজন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন প্রায় শতাধিক। বসতবাড়িসহ দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে। এতে লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। উপজেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়েও সাধারণ মানুষের মনে নানা প্রশ্ন উঠেছে। সংঘর্ষ বেড়েই চলেছে। এতে উপজেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, ফুটবল খেলা, পারিবারিক কলহ ও বিরোধসহ বিভিন্ন ছোটখাটো ঘটনাকে কেন্দ্র করে এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে মহম্মদপুর থানা পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে আটকও করা হয় কয়েকজনকে। ১৪ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও পরিদর্শন করেছেন ঘটনাস্থল। জানা যায়, গত ২৩ জুলাই উপজেলার পলাশবাড়ীয়া ইউনিয়নের চরঝামা গ্রামে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত হয় নবম শ্রেণির মাদ্রাসাছাত্র মো. হাসিবুল ইসলাম। এ সময় আহত হয়েছেন অনেকে। এ নিয়ে এলাকায় ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। গত ২৬ জুলাই পলাশবাড়ীয়া ইউনিয়নের কালিশংকরপুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুইপক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ১৫টি বসতবাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয় এবং নারীসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
১ সেপ্টেম্বর উপজেলার নহাটা ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুইপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরই জেরে পরের দিন ইউনিয়নের চাকুলিয়া, বেজড়া, নারানদিয়া ও পানিঘাটাসহ কয়েকটি গ্রামে দুইপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে নারীসহ ৩০ জন আহত হয়। ৪ সেপ্টেম্বর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের উরুরা গ্রামে পূর্ববিরোধের জের ধরে দুইগ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং বসতবাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এর জের ধরে পার্শ্ববর্তী কানুটিয়া বাজার থেকে কৃষক আতর লস্করকে (৬০) কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে প্রতিপক্ষের লোকজন। চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়ার পথে মারা যায়। গত ৬ সেপ্টেম্বর উপজেলার বিনোদপুর হাইস্কুল মাঠে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ঘুল্লিয়া ও বিনোদপুর গ্রামবাসীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং উভয় পক্ষকে থানায় এনে বিশৃঙ্খলা বা অপ্রীতিকর ঘটনা আর হবে না মর্মে অঙ্গীকার করেন। এরপরও এদিন রাতে ঘুল্লিয়া গ্রামের লোকজন বিনোদপুর গ্রামের রাজিবকে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে। এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে বিনোদপুর বাজারে ঘুল্লিয়া গ্রামের ব্যবসায়ীদের দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। এ ঘটনায় ৮ জনকে আটক করে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজিব ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। অন্যদিকে এদিন (৬ সেপ্টেম্বর) বিকালে উপজেলার বাবুখালীতে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গত ৭ সেপ্টেম্বর উপজেলার দীঘা ইউনিয়নের জনার্দনপুর গ্রামে পারিবারিক কলহের জেরে ভাই ও ভাতিজার লাঠির আঘাতে আহত মো. ওমেদ ও তার স্ত্রী আয়শা দম্পত্তি। এই দম্পত্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
মহম্মদপুর থানার ওসি অসিত কুমার রায় বলেন, আধিপত্য বিস্তারসহ ছোটখাটো বিষয় নিয়ে অনাকাক্সিক্ষত কয়েকটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। এলাকাকে শান্ত রাখতে এবং উপজেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনে আরো কঠোর হবে পুলিশ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়