বাম গণতান্ত্রিক জোটের হুঁশিয়ারি : দমন-পীড়ন করে গদি রক্ষা করা যাবে না

আগের সংবাদ

চার কারণে ভ্যাট আদায়ে বিপর্যয়

পরের সংবাদ

বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্নে আমিরাতে নিগাররা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আগামী বছর দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত হবে নারীদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর। আসন্ন বিশ্বকাপকে সামনে রেখে আগামী ১৪ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হবে আট দলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ। এবারের আসরে সরাসরি মূল পর্বে জায়গা পায়নি বাংলাদেশ। এর ফলে টাইগারদের পার হতে হবে বাছাইপর্ব। ১৮ অক্টোবর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে নিগারদের বাছাইপর্বের মিশন।
২০১৪ সাল থেকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিয়মিত অংশগ্রহণ করছে বাংলাদেশ। অথচ মূল আসরে ১৬ ম্যাচে জয় মাত্র একটি। সেটাও ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কাকে ৩ রানে হারিয়ে। অথচ বাছাইপর্বে ২০১৬ ও ২০২০ সালে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন, ২০১৮ সালে রানার্সআপ। সংযুক্ত আরব আমিরাতের কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে গতকাল দেশ ছাড়ে টাইগাররা। সফরপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার পারফরম্যান্সের এ ধারাবাহিকতা বজায় রেখে টুর্নামেন্ট সেরা হওয়ার আশা ব্যক্ত করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য থাকবে অবশ্যই কোয়ালিফাই করা। আয়ারল্যান্ড ভালো দল। তবে যদি পরিসংখ্যান দেখেন, আমাদের বিপক্ষে তাদের জয় কম। সেদিক থেকে আমি বলব যে, আমাদের দল ফেভারিট এই জায়গায়। আমরা দল হিসেবে লম্বা সময় ধরে একসঙ্গে খেলছি। আমাদের যে সম্ভাবনা আছে, সেটা অনুযায়ী যদি ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করতে পারি, ব্যাটাররা যদি ভালো করতে পারে, আমার কাছে মনে হয় আমরা ফেভারিট হয়েই থাকব। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৯ টি-টোয়েন্টি খেলে ৬টিতেই জিতেছে বাংলাদেশ। আইরিশদের বিপক্ষে সবশেষ ৫ ম্যাচে জয় ৪টি। দলীয় ঐক্যদলের বড় শক্তি বলে জানালেন অধিনায়ক নিগার, আমাদের এই দলটি দীর্ঘদিন একসঙ্গে খেলছে। তাই সবাই সবার খেলাটা সম্পর্কে জানি। নিজেদের ওপর বিশ্বাস আছে। আমাদের এই একতা আমাদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হতে পারে কন্ডিশন। কারণ এর আগে কখনোই দেশটিতে খেলেনি বাংলাদেশের মেয়েরা। এছাড়া প্রচণ্ড গরম ও আর্দ্রতায় মানিয়ে নেয়া সব দলের জন্যই চ্যালেঞ্জ। টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার সময় দেশটির আবহাওয়ার সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে উঠার প্রত্যয় নিগারের, এজন্যই কিন্তু আমরা আগে যাচ্ছি। আইসিসি প্রোগ্রাম শুরু ১৪ তারিখ থেকে। মানিয়ে নেয়ার জন্যই ক্রিকেট বোর্ড আমাদের আগে নিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি আমরা দেখেছি ছেলেদের এশিয়া কাপে, কতটা বাজে আবহাওয়া ওখানে। সবারই মানিয়ে নেয়া কষ্টকর। আমরা যেহেতু আগে যাচ্ছি, চেষ্টা করব যতটা সম্ভব ওই আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে।
২০২০ সালে মার্চে অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর এই সংস্করণে খুব বেশি খেলা হয়নি বাংলাদেশের। এছাড়া করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল খেলা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও এই সংস্করণে কোনো দ্বিপক্ষীয় সিরিজ আয়োজন করতে পারেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। গত আড়াই বছরে মাত্র চারটি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেছে বাংলাদেশ। তবে জাতীয় লিগে টি- টোয়েন্টি সংস্করণে খেলেছেন টাইগাররা। এই প্রস্তুতির ওপরই তাদের ভরসা রাখতে হচ্ছে তাদের। নিগার বলেন, গত দুই বছরে আমরা খুব কম টি-টোয়েন্টি খেলেছি। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেছি। যেভাবে আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি, আমাদের নিজেদের জন্য হোক বা ওখানকার কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে ওখানে আমরা দু-তিনটি ম্যাচ খেলতে পারি, তাহলে ভালো হবে আমাদের জন্য।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের লম্বা বিরতি পড়লেও সামনে এই শঙ্কা আর নেই বললেই চলে। বিশ্বকাপ বাছাই থেকে ফেরার পরই দেশে এশিয়া কাপের আসর হবে সিলেটে। এছাড়া উইমেনস চ্যাম্পিয়নশিপে জায়গা করে নেয়ায় নিয়মিত আন্তর্জাতিক ম্যাচ থাকবে তাদের। এছাড়া খেলবে দ্বিপক্ষীয় সিরিজও। নিগারের আশা, দ্বিপক্ষীয় সিরিজগুলোয় ভালো করে র‌্যাংকিংয়ে উন্নতি করা, যাতে সামনে আর এভাবে বিশ্বকাপ বাছাই খেলতে না হয়।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা চাই না এই বাছাইপর্ব আর খেলতে। সবসময়ই একটা ঝামেলার ব্যাপার থাকে এটা। এক ধরনের চাপও থাকে। যেহেতু আমরা এফটিপিতে ঢুকে গেছি, অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে আমরা ওয়ানডের পাশাপাশি টি-টোয়েন্টিও খেলব। যখন আমরা টি-টোয়েন্টি সিরিজগুলো খেলব, সিরিজ জয়ের জন্য তো অবশ্যই খেলব, পাশাপাশি এরকম লক্ষ্য থাকবে যেন পরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সরাসরি খেলতে পারি। দলের পেসার মারুফা জানান, এখন সবার থেকেই বেশ ভালো সমর্থন পাচ্ছেন তিনি। একইসঙ্গে তার বাবা আরো ভালো খেলার তাগিদ দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে মারুফা বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, অনেক ভালো লাগছে। সবাই অনেক খুশি হয়েছে, বাবা বলেছে আরো ভালো খেলতে হবে। সামনে আরো সুযোগ আসবে সেগুলো কাজে লাগিয়ে ভালো করতে হবে।
বাছাইপর্বে বাংলাদেশ আছে গ্রুপ ‘এ’ তে। সেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রকে। ‘বি’ গ্রুপে আছে থাইল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে, পাপুয়া নিউ গিনি ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। ১৮ সেপ্টেম্বর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের পরদিন বাংলাদেশ মাঠে নামবে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে। ২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ যুক্তরাষ্ট্র।

বাংলাদেশ দল : নিগার সুলতানা জ্যোতি (অধিনায়ক), শারমীন আক্তার সুপ্তা, শামীমা সুলতানা, ফারজানা হক পিংকি, রুমানা আহমেদ, রিতু মনি, লতা মণ্ডল, সালমা খাতুন, সোবহানা মোস্তারি, নাহিদা আক্তার, মুর্শিদা খাতুন, জাহানারা আলম, ফাহিমা খাতুন, সানজিদা আক্তার মেঘলা ও মারুফা আক্তার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়